অতিরিক্ত চিনি গ্রহন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটা তো আমরা জানিই। তবে স্বল্প পরিমাণে চিনিও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে প্রমাণ করেছেন একদল গবেষক। অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ শুধুমাত্র ক্যালরি বৃদ্ধি করে এমন না বরং চিনিতে থাকা সুক্রোজ কিংবা ফ্রুক্টোজ শরীরের নিজস্ব ফ্যাট উৎপাদন ক্ষমতা কে দ্বিগুন করে দেয়। যার ফলে একটা দীর্ঘ সময় পরে আমাদের লিভারে ফ্যাট বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিসও ধরা পড়ে।
বলা হয়ে থাকে, “Sugar is a bittersweet reputation when it comes to health.“
প্রাকৃতিক ভাবে যেসব খাদ্য যেমন শর্করা, ফল, সবজি, শস্য অথবা দুধে যে পরিমাণে চিনি থাকে তা শরীরে তেমন প্রভাব ফেলে না। সমস্যা ঠিক তখনই দেখা দেয় যখন আমরা আরো চিনি যোগ করে আমাদের দৈনন্দিন খাবার গুলো খাচ্ছি। কিংবা দৈনন্দিন এমন খাবার খাচ্ছি যাতে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্রাধিক চিনি।
দৈনিক ৮০ গ্রাম চিনি গ্রহণ করা প্রায় ০.৮% লিটার সফট ড্রিংকস খাওয়ার সমান। যা কিনা লিভারে ফ্যাট বুস্ট করে। এবং এই বুষ্টিং প্রক্রিয়াটি চিনি খাওয়া বন্ধ করার পরও একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চলতে থাকে। পরিমিত পরিমাণে চিনি-ও দেহে ফ্যাট সংশ্লেষণ বা উৎপাদন বাড়ায়।
গবেষণার জন্য ৯৪ জন স্বাস্থ্যবান পুরুষকে নেওয়া হয়। প্রায় সাত সপ্তাহ জুড়ে প্রতিদিন তাদেরকে বিভিন্ন রকমের চিনি মিশ্রিত পানীয় পান করানো হয়। যাদের মধ্যে গ্লুকোজ, সুক্রোজ ও ফ্রুক্টোজ গ্রহণকারীদের আলাদা আলাদা গ্রুপ করা হয়। গবেষকরা এক্ষেত্রে ট্রেসার ব্যবহার করেছিল যাতে করে লিপিড মেটাবলিজমের উপর সুগারের প্রতিক্রিয়া বুঝতে পারা যায়।
গবেষণা শেষে ফলাফলে দেখা গেল সবচেয়ে বেশি নেগেটিভ ইফেক্ট পড়েছিল ফ্রুক্টোজ গ্রহণকারী ব্যক্তিদের উপর। দেখা যায় যে, শরীরের ফ্যাট উৎপাদনকে দ্বিগুণ হারে বাড়িয়ে দেয় ফ্রুক্টোজ। তবে গ্লুকোজ ও সুক্রোজ ব্যবহারকারী গ্রুপে এই হার খুবই কম। ফ্রুক্টোজ ফ্যাট উৎপাদন ক্ষমতা কে যে হারে বাড়িয়ে দেয় তা প্রায় ১২ ঘন্টা যাবত চলতে থাকে।
অতিরিক্ত মাত্রায় ফ্যাট যখন লিভারে বেড়ে যায় তখন অন্য রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে যেমন টাইপ-২ ডায়াবেটিস। এছাড়াও অতিরিক্ত রক্তচাপ ও হার্টের সমস্যা দেখা যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বলা হয়েছে দৈনিক ৫০ গ্রামের বেশি চিনি না খাওয়ার জন্য তবে ২৫ গ্রাম চিনি খাওয়াকে শরীরের জন্য উত্তম বলা হয়েছে। যা আমাদের দৈনন্দিন খাবারেই থাকে।
সৈয়দ মহিউজ্জামান/ নিজস্ব প্রতিবেদক