এক সপ্তাহ সাত দিনে কেন হয়? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
664 বার দেখা হয়েছে
"প্রযুক্তি" বিভাগে করেছেন (33,350 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (33,350 পয়েন্ট)
প্রকৃত অর্থে আমাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ের হিসাব গুলো নির্ভর করে পৃথিবী, চন্দ্র এবং সূর্যের উপর। পৃথিবী ও চন্দ্রের ঘূর্ণন এবং এই ঘূর্ণনে প্রয়োজনীয় সময় থেকে আমরা বছর বা মাসের সময় হিসাব করে থাকি। যেমন সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর পূর্ণ ঘূর্ণনে সময় লাগে ৩৬৫ দিন যাকে আমরা এক বছর লাগে। এই সময় টি ৩৬৫ দিন অপেক্ষা সামান্য বেশি হওয়ার কারণে চার বছর পর পর আমরা লিপ ইয়ার গণনা করে ৩৬৬ দিনে বছর হিসাব করি। এ ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত এক দিন যোগ করে থাকি। কিন্তু সপ্তাহ গণনার ব্যাপারটি একটু ভিন্ন, যা কি না কোন ভাবেই চন্দ্র সূর্য বা পৃথিবীর ঘূর্ণনের সময়ের সাথে মেলানো যায় না। আর এই গণনা পদ্ধতি শুরু হয়েছিল মূলত প্রাচীন ব্যাবিলনীয় সভ্যতা থেকে।
 

 

বর্তমান যে সপ্তাহ গণনা পদ্ধতি তা মূলত ব্যাবিলনীয়দেরই অবদান। প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রা ছিল জ্ঞান বিজ্ঞানে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতা থেকে অনেকটাই এগিয়ে। তারা মূলত আকাশে দৃশ্যমান সাতটি মহাজাগতিক বস্তু থেকে সপ্তাহে সাত দিনের ধারনা নিয়ে আসে। এই সাতটি মহাজাগতিক বস্তু ছিল সূর্য, চাঁদ, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি। সাতটি মহাজাগতিক বস্তুর উপস্থিতি তাদের কাছে স্বর্গীয় এবং বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ মনে হয়েছিল। বিশেষ গুরুত্ব থেকেই তারা সপ্তাহকে সাত দিনে গণনার সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলায় সূর্যের নাম থেকে রবিবার এবং চন্দ্রের নাম থেকে রবিবার শব্দ দুটি এসেছে।

 

তবে অন্যান্য কিছু সভ্যতায় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে সপ্তাহ গণনা করা হত। যেমন প্রাচীন মিশরীয়রা ১০ দিনে সপ্তাহ গণনা করত। আবার রোমানরা সপ্তাহ গণনা করত ৮ দিনে। কিন্তু ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে ব্যাবিলনীয়দের গণনা পদ্ধতিই গ্রহণযোগ্যতা পায়।

 

চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে ২৮ দিন সময় নেয়। ব্যাবিলনীয়রা এই ২৮ দিনকে চারটি সমান ভাগে ভাগ করে সাত দিনের সপ্তাহ পদ্ধতি চালু করে। যদিও ২৮ দিনে চন্দ্রমাস গণনা করলে সৌর বছর এবং মাস গণনায় কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হত। কিন্তু প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রা জ্ঞান বিজ্ঞানে এতটা প্রভাবশালী ছিল যে তাদের এই পদ্ধতিকেই পুরো বিশ্ব গ্রহণ করতে শুরু করে। পারস্য এবং গ্রীক সাম্রাজ্য সহ আরও অনেক জায়গায় এই গণনা পদ্ধতি ছড়িয়ে যেতে থাকে। পরবর্তীতে যখন অ্যালেক্সান্ডার দ্যা গ্রেট বিশ্ব জয়ে বের হন তখন ধীরে ধীরে গ্রিক সভ্যতার বিস্তারের সাথে সাথে এই সপ্তাহ গণনা পদ্ধতিও ছড়িয়ে যেতে থাকে। ধারনা করা হয় তার হাত ধরেই ভারতবর্ষে সাত দিনে সপ্তাহ গণনার প্রচলন শুরু হয় এবং পরবর্তীতে চীনারাও এটি রপ্ত করে।

অবশেষে রোমানরাও এই গণনা পদ্ধতি গ্রহণ করে। রোমান সম্রাট কনস্ট্যেন্টাইন ৩২১ খ্রীষ্টপূর্বে সাত দিনে সপ্তাহ গণনাকে অফিসিয়াল হিসেবে ঘোষণা করে এবং রবিবার কে সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে ঘোষণা করে। যদিও সাপ্তাহিক ছুটির এই ব্যবস্থা টি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে প্রচলিত। যেমন বাংলাদেশে শুক্রবার কে সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে রবিবারকে সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে গ্রহণ করতে আধুনিক সভ্যতার বিশ শতক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
0 টি ভোট
করেছেন (43,930 পয়েন্ট)
সপ্তাহ কেন সাতদিনে :সাত দিনে সপ্তাহের প্রচলন প্রথম ব্যাবিলনীয় সভ্যতায় এবং ইহুদীদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। ব্যাবিলনীয়রা চাঁদ দেখে মাসের হিসাব করতো। প্রথম যেদিন চাঁদ উঠত সেই দিন থেকে শুরু হতো মাসের হিসাব। এর ঠিক সাতদিন পর ক্রমবর্ধমান অর্ধচন্দ্রের আবির্ভাব হতো। ১৪তম দিনে পূর্ণচন্দ্রের দেখা মিলত। ২১তম দিনে পরিবর্তিত হয়ে ক্ষীয়মান অর্ধচন্দ্র দেখা যেত এবং ২৮তম দিনে চাঁদের শেষ পরিবর্তিত রূপটি দেখা যেত। সাত দিন পর পর প্রতিটি ধাপ শুরু হতো বলে তারা সপ্তাহের হিসাব করত সাতদিনে।

 

ইহুদীরা ধর্মীয় রীতি থেকে সাতদিনের একটি চক্র হিসেব করতো। অর্থাৎ ইহুদীদের সপ্তাহ সাতদিনে হিসাব করার পেছনে ধর্মীয় কারণ ছিল। রোমানরা সপ্তাহের হিসাবটি করত আট দিনে এবং কখনো কখনো নয় দিনেও । কিন্তু ৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ক্যালেন্ডারের প্রচলনের পর থেকে আট দিনে সপ্তাহের ধারণাটি জনপ্রিয়তা হারায়। প্রথম খ্রিস্টান রোমান রাজা কনস্টেন্টাইনের সময় সাত দিনে সপ্তাহের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। তখন পৃথিবীতে খ্রিস্টান ধর্ম এবং রোমানদের প্রভাব থাকার কারণে পৃথিবীর অধিকাংশ জায়গায় এর প্রচলন ঘটে।

 

যেভাবে এলো সপ্তাহে একদিন ছুটির রীতি :ব্যাবিলনীয়রা সপ্তাহের ছয় দিনকে শুভ মনে করলেও একটি দিনকে অশুভ মনে করত। সেই দিন তারা বেচা-কেনা ছাড়া সব ধরনের কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখত। ইহুদীদের কাছে সপ্তাহের একটি দিন ছিল ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তারা ওই দিন পার্থিব যেকোনো কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখত। এইদিনকে ‘সাব্বাত ডে’ বলা হয়। এই দিনটি উপলক্ষ্যে নারীরা সন্ধ্যার পূর্ব পর্যন্ত বিশেষ কিছু রান্না-বান্না করত। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে প্রার্থনায় মনোনিবেশ করত। এ ভাবেই ইহুদী এবং ব্যবিলনীয়দের অনুসরণ করে সপ্তাহের একটি দিন ছুটির রীতি প্রচলিত হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 377 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 193 বার দেখা হয়েছে
14 জুলাই 2022 "চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Suchi (2,380 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
1 উত্তর 258 বার দেখা হয়েছে
+7 টি ভোট
1 উত্তর 323 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,456 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

265,659 জন সদস্য

167 জন অনলাইনে রয়েছে
3 জন সদস্য এবং 164 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  2. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  3. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  4. zifieji

    100 পয়েন্ট

  5. tinsoikeo

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...