পুনরায়নীকরণ (ইংরেজি: Reionization) বলতে এমন একটি প্রক্রিয়া বোঝায় যার মাধ্যমে অন্ধকার যুগের পর মহাবিশ্বের তড়িৎ নিরপেক্ষ পদার্থগুলো (প্রধানত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম) পুনরায় আয়নীত হয়েছিল। 'পুনরায় আয়নীকরণ' বলার কারণ, এর আগে আরেকবার (প্রারম্ভিক কেন্দ্রীণ সংশ্লেষের পর থেকে পুনর্মিলনের পূর্ব পর্যন্ত) মহাবিশ্বের সবকিছু আয়নীত অবস্থায় ছিল। আনুমানিক ১৩,৭৯৮ কোটি বছর পূর্বে[১] মহা বিস্ফোরণ (বিগ ব্যাং, এরপর থেকে বিব্যা লেখা হবে) ঘটার মাত্র তিন সেকেন্ডের মাথায় প্রারম্ভিক কেন্দ্রীণ সংশ্লেষের মাধ্যমে ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রিনো, তাদের প্রতিকণা এবং ফোটন তৈরি হয়। তাপমাত্র অনেক বেশি থাকায় সে সময় বিচ্ছিন্ন ইলেকট্রন ও প্রোটন মিলে তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণু গঠন করতে পারছিল না। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমতে থাকে এবং অবশেষে বিব্যা-র আনুমানিক ৩ লক্ষ ৮০ হাজার বছর পর ইলেকট্রন ও প্রোটনেরা মিলে নিরপেক্ষ হাইড্রোজেন পরমাণু গঠন করে। এই ঘটনাকে পুনর্মিলন বলা হয়। পুনর্মিলনের পর মহাবিশ্বের প্রধান উপকরণ ছিল নিরপেক্ষ হাইড্রোজেন, সামান্য হিলিয়াম, ফোটন ও নিউট্রিনো। পুনর্মিলন যুগের পর অন্ধকার যুগের সূচনা ঘটে। অন্ধকার যুগ বলার কারণ এ সময় মহাবিশ্বে এমন কোন বিকিরণের উৎপত্তি ঘটেনি যা আমরা পর্যবেক্ষণ করতে পারি। এরপর পুনরায় পর্যবেক্ষণযোগ্য বিকিরণ তৈরি হয় বিব্যা-র আনুমানিক ৪০ লক্ষ বছর পর, যখন প্রথম তারা, গ্যালাক্সি এবং কোয়েজার জন্ম নেয়।
©Wiki