সবার আগে আমাদের জানা উচিত কাঁচ কি দিয়ে তৈরি। কাঁচ তৈরিতে অনেক উপাদান ব্যবহার করা হলেও এর মূল উপাদান হচ্ছে SiO2. এই সিলিকন ডাই অক্সাইড কোয়ার্টজ তৈরি করে। যখন প্রথমে কাঁচ দিয়ে আমরা কোনো কিছু তৈরি করি তখন এটা দিয়ে কিন্তু আলো অতিক্রম করতে পারেনা। কারণ এখানে অণুগুলো পরস্পরের সাথে শক্তভাবে যুক্ত থাকে এবং ক্রিস্টাল গঠন করে কিন্তু যখন এখানে তাপ প্রদান করা হয় তখন কোয়ার্টজ গলতে শুরু করে এবং একই সাথে সিলিকন ডাই অক্সাইড এর অণুগুলো পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন হয়ে যায়। এখানে মজার বিষয়টা হচ্ছে পুনরায় ঠান্ডা করার পরও এই বৈশিষ্ট্যটা বজায় থাকে।অর্থাৎ আগের মত যুক্ত না হয়ে এগুলো পরস্পর থেকে দূরে বিচ্ছিন ভাবে অবস্থান করে। এই ধরনের কঠিন পদার্থকে অ্যামরফাস কঠিন পদার্থ বলে৷
আচ্ছা তাহলে অন্য কঠিন পদার্থ এর ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে না কেন? এটা জানার জন্য আমাদের এটমিক লেভেলে চিন্তা ভাবনা করতে হবে৷ ফটোইলেক্ট্রিক ক্রিয়ার কথা শুনেছেন? ফোটন যখন কোনো নিদিষ্ট কক্ষপত্রে থাকা ইলেকট্রনকে তার সূচন কম্পাংকে আঘাত করে তখন ইলেকট্রন উচ্চ শক্তিস্তরে যেতে পারে অথবা মুক্ত ইলেকট্রনে পরিণত হতে পারে। এখন সিলিকন ডাই অক্সাইডের ক্ষেত্রে এমন কি ঘটে যে এখানে দৃশ্যমান আলোর ক্ষেত্রে ফটোইলেকট্রিক ক্রিয়ার ঘটনা ঘটে না?
আসলে সিলিকন ডাই অক্সাইড এর ক্ষেত্রে যে ইলেকট্রন রয়েছে সেগুলোর এক স্তর হতে অন্য স্তরে যেতে যে পরিমাণ শক্তি লাগার কথা তা দৃশ্যমান আলোর মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব না। যার ফলে ইলেকট্রন ফোটনের আঘাত দাঁড়া উচ্চতর শক্তিস্তরে গমন করে না। ফলে ফোটনগুলো সিলিকন ডাই অক্সাইড এর মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করে যায়। এর ফলে কাঁচের মধ্যে দিয়ে আলো অতিক্রম করতে পারে। কিন্তু বিশেষ বিশেষ কাচের ক্ষেত্রে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ফটোইলেক্ট্রিক ক্রিয়া ঘটায় যার ফলে কাঁচের কাঁচের মধ্যে দিয়ে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি প্রবেশ করতে পারে না, কিন্তু দৃশ্যমান আলো প্রবেশ করতে পারে। এজন্যই মূলত কাঁচ কঠিন পদার্থ হওয়া সত্বেও স্বচ্ছ হয়ে থাকে।