মহাকাশে কি গুলি চালানো সম্ভব? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+10 টি ভোট
785 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (110,340 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+2 টি ভোট
করেছেন (110,340 পয়েন্ট)

Dipto Barua-

মহাকাশে কি গুলি চালানো সম্ভব?

 https://m.facebook.com/watch/?v=628994818032673

হ্যাঁ অবশ্যই যায়।

আজকালকার বন্দুকে যেসব গুলি ব্যবহার করা হয়‌ সেগুলো নিজেই ফোটে। প্রয়োজন কেবল একটু কাইনেটিক ফোর্স।

আধুনিক গুলির পার্শ্বচ্ছেদ বা ক্রস সেকশন দেখলে গুলির মাথায় গম্বুজ সদৃশ ধাতব জিনিসটি দেখতে পাবেন ওটিই বুলেট।

এর পেছনের অংশটি গুলির জ্বালানি বা‌‌ প্রপেলেন্ট, সাধারণত বোরন আর এলুমিনিয়ামের মিশ্রণ। নিজের অক্সিডাইজার (সাধারণত পটাশিয়াম নাইট্রেট বা সোডিয়াম নাইট্রেট) তার নিজের সাথে থাকে বলে এটি ঠিক মহাকাশযানের জ্বালানির মতোই কাজ করে।

এর পেছনে, গুলির পশ্চাদ্দেশে থাকে প্রাইমার।

এই প্রাইমারটি আধুনিক গুলির এক জটিল অংশ। এর একদিকে থাকে ক্যাপ বা ঢাকনা, অন্যদিকে একটি নেহাই বা এনভিল। দু'য়ের মাঝে থাকে ছোট্ট একটা কাপ ভর্তি বিস্ফোরক, সাধারণত ডাইনল (ডায়াজোডাইনাইট্রোফেনল)। পুরো গুলিটি সাধারণত পেতলের তৈরি হলেও প্রাইমারটি সাধারণত তৈরি হয় নিকেল দিয়ে।

প্রাইমারটি হতে পারে রিম ফায়ার, সেন্টার ফায়ার, অথবা বৈদ্যুতিক।

একেক বন্দুকে একেক রকম।

প্রাইমারের ঢাকনার ওপর আঘাত করলে কাপ ভর্তি বিস্ফোরক ধাক্কা খায় ভেতরের নেহাইটির সাথে। ডাইনল একটি ঘাত সংবেদী বা ইমপ্যাক্ট সেনসিটিভ মিশ্রন, আঘাত পেলেই বিস্ফোরিত হয়। সেই বিস্ফোরনে সৃষ্ট জ্বলন্ত গ্যাস‌ আগুনের ফুটো বা ফ্ল্যাশ হোল দিয়ে পৌঁছয় জ্বালানী কক্ষে।

প্রাইমারের পশ্চাদ্দেশে পদাঘাত করার কাজটি করে ফায়ারিং পিন

অথবা স্ট্রাইকার। একেক বন্দুকে একেক রকম। কাইনেটিক ফোর্সটি এদের থেকেই আসে।

এসব আধুনিক বন্দুক আর গুলি যদি থাকে হাতে মহাকাশে গুলি করা কোনো ব্যাপারই নয়। সমস্যা একটাই – মহাশুন্যে আপনার বন্দুকটা যদি রোদে থাকে তবে সেটি ১০০° সেলসিয়াস গরমে নিজেই ফুটে যেতে পারে। আর ছায়ায় থাকলে  –১৭৩° সেলসিয়াস ঠান্ডায় বন্দুকের ধাতব কাঠামো মড়মড়ে হয়ে গুলি করামাত্র টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু মহাকাশে গুলি করার ফলাফল কি হতে পারে?

মনে করুন আপনি পৃথিবীর কক্ষপথে ভাসছেন। যেমনটা ঘটে থাকে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের (আইএসএস) নভোচারীদের জীবনে।

আর আপনার হাতে আছে একটি রেমিংটন ৭০০ রাইফেল। তাতে ভরা আছে একটা ৩০০ উইনচেস্টার ম্যাগনাম গুলি।

গুলি করলেন আপনি। কোনো শব্দ হলো না। কারণ মহাকাশে শব্দ তরঙ্গ ছড়াবার মতো কোনো মাধ্যম নেই।

আপনার কপাল ভালো থাকলে গুলি চলে যাবে বহুদূর। পৃথিবীতে এই বন্দুক থেকে গুলি ছুঁড়লে বাতাসের ঘষা আর মধ্যাকর্ষণের ফলে গুলিটা ১৩০০ মিটারের চাইতে দূরে যাবে না। মহাকাশে ঘষা খাবার জন্য তেমন কিছু নেই, স্পেস ম্যাটার বা মহাকাশ পদার্থের ঘনত্ব দশ বর্গমিটারে একটি হাইড্রোজেন অনুর চেয়ে বেশি নয়।

কপাল যদি আরো ভালো হয় তবে গুলিটি নিউটনের প্রথম সূত্র মতে চলতেই থাকবে, কোনো গ্রহ উপগ্রহের মধ্যাকর্ষণের টান এড়িয়ে। যেহেতু আপনার‌ গুলিটি সেকেন্ডে ১০০০ মিটার গতিতে ছুটছে আর বিশ্বজগৎ মেগাপার্সেকে প্রায় ৭৩ কিলোমিটার গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে (হাবলস ধ্রুবক) তাই পরের ৪০ হাজার বছর গুলিটি ছুটতে পারবে নিশ্চিন্তে।

কপাল খারাপ থাকলে গুলিটা পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণের আওতায় চলে আসবে এবং সাময়িকভাবে পরিণত হবে দ্রুতগতির একটি উপগ্রহে। কপাল যদি জেনুইনভাবে ফাটা হয় তবে সেই ছোট্ট উপগ্রহটি সারা পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে আপনার পিঠেই আঘাত হানতে পারে।

আর আপনার কি হবে? নিউটনের তৃতীয় সূত্র মতে সমান ভরবেগে বিপরীত দিকে ছুটতে থাকবেন আপনি। কপাল ভালো থাকলে আপনি ছুটে যাবেন মহাকাশের দিকে। অক্সজেন ফুরনো পর্যন্ত বেঁচেই থাকবেন। নাসার এখনকার স্পেস সুট পরা থাকলে সাড়ে আট ঘন্টা অব্দি ভাসতে পারবেন শুন্যলোকে। চাঁদের পথের সর্বোচ্চ ১০% পাড়ি দিতে পারবেন মরার আগে।

কপাল খারাপ হলে আপনি পড়বেন পৃথিবীর দিকে। সেকেন্ডে ৭.৮ কিলোমিটার গতিতে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবেন আপনি। আপনার সাথে ঘষায় আপনার আশেপাশের বাতাস পরিণত হবে ১৬৫০° সেলসিয়াস উত্তাপের প্লাজমায়। দু'সেকেন্ড বাদে আপনার ছাইও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

গুলি ছুঁড়ে বাঁচার একটা রাস্তা হতে পারে বন্দুকটা অদ্ভূতভাবে ধরা, যেমনটা কোনো গ্রহের পিঠে দাঁড়িয়ে করলে আপনার হাড়গোড় জোড়া দিতে অনেকগুলো অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে।

তাতে আপনি অর্জন করবেন কৌণিক ভরবেগ, যাতে পাঁই পাঁই করে ঘুরতে থাকবেন একই জায়গার ওপরে। ৩০-৪০ মিনিট অমন উচ্চ জি ফোর্সে ঘুরন্ত থাকলে বেঁচে থাকা মুশকিল। কিন্তু আপনি আশা করতে পারেন ততক্ষণে আইএসএস আপনাকে উদ্ধার করে ফেলবে।

মহাকাশে গুলি ছোঁড়া কোনো কঠিন ব্যাপার নয়। কিন্তু গুলি ছোঁড়ার পর বেঁচে থাকাটা মুশকিল হতে পারে।

ধন্যবাদ।

 

লেখা: আদিত্য কবির/ কোরা বাংলা

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+12 টি ভোট
2 টি উত্তর 460 বার দেখা হয়েছে
20 এপ্রিল 2020 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞানের পোকা (11,730 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 1,761 বার দেখা হয়েছে
+9 টি ভোট
3 টি উত্তর 2,581 বার দেখা হয়েছে
+14 টি ভোট
1 উত্তর 233 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

282,663 জন সদস্য

103 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 102 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. may88bar

    100 পয়েন্ট

  2. BenjaminMath

    100 পয়েন্ট

  3. gotravelway

    100 পয়েন্ট

  4. JulianaGolds

    100 পয়েন্ট

  5. Nick99439649

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...