মহাশূন্যে গুলি করার ফলাফল মোটেও পৃথিবীর মতো হবে না! মহাশূন্যে যিনি বন্দুকের ট্রিগারে চাপে দেবেন, তাকে অদ্ভুত এক পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে।
পৃথিবী এবং মহাশূন্যে গুলি ছোঁড়ার পর প্রথম যে পার্থক্য সৃষ্টি হবে তা হল, পৃথিবীতে গুলি করলে তা বেশ জোরালো শব্দ তৈরি করে। কিন্তু মহাশূন্যে গুলি করলে কোনো শব্দ উৎপন্ন হবে না।
নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী, বন্দুক তাক করে গুলি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্দুক থেকে গুলি বের হওয়ার বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় যিনি গুলি ছুড়েছেন তিনি ঠিক তার উল্টোদিকে ছিটকে যাবেন। এই ছিটকে পড়ার গতি কত হবে তার জবাব একটি উদাহরণের মাধ্যমে দেয়া যাক।
একটি একে-৪৭ আর একটি স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন পিস্তল নমুনা হিসেবে নেয়া যাক। একে-৪৭ থেকে বের হওয়া গুলির গতি ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার ৬০০ মাইল। মহাশূন্যে একে-৪৭ থেকে গুলি ছোড়ার পর যিনি গুলি ছুড়বেন তাকে ঘণ্টায় প্রায় শূন্য দশমিক ০৬৮ মাইল গতিবেগে উল্টোদিকে ছিটকে যেতে হবে।
অন্যদিকে পয়েন্ট ফাইভ জিরো ক্যালিবার পিস্তল থেকে বের হওয়া বন্দুকের গুলির গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার ৩৩০ মাইল। অর্থাৎ এর গুলির গতিবেগ একে-৪৭ এর গুলির বেগের চেয়ে কম। কিন্তু স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসনের বুলেটের ওজন একে-৪৭ এর বুলেটের ওজনের প্রায় দ্বিগুণ। সুতরাং স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন পিস্তল দিয়ে গুলি করলে একে-৪৭ থেকে গুলি ছোড়ার দ্বিগুণ গতি অর্থাৎ ঘণ্টায় দশমিক ১৩৬ মাইল উল্টোদিকে ছিটকে পড়তে হবে। এই গতি আধা ঘণ্টায় একটি ফুটবল স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণের জন্য যথেষ্ট।
তবে যে অস্ত্রই হোক, মহাশূন্যে তা ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হবে ব্যতিক্রমী কৌশল। নয়তো মহাশূন্যে কোন প্রতিরোধক না থাকায় যিনি গুলি ছুঁড়বেন কোন একটি গ্রহের কক্ষপথ ঘুরে তার পিঠেই আবার গুলিটি বিদ্ধ হতে পারে!