করোনা সংক্রমণের একাদশ সপ্তাহ পার করছে বাংলাদেশ অর্থাৎ গণ সংক্রমণের সবচাইতে জটিল সময় এটি; পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যখন আক্রান্ত আর মৃতের হার ঠিক তখনই সুখবর এলো বাংলাদেশের একদল চিকিৎসকের কাছ থেকে। দেড়মাসের গবেষণায় তারা দাবি করেন, অ্যান্টিপ্রোটোজোয়াল (পরজীবীনাশক) মেডিসিনের সিংগেল ডোজের সাথে অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিনের প্রয়োগে ৪ দিনেই কোভিড-১৯ উপশম সম্ভব।
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের বক্ষব্যাধী বিভাগের অধ্যাপক তারেক আলম এক সহযোগী চিকিৎসককে নিয়ে প্রায় দেড়মাস ধরে গবেষণার পর প্রচলিত দুটি ঔষধ কে সমন্বিত করে এই নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তাঁদের দাবি, অ্যান্টিপ্রোটোজোয়াল (পরজীবীনাশক) মেডিসিন ইভারমেকটিন এর সিংগেল ডোজের সাথে অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিন প্রয়োগে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের উপসর্গ মাত্র ৩ দিনে ৫০% কমে যায়, আর ৪ দিনেই টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসার বিস্ময়কর সাফল্য পেয়েছেন তাঁরা। ৬০ জন রোগীর উপর গবেষণায় তাঁরা এই ফলাফল পেয়েছেন।
এই সম্পর্কে অধ্যাপক তারেক আলম বলেন, ইভারমেকটিন এর অ্যান্টিভাইরাল প্রপার্টি থাকার কারণে এর একটি টেস্ট হয়েছিলো অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে, সেখানে দেখা গেছে এটি খুব কম সময়ে প্রাথমিক অবস্থায় ভাইরাসটি নির্জীব করতে সক্ষম, আর সেই সাথে ডক্সিসাইক্লিন প্রয়োগ করা হয়েছে যাতে কোন সেকেন্ডারি ভাইরাসের সংক্রমণ না ঘটে।
তাঁর মতে ঔষধ গুলো করোনা উপসর্গের একদম প্রাথমিক অবস্থায় প্রয়োগে অধিক কার্যকরী। কারণ তাঁরাও গবেষণার সময় রোগীদের প্রাথমিক অবস্থায় এই ঔষধ প্রয়োগ করে সফলতা পেয়েছেন। তবে এই সম্পর্কে তিনি আরো বলেন সংক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় ইভারমেকটিন এবং ডক্সিসাইক্লিন এর সমন্বিত ঔষধ কার্যকরী হলেও সংক্রমণ পরবর্তী জটিল অবস্থায় তা কতোটুকু কাজ করবে সেই বিষয়ে নিশ্চিত নন তাঁরা। এই সম্পর্কে তিনি বলেন, আইসিইউ সংকটের কারণে তাঁরা তেমন জটিল অবস্থার কোন রোগী ভর্তি করাতে পারেন নি বিধায় গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে এর কার্যকরিতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলে, গবেষণার ফলাফলের সত্যতা যাচাই শেষে চূড়ান্ত সফলতা পেলে তারা পদ্ধতিটিকে করোনা চিকিৎসার গাইডলাইনে সংযুক্ত করবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান জানান, তাঁরা গবেষক দলের সাথে এর সফলতার সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে সন্তোষজনক ফলাফল পেলে সরকারের নির্দেশনা সাপেক্ষে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা প্রদান শুরু করবেন। উল্লেখ্য ইভারমেকটিন বিভিন্ন পরজীবী (যেমনঃ উকুন) এর সংক্রমণ সারাতে বিশ্বজুড়ে অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ ওষুধ হিসেবে বিবেচিত। তুলনামূলকভাবে কম দামি এই ওষুধ বাংলাদেশেও সহজলভ্য।
এ এন এম নাঈম/ নিজস্ব প্রতিবেদক