কোভিড-১৯ এর করাল গ্রাসে গোটা বিশ্ব এখন অসহায়। এই মুহূর্তে যা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় তা হল কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন। এই করোনা আতঙ্কের মধ্যে সুখবর, আজ থেকেই করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে, এমন সুখবর জানাচ্ছে ব্রিটেন সরকার। জানা গেছে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনা প্রতিষেধক টিকা মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। মঙ্গলবার করোনা নিয়ে নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনে এমন সুখবর জানিয়েছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক।
করোনাভাইরাস সকল সংবাদ এখানে |
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আজ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের যৌথ প্রচেষ্টায় সিএইচএডিওএক্স১ এনকোভ-১৯ নামের ভ্যাকসিনটি মানবদেহে প্রয়োগ করা হবে। বিজ্ঞানীদের তৈরি এই ভ্যাকসিন সফল হলে বড় ধরনের এক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়ে যাবে গোটা বিশ্ব।
সারা বিশ্বের অন্য গবেষকদের মতো অক্সফোর্ডের গবেষকেরাও কোভিড ১৯ -এর অ্যান্টিবায়োটিক তৈরিতে কাজে লেগে পড়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী ওষুধ তৈরিতে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে।
ব্রিফিংয়ে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে প্রথম এ ধরনের কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলো। অক্সফোর্ড বিজ্ঞানীদের এই ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টায় সব ধরনের সহায়তা করেছে ব্রিটিশ সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্রিটিশ সরকার বিজ্ঞানীদেরকে অতিরিক্ত ২০ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশ মুদ্রায় প্রায় ২০৯ কোটি টাকা) দেবে।
করোনার ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণার কাজে যুক্ত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আদ্রিয়ান হিল এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমরা জানি, সারা বিশ্বের মানুষ আর অপেক্ষা করতে চাইছেন না। আমরা আশাবাদী মানবদেহে যে ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে, তা ৮০ শতাংশ কার্যকরী হবে।’
মানবদেহে প্রয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে তিন লিটারের ডোজ তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়ে হিল আরও বলেন, ‘আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ১০ লক্ষ ডোজ তৈরি করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আমরা যে ভ্যাকসিন তৈরি করেছি, সেটা কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই তৈরি করেছি। যদি ফল ভাল আসে তাহলে দ্রুতই বাজারজাত করা হবে।’
এর আগে মানবদেহে প্রথমবারের মতো করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের বিজ্ঞানীরা। ওই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে এখনো গবেষণা চলমান রয়েছে।
এছাড়াও জানা গেছে প্রাণীদের ওপর করোনা ভ্যাকসিনের যে পরীক্ষা করা হয়েছিল, তা সফল হয়েছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, গোটা বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় প্রায় ৭০টি ভ্যাকসিনের ওপর কাজ চলছে। এর মধ্যে ৩টি মানব শরীরে পরীক্ষা হবে।
রিপোর্ট বলছে, চীনা গবেষকরা ইতিমধ্যেই বাঁদর ও ইঁদুরের ওপর যে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা করেছিলেন, তা সফল হয়েছে। SARS-CoV-2-এর অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে ভ্যাকসিনটি। bioRxiv নামে এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য। দুটি ভিন্ন ডোজে এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চলে। ৩ ও ৬ মাইক্রোগ্রাম ভ্যাকসিন ইঁদুর ও বাঁদরদের দেওয়া হয়।