পেনিসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ব্রায়ান শার্পের মতে, বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিসের ক্ষেত্রে তিন ধরনের দৃষ্টিভ্রম বা হ্যাল্যুসিনেশন তৈরি হতে পারে। প্রথমটি ইনট্রুডো বা ঘরের ভেতর কোনো অতিপ্রাকৃত কিছুর উপস্থিতি টের পাওয়া। দ্বিতীয়টি ইনকিউবিস। আপনার মনে হতে পারে যে, কোনো দৃশ্যমান বা ঈষৎ-অদৃশ্য সত্তা আপনার বুকের ওপর চেপে বসে আছে। সর্বশেষ, লেভিটেশন। আপনার মনে হতে পারে, আপনাকে কেউ শোয়া অবস্থাতেই শূন্যে তুলে ফেলেছে এবং কোনো অচেনা গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ তিন অবস্থার ভেতর একটি সাধারণ পরিস্থিতি আপনি অনুভব করবেন, আর তা হলো, না পারবেন বলতে, না পারবেন নড়তে। চিৎকার করতে চাইলেও মুখ ফুটে শব্দ বের হবে না। হাত-পা ছুঁড়তে পারবেন না। এ পক্ষাঘাত দশা স্থায়ী হবে সর্বোচ্চ কয়েক সেকেন্ড। এই পক্ষাঘাত অবস্থায় সৃষ্ট হ্যাল্যুসিনেশনের জন্যই ভূত-প্রেত জড়িয়ে তৈরি হয়েছে নানা গালগপ্পো।
প্রায় সব লোকগাঁথাতেই ভূত একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাতের বেলায় অশরীরীরা নানা বেশে এসে মানুষকে ভয় দেখায়, এমনটিই প্রচলিত। এই ভয়ের অনুভূতির সাথে বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিস জড়িয়ে গেছে আষ্টেপৃষ্ট। আর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানবার আগে সব অস্বাভাবিকতার পেছনেই অলৌকিকতা খোঁজা হতো। এ কারণেই বোবায় ধরাকে অনেকেই শয়তান বা ভূতের উপস্থিতি মনে করতেন।
লেখক: Tariq Ul-Islam