ভূতুড়ে এবং অতিপ্রাকৃত কাহিনী শুনতে আমরা কে না পছন্দ করি? ছোটবেলায় মা, দাদী, নানীদের মুখে শোনা মেছোভূত, শাঁকচুন্নি, রাক্ষসীদের গল্প দিয়ে আমাদের অতিপ্রাকৃত জগতের রহস্যময়তায় বিচরণ শুরু। আরেকটু বড় হলে রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার, অশরীরি প্রেতাত্মা, জিন্দালাশ ইত্যাদি বিষয়ক বই পড়ে গা ছমছমে ভাব নিয়ে রাতে বিছানায় শুতে যাওয়া (অবশ্যই রুমের লাইট জ্বালিয়ে রেখে)! এসব স্মৃতিতো সহজে ভুলবার নয়। তবে আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন একটু বেশি ভাগ্যবান (সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য সে বলতে পারবো না), যারা এইসব ভূতুড়ে কিংবা অতিপ্রাকৃত ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী। তাদের চাক্ষুষ প্রমাণের কারণে অন্যান্যরা জ্বিনে ধরা কিংবা অশরীরি দেখার মত অলৌকিক ব্যাপারসমূহকে সহজে ‘ফুঁহ’ বলে উড়িয়ে দিতে পারে না।
কথা হচ্ছে, যারা দাবি করেন নিজের চোখে ভূত-প্রেত দেখেছেন তাদের মধ্যে সবাই না হলেও কেউ কেউ আসলেই সত্যি কথা বলছেন। তবে এক্ষেত্রে তারা যেটাকে অশরীরি জাতীয় কিছু দেখার বা অনুভব করার দাবি করছেন সেগুলোর আসলে বৈজ্ঞানীক ব্যাখ্যা আছে। সত্যি কথা বলতে কি, এদের বৈজ্ঞানীক ব্যাখ্যাগুলো মূল অশরীরি দেখার কাহিনীর থেকেও বেশি চমকপ্রদ। যেমন-
১। ইডিওমোটর এফেক্ট (Ideomotor Effect)
‘ওইজা বোর্ড (Ouija Board)’ এর কথা আমরা অনেকেই শুনেছি। ওইজা বোর্ডের মাধ্যমে জীবিতরা মৃত মানুষদের আত্মাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এর অস্তিত্ব বহু পুরনো হলেও মুলত ১৮৪০ কিংবা ১৮৫০ সালের দিকে এটা স্পিরিচুয়ালিস্টদের মাধ্যমে আধুনিক মানুষদের নিকট ব্যাপক পরিচিতি পেতে শুরু করে। ওইজা বোর্ডের মাধ্যমে মানুষজন তাদের প্রিয় মৃত মানুষদের সান্নিধ্য পেতে স্পিরিচুয়ালিস্টদের শরণাপন্ন হতে থাকে। এখন পর্যন্ত জনপ্রিয় এই বোর্ডের ধারণাটা খুবই সরল। বোর্ডে ইংরেজি বর্ণমালার অক্ষর, নাম্বার, এবং ‘হ্যাঁ-না’ জাতীয় উত্তরবিশিষ্ট কিছু শব্দ থাকবে। মানুষেরা একটা কাঠজাতীয় বস্তু, যেটাকে ‘প্ল্যানচেট’ নামে ডাকা হয়, সেটার উপর হাত রেখে অশরীরিদের ডাকবে। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সেই অশরীরি আসার পরে তাকে জীবিত মানুষেরা কিছু প্রশ্ন করবে। সেই প্রেতাত্মা তখন প্রশ্নের জবাব দিবে ঐ প্ল্যানচেট নামক কাঠের বস্তুটাকে এক অক্ষর হতে আরেক অক্ষরে সরিয়ে নিয়ে নিয়ে বানান করে করে।