লেবুর শরবতের উপকারীতা:
(১) পিত্তথলির পাথর দূর করে: পিত্তরস খাবার হজমে বিশেষ করে চর্বি জাতীয় খাবার হজমে সাহায্য করে। আর লেবুর রসে রয়েছে চর্বি বিরোধী উপাদান, যাহা চর্বিকে গলাতে সাহায্য করে। তাছাড়া পিত্তথলির পাথর দূর করতে দরকার উচ্চ ফাইবার বা অাঁশযুক্ত খাবার। যাহা লেবুর মধ্যে প্রচুর পরিমানে রয়েছে।
(২) দেহের ওজন কমায়: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়তি ওজন কমাতে নানা প্রকার ঔষধ সেবন করে থাকে। এতে অনেকে উপকৃত হন আবার অনেকে প্রচন্ড ক্ষতির সম্মুখীন হন। কিন্তু লেবু যে আমাদের ওজন কমাতে ঔষধের চেয়েও বেশী কার্যকরী তাহা আমরা বেমালুম ভুলে যাই। তাই বাড়তি ওজন কমাতে ঔষধের চেয়ে লেবুকে বেশী প্রাধান্য দিতে হবে। লেবু শরীরের অতিরিক্ত চর্বি জমতে দেয় না। তাছাড়া লেবুতে প্রচুর পরিমানে আঁশ জাতীয় পদার্থ প্যাকটিন থাকে, যাহা ক্ষদা কমায়। আর ক্ষুদা কম থাকলে খাওয়াও কম হবে আর ওজন কমবে। তাই লেবুর শরবত করে খেতে হবে। কুসুম কুসুম গরম পানিতে লেবু চিবিয়ে শররব করে তার সাথে সামান্য পরিমানে মধু মিশ্রিত করে খেতে পারলে বেশী উপকার পাওয়া যাবে।
(৩) ঠান্ডাজনিত রোগব্যাধি উপশম করে: শীতকালে বেশীরভাগ মানুষেরই জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যাথা, টনসিল, শ্বাসযন্ত্রের ইনফেকশন ইত্যাদি রোগ হয়ে থাকে। কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চায়ের মত খেলে পারলে বেশ উপকার পাওয়া যাবে। অল্পতেই সর্দি কাশি ও গলাব্যাথা দূর হয়ে যাবে। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যাহা সর্দি কাশি দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। তাছাড়া লেবু স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ফুসফুস পরিস্কার করে এ্যাজমা সমস্যার উপশম করে।
(৪) রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফসফরাস,ফলিক এসিড, অ্যাসকরবিক এসিড ইত্যাদি। ভিটামিন সি ও আয়রন জ্বর ভাল করে, পটাসিয়াম মস্তিষ্ক ও স্নায়ুকোষকে সক্রিয় রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। অ্যাসকরভিক এসিড শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ, যাবতীয় ব্যাথা জনিত অসুবিধা দূর করে। তাজা লেবুর রস দাঁতের ব্যাথার উপশম করে। দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপড়া বন্ধ করে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
(৫) ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়: নিয়মিত লেবুর শরবত পানে আপনার ত্বকের উজ্জলতা বেড়ে যায়।
(৬) গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান করে: গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা থেকে নিস্তার পেতে চাইলে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা কমে যাবে।
(৭) ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: আঁশ জাতীয় খাবার ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে। ভিটামিনের মধ্যে এ, সি, ই, বিটা ক্যারোটিন জাতীয় খাবার পাকস্থলি, মলদ্বার, জরায়ু, লিভার, স্তন, প্রোস্টেট, ফুসফুস ও অগ্নাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি জাতীয় উপাদান। আর ভিটামিন সি এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যাহা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। লেবুর শরবত ক্যান্সারের কোষ গুলোকে ধ্বংস করে।
(৮) ক্লান্তি দূর করে: বেশীক্ষণ গরমে বা রোধে থাকলে মানুষ খুব ক্লান্তিবোধ করে। তখন একগ্লাস লেবুর শরবত পান করলেই নিমিষেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। তাছাড়া মানসিক চাপ ও দুশ্চিতা দূর করে লেবু। কারণ লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি। মানসিক চাপের কারণে ভিটামিন সি এর ঘাটতি দেখা দেয়। লেবু তা নিমিষেই পূরণ করে দেয়। ফলে পুনরায় দেহ ও মন চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
(৯) অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল: এই দুটি গুণও লেবুর মধ্যে রয়েছে। ফলে, ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ এড়াতে লেবুর পানি খেতে পারেন। বিশেষ করে ফ্লু,সর্দি-কাশি ও গলাব্যথা হলে।
(১০) ক্যান্সার প্রতিরোধক: লেবুর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
(১১) হজম শক্তি বাড়ায়: রোজ সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে হজমের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
(১২) ভাইরাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ: ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে লেবুর রস। তাই নিয়মিত ভাতের সঙ্গে লেবু খেতে পারেন। এত করে কাওয়ার রুচি বাড়বে।
কোরা