মায়ের গর্ভে ভ্রূণের বিকাশের বিভিন্ন পর্বে হরমোনের মাত্রা ও অন্যান্য পরিস্থিতির প্রভাবের কারণে আঙুলের দাগগুলো ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন ভ্রূণ দুটির ওপর রক্তচাপের পার্থক্য, পুষ্টির গ্রহণমাত্রা, গর্ভে কার অবস্থান কোনখানে এবং আঙুলের বিকাশ কার কীভাবে হচ্ছে—এসব বিষয় আঙুলের ছাপের গঠনকে প্রভাবিত করে। এ জন্য অভিন্ন যমজদের জেনেটিক গঠন অভিন্ন হলেও আঙুলের ছাপ অভিন্ন নয়।
সাধারণ যমজেরা অভিন্ন যমজদের মতো একটি আদি ভ্রূণকোষ থেকে নয়, মায়ের গর্ভে দুটি আলাদা ডিম্বকোষ নিষিক্ত হয়ে বিকশিত হয়। সাধারণত মায়ের গর্ভে মাসে একবার একটি ডিম্বকোষই আসে এবং সেটি নিষিক্ত হয়। এরপর ভ্রূণকোষটি বিকশিত হয়ে একজন সন্তানই জন্ম নেয়। কিন্তু ব্যতিক্রম হিসেবে কখনো মায়ের গর্ভে যদি দুটি ডিম্বকোষ এসে যায়, তাহলে আলাদাভাবে দুটি ডিম্বকোষ নিষিক্ত হয়ে যমজ সন্তান জন্ম নেয়। যেহেতু পিতার দুটি পৃথক শুক্র কোষ (স্পার্ম) আলাদাভাবে দুটি ডিম্বকোষকে নিষিক্ত করে, তাই সৃষ্ট আলাদা ভ্রূণকোষ দুটির (জাইগোট) আলাদা ডিএনএ বা জেনেটিক গঠন থাকে। এ যমজদের চেহারা ও চালচলনে বেশ মিল। এ মিল অনেকটা আপন ভাইবোনের মতো বা এর চেয়ে একটু বেশি মিল থাকে। তবে এদের একজন বোন ও অপর জন ভাই হতে পারে। তারপরও বেশ মিল থাকে তাদের মধ্যে। কিন্তু এদের আঙুলের ছাপ কখনো হুবহু এক হয় না।
অন্যদিকে,
অভিন্ন যমজরা সব ব্যাপারে অভিন্ন হয়, তাদের জেনেটিক গঠনও হুবহু এক হয়, তাহলে তাদের আঙুলের ছাপও অভিন্ন, অর্থাৎ হুবহু এক হওয়ার কথা নয়? এর উত্তর হলো, না, এক নয়। ডিএনএ অভিন্ন হলেও দুজনের আঙুলের ছাপ ভিন্ন ভিন্ন হয়।
©Nishant Tasnim