দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ পরবর্তী সময় মানুষ নিদ্রাহীনতা সহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করে । এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের ঘুমের ঔষধ ও ট্রাঙ্ককুইলাইজার (ট্রান্সকুইলাইজার হচ্ছে এমন শ্রেণির ঔষধ যা উদ্বেগ, ভয়, মানসিক অশান্তি জনিত সমস্যা কমাতে ব্যাবহার করা হয়।) জাতীয় ঔষধ ব্যাবহার করত । তখন থ্যালিডোমাইড বাজারে ঘুমের ঔষধ/ ট্রান্সকুইলাইজার হিসেবে চালানো হচ্ছিল ।
১৯৫৭ সালে থ্যালিডোমাইড (Thalidomide) প্রথম বাজারজাতকরণের পরে বিভিন্ন রোগীর অনুমোদনকৃত লক্ষণে থ্যালিডোমাইড প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করা হতো। এমন কি থ্যালিডোমাইড গর্ভাবস্থায়ও ব্যবহার করা যাবে এমন নির্দেশনাও ছিল। চিকিৎসকরা ঔষধ টি সন্তানসম্ভবা মায়েদের ক্ষেত্রেও ব্যবহারের জন্য প্রেসক্রিপশন করতেন৷ কিন্তু তখনো এরকম কোন সঠিক জোড়ালো তথ্য ছিল না যে ঔষধটি গর্ভাবস্থায় নিরাপদ।
প্রায় সম-সাময়িক সময়ে আমেরিকার বাজারে Thalidomide বাজারজাত করার আবেদন করা হয়েছিল কিন্তু FDA officer Dr Frances Kelsey অনুমতি দিচ্ছিলেন না। তিনি বলছিলেন Thalidomide কে যে নিরাপদ দাবি করা হচ্ছে তার সপক্ষে শক্ত তথ্য উপাত্তের অভাব আছে।
১৯৬১ সালে অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসক উইলিয়াম ম্যাকব্রাইড চিকিৎসা সাময়িকী “The Lancet” এ লিখে পাঠালেন যে তিনি লক্ষ্য করছেন Thalidomide গ্রহন করা মায়েরা বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম দিচ্ছে।
১৯৬২ সালে জার্মান শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ Dr Widukind Lenz ও পৃথকভাবে ওনার Observation “The Lancet” এ লিখে পাঠিয়ে ছিলেন এই বলে যে Thalidomide বিকলাঙ্গ শিশু জন্মের জন্য দায়ী। সারা বিশ্ব ব্যাপী প্রায় ১০০০০ শিশু Thalidomide Tragedy এর শিকার হয়েছিল।মূলত Thalidomide Tragedy ঘটে যাওয়ার পরেই ঔষধ উৎপাদনে আরো বেশি সতর্কতা,গ্রহনকারীর নিরাপত্তার ওপর জোড় দেয়া,Adverse Drug Reaction Reporting এর ওপর জোড় দেয়া হয় এবং নানা পদক্ষেপ গ্রহন করা শুরু হয়েছিল। অবশেষে ১৯৬১ সালে প্রায় সমস্ত বাজার থেকে Thalidomide সরিয়ে নেয়া হয়।
©