কোয়ারেন্টাইন বা লক ডাউন সিচুয়েশন আসলে ভাল যাচ্ছে কাদের? এক্সট্রোভার্টদের কথা বাদ দিলাম, যারা বাসা থেকে না বের হলে শান্তি পান না। ইন্ট্রোভার্টদের ভেতর একটা শ্রেণি আছে যারা সারাদিন গল্পের বই নিয়ে কাটিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু এমন সিচুয়েশনে বই কিনে নিয়ে আসাটাও একটু কঠিন। তাদের জন্য “দ্যা গার্ডিয়ান” এর দৃষ্টিতে সাম্প্রতিক সেরা ৫ বই এর সাজেশন রইলো। আশা করি ভাল লাগবে এবং বলে রাখা ভাল, বইগুলো কিন্তু সায়েন্স ফিকশন/ফ্যান্টাসি জনরার।
কানাডিয়ান লেখক নিক মার্টেল এর একটি অসাধারণ সৃষ্টি এই ফ্যান্টাসি উপন্যাসটি। রাজহত্যার জন্য বিচারে থাকা এক কন আর্টিস্ট এর জবানিতে উঠে এসেছে কি করে সে নিজেকে জেলে বন্দি হিসেবে পেল আর কিভাবে এক দশক আগে তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছিলো এক রাজপুত্রকে হত্যার অভিযোগে।
গল্পটা বলা হয়েছে ‘দ্য হলো’ নামক এক জায়গাকে কেন্দ্র করে, যেখানে রাজতন্ত্র খুব টালমাটাল অবস্থায়, বিদ্রোহ যেখানে নিত্য ব্যাপার আর গৃহযুদ্ধ লেগেই আছে।
আমাদের গল্পের নায়ক মাইকেল, সেও এক রাজ উপদেষ্টার বংশধর, গল্প বলে যায় এক ভঙ্গুর সমাজের। সাথে এক ম্যাজিক কোডের প্র্যাকটিস নিয়ে যা ‘ফ্যাব্রিকেশন’ নামে পরিচিত এবং এর ভুল ব্যবহার ঠেলে দিতে পারে ধ্বংসাত্মক স্মৃতিহীনতার দিকে।
মার্টেল খুব যত্নের সাথে তার নায়ক কে বড় করে তুলেছেন, এক সুযোগসন্ধানী থেকে এক ম্যাচিউর এডাল্ট বানিয়েছেন তার নানা এ্যাডভেঞ্চার আর টুইস্টের মাধ্যমে। “দ্য কিংডম অব লায়ারস” এই সিরিজের প্রথম বই।
হাও জিংফেঙ এর ‘Folding Beijing’ বইটি ২০১৬ সালে হুগো পুরষ্কার জিতেছিল সেরা উপন্যাসিকা হিসেবে। তার সাম্প্রতিক আরেকটি উপন্যাস Vagabonds হল ৬৪০ পৃষ্ঠার এক রাজনৈতিক অস্থিরতার আখ্যান যা চাইনিজ ভাষা থেকে অনুবাদ করেছেন কেন লিউ।
উপন্যাসের ঘটনা আবর্তিত হয়েছে ২২০১ সালের কোনো এক সময়ে, মঙ্গল গ্রহের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর আর পৃথিবী খুব অসুবিধাজনক অসুবিধায় আছে। এখানে পৃথিবী হল খুবই পুজিঁবাদী এক গ্রহ যেখানে মানুষকে টিকে থাকতে সংগ্রামের পর সংগ্রাম করতে হয়।
অন্যদিকে মঙ্গল গ্রহ হল সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার এক জ্যান্ত কল্পনা যেখানে শিল্প, সাহিত্য, জীবন বিকশিত হয় কোন চাপ বা মার্কেট প্রভাবক দিয়ে নয়।
কাহিনী শুরু হয় যখন ২০ জন শিক্ষার্থী মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে গিয়েছিল কালচারাল এক্সচেঞ্জ এর অংশ হিসেবে। তাদের ভেতর ছিল ড্যান্সার লুইং, যে দুই সমাজের উপকারিতা আর উপযোগিতা আর কোন সমাজের উপর তার আনুগত্য প্রকাশ করবে সেটা নিয়ে দোটনায় ভোগে। লেখক এখানে দুটো একেবারে ভিন্ন ভবিষ্যতের দিকে পাঠক কে স্বাগত জানান।
এটা ইয়ান হোয়েটস এর অষ্টম একক উপন্যাস যাতে পাওয়া যাবে একই সাথে স্পেস ব্যাটেল, ভবিষ্যতের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, বিশাল স্পেস আর্মি আর জটিল মানসিকতার এলিয়েন। এই ট্রিলজির প্রথম দুইটা বই সামনে নিয়ে আসে আয়ন রাইডার এর ক্রুদের এবং তাদের কর্তৃক তৈরি করা সুপার ওয়েপন সমৃদ্ধ একটি এলিয়েন জাতিকে, যারা পরিচিত ছিল দ্য এল্ডার নামে। দশবছর পর ক্রুরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, শুধু এক অজানা শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে যে ক্রুদের একে একে হত্যা করছিল।
গল্পে দেখা যায়, ক্যাপ্টেন কর্নিশ আবার তার জায়গায় ফিরে এসেছেন তার বাকি ক্রুদের বাচাতে, আর অভিযান শুরু করেন পকেট ইউনিভার্স নামে একটি জায়গায় যাবার, যেখানে এল্ডাররা এক প্যান্ডোরার বক্স ভর্তি সুপার অস্ত্রশস্ত্র রেখে গেছে। লক্ষ্য সামন্ত আর্মি আর দুষ্টু এলিয়েনদের সেখানে পৌঁছাবার আগেই পৌঁছানো। লেখক খুব মুন্সিয়ানার সাথে বইটিতে একটা স্পেস ব্যাটেল এর পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন যা পাঠককে ডুব দিতে সাহায্য করবে অচিরেই।
ব্রিয়ানা টেইনিটজ এর ‘এম্পটি গড’ সিরিজের দ্বিতীয় বই এটি। সিরিজের আগের বই The lord of Secrets আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় করকোরান গ্রে নামে এক বদরাগী কিন্তু উচ্চাকাঙ্খী জাদুকরের সাথে যে পালিয়েছে Mage’s Guild থেকে এবং তার ভালোবাসার নারী, ব্রিক্স এর সাথে।
এই বইটি শুরু হয় সেখান থেকে যেখানে আগের কাহিনী শেষ হয়েছিল। গ্রে এবং ব্রিক্সকে একসময় গিল্ড শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং জোর করে পাঠায় এমন এক অভিযানে যেখান তাদের খুঁজে বের করতে হবে এমন এক খুনিকে যার কার্স গিল্ডের অন্য সদস্যদের হত্যা করছিল।
লেখক এখানে এক জাদুময় পরিবেশ সৃষ্ট করেছেন যা পাঠক কে ভুলিয়ে রাখবে অনেকক্ষণ।
ফ্যান্টাস্টিক এ্যাস্কেপিজম এর স্বাদ নিয়ে এসেছেন ক্যাট ডান তার ‘Dangerous Remedy’ বই এ। এই বইটি লেখক নিজে বর্ণনা করেছেন, ‘ফরাসি বিপ্লবের স্ট্রেঞ্জার থিংস’ হিসেবে যা স্টিমপাঙ্ক এবং হিস্টোরিক্যাল থ্রিলার এর এক অনবদ্য মিশ্রণ।
ঘটনা বর্ণিত হয়েছে ১৭৯৪ এর পটভূমিতে, যেখানে প্রোটাগনিস্ট ক্যামিল তার বন্ধুদের নিয়ে একটি দল পরিচালনা করে যাদের কাজ হল অন্যায় ভাবে গিলোটিন এর দ্বারা শাস্তি পাওয়া মানুষদের বাঁচানো। তার দল পরিচিতি পায় ‘ব্যাটেলিয়ন অফ ডেড ‘ নামে।
এই উপন্যাস পাঠককে রোমাঞ্চের এক দুনিয়ায় নিয়ে যাবে, যখন পুরো ব্যাটেলিয়ন একটি বেলুন শিপে চড়ে কোনো এক পারসিয়ান জেল থেকে এক বন্দিকে বাঁচানোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু একসময় ক্যামিল জানতে পারে, সে যে মেয়েকে উদ্ধার করেছে, তার জাদুশক্তির জন্য রাজতন্ত্রপন্থী এবং বিপ্লবী….সব কিছু করতে পারে।এছাড়া ক্যামিলের সাথে তার প্রেমিকা এ্যাডা-র সম্পর্কও খুব সুন্দরভাবে চিত্রিত হয়েছে বইটিইতে।
ঋভু/ নিজস্ব প্রতিবেদক
+1
5
+1
1
+1
+1
1
+1
+1
+1
2