Nishat Tasnim -পৃথিবী তার কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হবে যদি সূর্য অদৃশ্য হয়ে যায়। সূর্য অদৃশ্য হওয়ার ৮ মিনিট পরই পৃথিবী কক্ষপথ থেকে সরে গিয়ে একটা সরল রেখার সামনের দিকে এগোতে থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে মহাজাগতিক কোনো কিছুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, কিংবা অন্য কোন নক্ষত্রের প্রভাব বলয়ে না আসছে। অন্যান্য গ্রহের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে। পৃথিবীর অভিকর্ষের কারণে আমরা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হব না। সূর্যের আলো প্রতিফলিত করতে না পারায় চাঁদকে আর খালি চোখে দেখা যাবে না! পৃথিবীতে সূর্যের আলো না থাকলেও বৈদ্যুতিক আলো তখনও থাকবে এবং আকাশে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি তারকা নজরে পড়বে।
সূর্যের আলো না পাওয়ায় গাছপালা সালোকসংশ্লেষণ বন্ধ করে দেবে, তখন গাছ থেকে আর কোন অক্সিজেন পাওয়া যাবে না। অনেক গাছ-পালাই মারা যেতে থাকবে। কিন্তু বড় বড় গাছ গুলো তখনও আত্মরক্ষা করতে পারবে। গাছ থেকে অক্সিজেন না পাওয়ার ফলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, অন্য সকল প্রাণীর অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দিবে। কিন্তু আসলে এমনটা নয়। পৃথিবীতে তখনও এত অক্সিজেন থাকবে যে সকল জীবের এক হাজার বছর লাগবে সেই অক্সিজেন শেষ করতে।
সূর্য থেকে তাপ ও আলো না আসার কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা ধীরে-ধীরে কমতে থাকবে, এবং কিছু সপ্তাহের মধ্যেই তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসবে! তখন পৃথিবীর সবকিছু জমতে শুরু করবে। সমুদ্র পৃষ্ঠ বরফের আস্তরণে ঢেকে যাবে। কিন্তু সমুদ্রের গভীরে এবং সক্রিয় আগ্নে়য়গিরির পাশে কিছুটা উষ্ণ থাকবে। কারণ পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ তাপ সমুদ্রের গভীরের জলকে বরফ হওয়া থেকে বাঁচাবে।
এই উষ্ণ জায়গা ব্যতীত অন্য কোথাও কোনো প্রাণী আত্মরক্ষা করতে পারবে না। এর পরে এমন একটা সময় আসবে যখন পৃথিবীর তাপমাত্রা কমতে-কমতে সর্বনিম্ন -১৮০° সেলসিয়াসে পৌঁছাবে! তখন শুধুমাত্র কিছু-কিছু আণুবীক্ষণিক জীবই বেঁচে থাকবে এবং পুরো পৃথিবী প্রাণ শূন্য হয়ে যাবে।