লো-অরবিট স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৫০০-১,০০০ কিলোমিটার উপরে থাকে, যেখানে জিও-স্টেশনারি স্যাটেলাইট থাকে ৩৪,০০০ কিলোমিটার উপরে! পৃথিবীপৃষ্ঠের অত্যন্ত কাছাকাছি অবস্থান করার কারণে এই স্যাটেলাইটগুলো দিয়ে অত্যন্ত দ্রতগতিতে ডেটা আদান-প্রদান করা সম্ভব হয়। এবং কাছাকাছি অবস্থানের কারনে ল্যাটেন্সিও হয় অনেক কম।
অন্যদিকে কিন্তু অপটিক্যাল ফাইবারে আলোকে গ্লাস মিডিয়ামের ভেতর দিয়ে যেতে হয় বলে আলোর গতি প্রায় ৪০% পর্যন্ত কমে যায়। আর স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলো যোগাযোগ ও তথ্য আদান প্রদানের জন্য লেজার লাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করবে।
স্পেসএক্স থেকে বলা হয়েছে, প্রতিটি স্টারলিংক স্যাটেলাইট এর ওজন প্রায় ২৬০ কেজির মতো হয়ে থাকে এবং এতে একটি কম্প্যাক্ট flat-panel এর মত ডিজাইন করা থাকে যা এর আয়তন কমিয়ে আনে। এতে করে উৎক্ষেপণের সময় স্যাটেলাইটটি সর্বাধিক ক্ষমতায় থাকতে পারে।
স্পেসএক্স এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও এলন মাস্ক আশা করেন, স্টারলিংকের সাহায্যে স্কাইনেটের মাধ্যমে গিগাবিটে ডাটা ট্রান্সফার সম্ভব হবে এবং লো-ল্যাটেন্সি বা পিং কমানো সম্ভব হবে।
ল্যাটেন্সি বলতে বুঝায় একটি কম্পিউটার অন্য একটি কম্পিউটারের সাথে কত দ্রুত কানেক্ট হতে পারে তার পরিমাপ এবং ইন্টারনেট স্পিডের তারতম্যে এর ভূমিকা রয়েছে। তাই লো-ল্যাটেন্সি নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্টারলিংক দ্রুততম স্পিডে ইন্টারনেট সেবাদানে ভূমিকা রাখবে।
জরিপে দেখা গিয়েছে, উত্তর আমেরিকায় সাধারণমানের ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে দিতে প্রায় ৪০০ স্টারলিংক স্যাটেলাইট দরকার। আর যদি আপনি মানসম্মত সেবার কথা বলেন, সেক্ষেত্রে এই সংখ্যার দ্বিগুণ পরিমাণ বাড়াতে হবে।
পরিকল্পনা করা হচ্ছে ২০২১ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার জন্য প্রায় ১২ হাজার স্টারলিংক স্যাটেলাইট মহাকাশে স্থাপন করা হবে।
আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতে স্টারলিংক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট এক্সেস করা জনসাধারণের কাছে আরও সহজলভ্য হয়ে উঠবে। এবং ভবিষ্যৎ পৃথিবীটা হয়তো আরও একধাপ এগিয়ে যাবে নেটওয়ার্কিং এর দিক থেকে।