শূন্য মানে ‘কিছু না’ আবার শূন্যই একটি সংখ্যা। সেই কিছুই না থেকে কি কখনো কিছুর উৎপত্তি হতে পারে? কিংবা সেই ‘কিছুই না’ কি একটি সংখ্যা হতে পারে। কিছু না মানে তো ‘কিছুই নেই’। ১ মানে একটি জিনিস, ২ মানে দুটি, কিন্তু শূন্য মানে কী? যা নেই তা আবার সংকেত দিয়ে প্রকাশ করার কী দরকার? এমন হাজারো প্রশ্ন উঁকি দিয়ে গেছে প্রাচীন সভ্যতার বাঘা বাঘা সব গণিতবিদের মাথায়। বাহ্যত, শূন্যের কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু শূন্য ছাড়া আমরা অচল। সেই রহস্যময় শূন্যের উৎপত্তি কবে হলো, কে বা কোন সভ্যতা প্রথম শূন্য ব্যবহার করেছে? নিশ্চয়ই মনে এমন প্রশ্ন উঁকি দেয় আমার মতো আপনারও? চলুন তাহলে আপনাকে প্রথমে নিয়ে যাই সুমেরীয় সভ্যতায়।
৪,০০০-৫,০০০ বছর আগে সুমেরীয়রা প্রথম গণনা ব্যবস্থার প্রচলন শুরু করে। তাদের গণনা ব্যবস্থায় শূন্যকে ‘খালি জায়গা’ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। সংখ্যার মাঝে এই খালি জায়গা রাখার বিষয়টি থেকে প্রথম শূন্যের ধারণা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এই গণনা ব্যবস্থা ব্যাবিলনীয়রা গ্রহণ করে। ব্যাবিলনীয়রা সুমেরীয়দের থেকে প্রাপ্ত কিউনিফর্মে লিখতো। শুধুমাত্র খালি জায়গা না রেখে ব্যাবলনীয়রা এবার শূন্যকে একটু ভিন্ন মাত্রা দিলো। তারা শূন্য বোঝাতে ২টি কোণাকৃতির (‘’) চিহ্ন ব্যবহার করলো (৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দদের দিকে ব্যাবিলনের কোথাও কোথাও ১টি কোণাকৃতির (‘) চিহ্নকেও শূন্য ধরা হতো)। যেমন ২৬১, ২৬১’’ (আমাদের গণনা ব্যবস্থার ২৬১০)। তখনও শূন্য শুধুমাত্র খালি স্থান বোঝাতে ব্যবহৃত হতো, কোনো স্বতন্ত্র সংখ্যা হিসেবে নয়। তারও ৬০০ বছর পর ব্যাবিলন থেকে ১২,০০০ মাইল দূরে মায়া সভ্যতার গণিতবিদরাও ক্যালেন্ডারে শূন্যকে ‘খালি জায়গা’ নির্দেশক হিসেবে স্থান দেয়।