আজকাল আমাদের স্মার্টফোন আসক্তির প্রধান কারন হিসাবে ফোনে আসা নোটিফিকেশন কে দাবী করা হয়। তবে, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক এবং পলিটিক্যাল সায়েন্স এর জরিপে বলা হয় যে, ৮৯ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী স্মার্টেফোনের সাথে বিনা কারনে সংযুক্ত থেকে সময় ব্যয় করে, আর শুধু ১১ শতাংশ ব্যবহারকারী নোটিফিকেশন চেক করতে গিয়ে সময় ব্যয় করে। নোটিফিকেশন গুলোর মাঝে গ্রুপ চ্যাটের নোটিফিকেশন আমাদের সবচেয়ে মনোযোগ বিচ্ছিন্নকারী নোটিফিকেশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তবে, অংশগ্রহণকারীদের মতে ইমেইল এর নোটিফিকেশন কে গুরুত্বপূর্ণ নোটিফিকেশন হিসাবে বলা হয়।
গবেষনাটি করা হয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সের ৩৭ জন মানুষ নিয়ে যাদের গড় বয়স ২৫ বছর। অংশগ্রহনকারীদের ক্যামেরার মাধ্যমে সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে এই পরীক্ষাটি করা হয়।
গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, আমরা হোয়াটসঅ্যাপে প্রায় ২২ শতাংশ, লক স্ক্রিন (নোটিফিকেশন আসছে কিনা তা দেখতে) ১৭ শতাংশ, ইনস্টগ্রামে ১৬ শতাংশ, ফেসবুক ১৩ শতাংশ, ইমেইল ৬ শতাংশ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কলে ১ শতাংশ সময় ব্যয় করে থাকি।
তবে, আমরা যখন পরিচিত ব্যাক্তি বা বন্ধু বা পরিবারের সাথে থাকি তখন আমাদের স্মার্টফোনে খুব কম সময় ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু, আমরা যখন যানবাহন বা বাসায় থাকি তখন ফোন ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি সময় অপচয় করি।
তবে গবেষণাটির ফলাফল অধিকাংশ অংশগ্রহণকারীকে বিস্মিত করেছে। একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, “আমি নিজেকে কখনই তাদের মধ্যে বিবেচনা করি না যারা স্মার্টফোন সারাক্ষণ ব্যবহার করে বা আসক্ত থাকে। তবে, এই রিপোর্ট দেখার পর আমার মনে হলো যে আমি কখন ফোন ব্যবহার করি এটা আমার হিসেব থাকে না। আমার মনে হয় আমিও ফোন খুব বেশি পরিমানে ব্যবহার করি”।
এল এস ই (LSE) এর স্টাডি এন্ড চেয়ার অব সোশ্যাল সাইকোলজি এর সহকারী লেখক এবং অধ্যাপক সাদী লাহলো বলেন, “আমরা সামাজিক যোগাযোগের চেয়ে, স্মার্টফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় ব্যয় করায় অধিক অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। দিন দিন বিষয়টি আরও মারাত্মক হয়ে পড়ছে বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য ও আমরা একটি অন্ধকার জগতের দিক চলছি। কিভাবে এই ডিভাইস গুলো আমাদের জীবন পরিবর্তন করে চলছে তা অনেকটাই আমাদের ধারণার বাইরে। আমাদের অবশ্যই এ থেকে এড়িয়ে চলার জন্য কিছু পদ্ধতি শিখতে হবে এবং আমাদের সামাজিক সম্পর্কগুলোর দিকে আরো বেশি মনযোগী হতে হবে।”
আল-আমিন/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি