মানুষ নাকি কিছুদিন পর মঙ্গল গ্রহে বসবাস শুরু করবে। মঙ্গল গ্রহ হবে নাকি দ্বিতীয় পৃথিবী। এটি এখন বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস-আশ্বাসের চাপে মানুষের মুখের বুলি। কিন্তু প্রশ্ন হলো মানুষ কিভাবে মঙ্গল গ্রহে যাবে? এবং গেলেও কিভাবে মানুষ সেখানে বসতি বানাবে? এই সব বিষয় সম্ভব করার জন্য বিজ্ঞানীদের কছে কি কি পরিকল্পনা রয়েছে?
আর এত সব প্রশ্নের উত্তর জানা ও জল্পনা কল্পনা সত্যি প্রমাণের লক্ষ্যে মঙ্গল গ্রহে বসবাসের অনুশীলন করে একদল অভিযাত্রী জনমানবশূন্য পরিবেশে এক বছর কাটিয়ে ফিরে এসেছেন। ছয় জনের এই দলটি হাওয়াই দ্বীপে বিশেষভাবে তৈরি এক গবেষণাগারে ২৯শে অগাষ্ট, ২০১৫ থেকে বসবাস করতে থাকেন।
মঙ্গলে বেঁচে থাকতে হলে মানুষের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিলো পানি ও অক্সিজেন। এছাড়াও মঙ্গলের বায়ুমন্ডল পৃথিবীর তুলনায় অনেক পাতলা, তাই সহজেই যেকোনো উল্কা পিন্ড ও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি মঙ্গলে থাকা মানুষদের ক্ষতি করতে পারে। তাই মানুষের প্রয়োজন ছিলো এমন প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার অনুশীলন করা।
এই পুরো একটি বছর তারা মুক্ত বাতাস, তাজা খাবার এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা উপভোগ করতে পারেননি। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, আগামী এক থেকে তিন বছরের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে মানুষ-বাহী রকেট পাঠানো সম্ভব হবে।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার অর্থায়নে এই পরীক্ষামূলক গবেষণার সমন্বয় করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণায় অংশ নেয়া ছয় জনের মধ্যে ছিলেন একজন ফরাসি অ্যাস্ট্রো-বায়োলজিস্ট, জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী এবং চারজন আমেরিকান – একজন পাইলট, একজন আর্কিটেক্ট, একজন সাংবাদিক এবং একজন মৃত্তিকাবিজ্ঞানী।
মঙ্গলের বদ্ধ জীবন অনুশীলনে এই পুরো এক বছর ধরে এই দলটিকে বেঁচে থাকতে হয়েছে সীমিত সম্পদের ওপর। তারা বসবাস করতো বিশেষভাবে তৈরি একটি ডোমের মধ্যে। বাইরে যেতে হলে স্পেস স্যুট পরে যেতে হতো। তাদের বিছানা ছিল ছোট। খাবারের মধ্যে ছিল পনীরের গুড়ো এবং টিনে ভরা টুনা মাছ।
কেমন ছিল অভিজ্ঞতা?
ফ্রান্সের অ্যাস্ট্রো-বায়োলজিস্ট সিপেরিয়ে ভার্সো বলছেন,” এই অভিজ্ঞতার পর তার মনে হয়েছে, মঙ্গলগ্রহের মানুষের অভিযানের সম্ভাবনা এখন অনেক উজ্জ্বল। “এই কাজে যেসব কারিগরি বা মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা তৈরি হয় সেটাও দূর করা যাবে বলে আমার মনে হয়। “মিশন প্রধান কারমেল জনস্টন বলছেন, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অভাব ছিল সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
“এটা অনেকটা সেই সব রুমমেটের মতো যারা কখনই ঘর ছেড়ে যায় না।”
+1
+1
+1
+1
+1
+1
+1