ক্যানিবালিজম বা স্বজনভক্ষন প্রথা কী? এটাকে কেন স্বাভাবিক প্রাকৃতিক বিষয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
148 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (135,470 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (135,470 পয়েন্ট)
শিকারী প্রাণীকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

১। যে শিকারী প্রাণী নিজ প্রজাতি ছাড়া অন্য প্রজাতির প্রাণীকে হত্যা করে খায়, তারা হল প্রিডেটর (পরভোজী)। উদাহরণঃ বাঘ গরু খায়, ছাগল খায় কিন্তু অন্য বাঘকে খায় না। সে হলো প্রিডেটর।

২। যে শিকারী প্রাণী নিজ প্রজাতির প্রাণীকে হত্যা করে খায়, তারা হল ক্যানিবাল (স্বজনভোজী)। উদাহরণঃ ব্যাঙ নিজের ভাইবোনকে খেয়েই বেঁচে থাকে, আর যা পায় তাই খায়। বহু ধরণের ফরিং সেটা করে প্রেমের সময়ঃ নারী ফরিং পুরুষ ফরিংকে সঙ্গমরত অবস্থায় মাথা চিবিয়ে খেয়ে ফেলে। স্বজনভোজী প্রাণীদের বেশিরভাগই পোকামাকড়। তবে মাছদের কেউ কেউ স্বজনভোজী। পিরানহা নামক মাছ নাকি স্বজনভোজী।

৩। মানুষ সর্বভোজী- প্রিডেটর ও ক্যানিবাল। আপনি প্রাণী হিসাবে একজন স্বজনভোজী এই রকম অভিযোগ শুনলে শান্ত থাকতে না পারারই কথা। আমি অনুরোধ করছি আপনি যদি ১৮ বছরের কমবয়সী হোন, দয়া করে নীচের অংশ পড়বেন না।

সতর্কবাণীঃ কেবল মাত্র শান্ত ও প্রাপ্তবয়সীদের জন্য।

৪। ঠিক আমাদের মতো মানুষ নামক মানবপ্রজাতি হোমো সেপিয়েন্স দুনিয়াতে আছে কমবেশী ২০০,০০০ বছর ধরে এমন অনুমান করার জোরালো ফসিল ভিত্তি আছে। তার প্রথম ১৮০,০০০ বছর মানুষের সংখ্যা ২৫০০০ ছাড়ায়নি বলে ভাবার কড়া কারণ আছে। সে সময়কালে মানুষ ছিল জঙ্গলী প্রাণী, অনেকটাই বনমানুষ (ওরাংউটাং, শিম্পাঞ্জি, গরিলাদের মতো)। তারা দুই কারণে মানুষে খেতোঃ ধর্মীয় কারণে মৃত আত্মীয়স্বজনের শেষকৃত্য হিসাবে, যদিও কেউ কেউ মৃতকে পুড়িয়ে দেয়, কেউ কেউ লাশটা কবরে দেয়, কেউ কেউ লাশটা কুকুর-বিড়াল-শকুন-চিল কে খেতে দেয়। অন্য গোত্রের লোক ধরতে পারলে মেরে খেয়ে ফেলতে। যাদুর উপর আদি বিশ্বাসের একটা অঙ্গ ছিল যে কাউকে মেরে খেয়ে ফেললে তার শক্তিমত্তা খাদকের কাছে চলে আসে।

৫। মানুষের বিরাট মগজে অনেক জটিল ভাবনা আসে। তার একটা হলো কাউকে মেরে খেয়ে ফেলার চেয়ে তাকে বন্দী করে তাকে দিয়ে গরু-ছাগল পোষাতে পারলে মাংস অনেক বেশী পাওয়া যায়। ধরুন আমাকে জবাই করে আপনি পেতে পারেন ৪০ কেজি মানব-মাংস, কিন্তু আমাকে দিয়ে গরু-ছাগল পালন করাতে পারলে বছরে পর বছর ধরে টনকে টন মাংস পেতে পারেন। যুদ্ধ বন্দীদেরকে না মেরে দাস বানানো হলো অর্থনৈতিক স্বজনভোজ। স্বজনের মাংস না খেয়ে স্বজনের সম্পদ খাওয়া। আমাদের রক্তেই আছে শিকারী নেশা, আমরা সবাই চুরি-ডাকাতি-বাটপারি করতে স্বাভাবিকভাবেই তৈরি; কিন্তু সমাজ আমাদেরকে শিখিয়ে দেয় যে আমাদের জৈবিক প্রবৃত্তিকে দমিয়ে সমাজের বিধিবিধান মেনে চলতে হবে। চুরি করা আমাদের প্রবৃত্তি সত্য, কিন্তু ধরা খেলে মার খেয়ে মারা যেতে পারি বা পঙ্গু হতে পারি। আমাদের পশুসুলভ প্রবৃত্তিকে দমন করার পুরস্কার আছে, আর দমন না করলে কড়া শাস্তিও আছে।

৬। ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাউকে ধর্ষণ করাও এক ধরণের স্বজনভোজন। জানোয়ার হলে এই বিবেচনা থাকে না কিন্তু ধর্ষণ করতে গিয়ে ধরা পড়লে প্রাণ যাবার সম্ভাবনা খুব বড়। শাস্তির ভয় থেকেই মানুষ অন্যায় থেকে বিরত থাকে।

৭। মানুষের চরিত্রে অদ্ভূত আত্মবৈপরীত্য (সেলফ-কন্ট্রাডিকশন) দেখা যায়। একই লোক একদিকে অতি কাতর হয়ে নামাজ পড়ছেন, অন্য দিকে তিনি ছোট বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণ করে যাচ্ছেন। চুরিও করেন, কবিতাও লেখেন এমন লোক অনেক। একদিকে অতি বড় দার্শনিক, অন্যদিকে তার চেয়েও বড় লুইচ্চা(চরিত্রহীন)। বাইরে সাধু, ভিতরে পাকা বাটপার। তাই একই সাথে মানুষ একজনকে ভালবাসতে গিয়ে আরেকজনকে খুন করতে পারে, যে মেয়েকে নিয়ে রোমান্টিক স্বপ্ন দেখে সেই মেয়েকেই প্রাণে মারতে পারে, পারে তার মুখে এসিড মেরে দিতে।

৮। এই আত্মবৈপরীত্য থেকেই জন্ম হয়েছে একদিকে ধর্ম আর অন্যদিকে বাণিজ্য। নিজের ভেতরেই আবিষ্কার করেছে শয়তান আর পাপকে, আর ভালোবাসা আর পূণ্যকে। খুন করাকে সে ঘৃণাও করে, আবার নিজেই খুন করে, আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুন করাকেও পূণ্যকর্ম বলে ভাবে। তার ভেতরেই বাস করে অন্য মানুষের সম্পদ হরণ করার তীব্র বাসনা, আবার সেই চোরাই সম্পত্তি সে দানও করে। বাংলাদেশের সব কয়টি পতিতালয়ের পাশেই আছে মসজিদ, আর সেই সব মসজিদের দানবাক্সে সব চেয়ে বেশী টাকা দেয় পতিতারাই। মন্দির-মসজিদ-গির্জা বানাতে সব চেয়ে বেশি টাকা দিয়েছে লুটেরাদের দল।

৯। চিন্তাশীল মানুষ ভেবেছে কি করে মানবজাতিকে এই ভয়ঙ্কর স্বজনভোজন থেকে বিরত করা যায়? ধর্মে নানা ভাবেই নিষেধ করা হয়েছে এই কাজ। আর বাণিজ্য উদ্ভাবনের পেছনে কাজ করেছে এই সূত্র যে গায়ের জোরে পরের সম্পদ কেড়ে আনার চেয়ে রাজি করিয়ে কিনে আনা সস্তা। রুটি না কিনে চুরি করেও আনা যায়, কিন্তু ধরা পড়ে গেলে এত মার খেতে হয় যে হিসাব করলে দেখা যায় চুরি করার চেয়ে কিনে আনাই সস্তা।

 

 

collected

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 348 বার দেখা হয়েছে
17 নভেম্বর 2021 "বাংলাদেশ ও বিশ্ব" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Fake Id (14,110 পয়েন্ট)
+18 টি ভোট
2 টি উত্তর 295 বার দেখা হয়েছে
17 সেপ্টেম্বর 2020 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন HABA Audrita Roy (105,570 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
3 টি উত্তর 390 বার দেখা হয়েছে

10,754 টি প্রশ্ন

18,417 টি উত্তর

4,734 টি মন্তব্য

245,810 জন সদস্য

27 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 27 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. shuvosheikh

    350 পয়েন্ট

  2. talal

    150 পয়েন্ট

  3. nahidemon

    110 পয়েন্ট

  4. Soyfa chakma

    110 পয়েন্ট

  5. SadyeGillesp

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো #ask মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য #science প্রযুক্তি স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মাথা মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #biology বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক শব্দ ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম হরমোন বাংলাদেশ বিড়াল
...