দিবাস্বপ্ন কি? কাকে বলে? কেন হয়? আপনি দিবাস্বপ্নে আসক্ত? Maladaptive Daydreaming কি?
শুরু করার আগে একটা ঘটনা শুনে নিন। ঘটনাটা এরকম-
নিধি ক্রাশ খেতে পছন্দ করে, এবং যাকেই দেখে ধুপধাপ ক্রাশ খেয়ে বসে। এই অব্দি মানা যায়। কিন্তু না, সে শুধু ক্রাশ খেয়েই ক্ষান্ত থাকেনি, প্রতিদিন বাগানে হাঁটতে হাঁটতে তার সবগুলা ক্রাশকে বিয়ে করার কথা চিন্তা করে, সে মনে মনে সংসার করতে থাকে। এবং দিনের একটা বড় সময় সে এই দিবাস্বপ্নের পিছনে কাটায়। স্বাভাবিকভাবেই, সে দিনের অনেকগুলো কাজ মিস করে এইসব ভাবতে থাকে।
সে জানে, সে যা ভাবছে তা কোনোদিন সম্ভব হবে না, বা হলেও পসিবিলিটি খুবই কম, তবুও সে নাটকীয়ভাবে অনেক প্লট সাজায়, অনেক ঘটনা সামনে আনে। এবার প্রশ্ন, আপনিও কি নিধির মতো জেনেশুনে এমন দিবাস্বপ্ন দেখেন? জানেন, মনোবিজ্ঞানীদের ভাষায় এটাকে কী বলা হয়?
এ নিয়ে সম্প্রতি দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে ‘সাইন অব ম্যালাডাপটিভ ডেড্রিমিং’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন তিনি।
তার গবেষণা অনুযায়ী, ডেড্রিমারস্রা দিনের অধিকাংশ সময় স্বপ্ন দেখেই কাটিয়ে দেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে সোমার বলেন, ৫৭ শতাংশ সময়ই তারা ব্যয় করে ফেলেন এভাবে। শুধু তাই নয়, তারা নানা ধরনের স্বপ্ন দেখেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের স্বপ্ন বড় হয় না। প্রেরণাদায়ক কিছু যে তারা দেখেন, এমনটিও নয়। কখনও কখনও তাদের স্বপ্নে হাজির হয় কল্প বা ঐতিহাসিক চরিত্র, সেলিব্রেটি এবং ব্যক্তি নিজেকে সফলতার যে চূড়ায় দেখতে চান- স্বপ্নে নিজেকে সেই চরিত্রে দেখতে পান।
এই Maladaptive Daydream এ থাকা ব্যক্তিরা দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করে কল্পনাতে, তাদের জীবনযাত্রা হতে থাকে মন্থর। এর লক্ষণগুলো কী কী?
১. নিজের প্লট, ক্যারেক্টারস, সিচুয়েশন মিলিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখা, অনেকটা ফিল্মিং এর মতো, মনে মনে একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা বানিয়ে ফেলা।
এই লক্ষণগুলোর সব নাও দেখা দিতে পারে, একটা বা এর বেশি দেখা দিলেই বুঝে নিতে হবে আপনি হয়তোবা এই Maladaptive Daydream এ আক্রান্ত।
অনেকে এই Maladaptive Daydreaming কে স্কিজোফ্রেনিয়ার আরেকটি ধরন মনে করে। স্কিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যেমন রিয়েলিটি আর ফ্যান্টাসি থেকে বের হয়ে আসতে পারে না, এটাও ঠিক তেমনি। কিন্তু পার্থক্য একটাই যে Maladaptive Daydreaming এর ক্ষেত্রে ব্যক্তিরা বাস্তব আর অবাস্তব বুঝতে পারে, আর তারা এটাও বুঝতে পারে যে তারা স্বপ্নে বিভোর, এমনকি এই স্বপ্ন যে সত্যি হবার নয় তাও তারা জানে।
ম্যালাডেপ্টিভ ডে ড্রিমিং এর ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা হতে পারে-
- কোনো কাজে ফোকাস না থাকা
- প্রোডাক্টিভিটি কমে যাওয়া
- নিজের সম্পর্কের অবনতি (মা বাবা ভাই বোন ইত্যাদি)
- মানসিকভাবে ভেঙে পড়া
কিছু কিছু ক্ষেত্রে যাদের ম্যালাডেপ্টিভ ডে ড্রিমিং এর অভ্যাস আছে, তাদের আরও কয়েকটা রোগ/ ডিজওর্ডার পাশাপাশি দেখা গেছে-
- ডিপ্রেশন
- Anxiety Disorder
- Post Traumatic Stress Disorder
- Bipolar Disorder
- Borderline Personality Disorder
- Psychosis