পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ নিয়ে মানুষের জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। চাঁদ নিয়ে রয়েছে অনেক রূপকথা, রয়েছে অনেক কবিতা ও সাহিত্য। আর নাসার (NASA) আর্টেমিস প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্যেই হচ্ছে চাঁদ-এর এই রহস্য মানুষের কাছে উন্মোচন করা।
৫ দশক পর আবার আর্টেমিস প্রোগ্রামের মাধ্যমে চন্দ্রাভিযান শুরু করছে নাসা। এই প্রোগ্রামে ২০২৪ সালে চাঁদ-এ যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন নাসার ১৮ জন নভোচারী (Astronauts)। এদের মধ্যে ৪ জন মহাকাশচারী চাঁদের মাটিতে পা রাখবেন। তাদের মধ্যে নারী ও পুরুষ উভয়ই রয়েছে, রয়েছেন অশ্বেতাঙ্গও। ২০২৪ সালের মধ্যে আবারো চাঁদে যেতে এবং এই দশকের শেষের দিকে সেখানে একটি স্থায়ী স্পেস স্টেশন তৈরিতে কাজ করছে নাসা।
মহাকাশ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের প্রশাসন কংগ্রেসের কাছে ২০২২ অর্থবছরের জন্য ২৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি বাজেট প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে।
এই তহবিল ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণা এবং নাসা দ্বারা পরিচালিত সব প্রোগ্রামে সামগ্রিক লক্ষ্য অর্জন করতে সফল হবেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি সম্পূর্ণ বাজেট প্রকাশ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যাতে আর্টেমিস প্রোগ্রামে ব্যয় সহ আরও বিস্তারিত পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে নাসা এবং ফেডারেল সরকারের বাকী বাজেটগুলি চূড়ান্তভাবে কংগ্রেসের দ্বারা নির্ধারিত হয়। তাই সব কিছু নির্ভর করছে কংগ্রেসের উপর।
এর আগে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আসন্ন আর্টেমিস মিশনে অন্যদের সঙ্গে এক মহিলা মহাকাশচারীও হাটবেন চাঁদে। তাদের মধ্যে যে এক জন অশ্বেতাঙ্গও থাকছেন, তা স্পষ্ট হয় নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর স্টিভ জুরজাইক ঘোষণা দেওয়ার পর।
চাঁদের বুকে হাটা শেষ মহাকাশচারী ছিলেন ইউজিন কারনান (Eugene Cernan)। তিনি ছিলেন নাসার ‘অ্যাপোলো-17’ মিশনের কমান্ডার। ১৯৭২ সালের ১৪ ডিসেম্বর তিনি হেটেছিলেন চাঁদের বুকে। তার পর আর কোনও মানুষের পা পড়েনি চাঁদে।
চাঁদে পা রাখার গল্পটা কিছুটা হলেও পুরনো। সে সময় হয়তো মানুষ বর্তমান সময়ের মতো বিজ্ঞানের সাথে এতোটা সম্পর্ক করতে পারে নি। ছিলো না আজকের মতো উন্নত কম্পিউটার, সুপার কম্পিউটার, স্যাটেলাইট, টেলিস্কোপ ইত্যাদি।
চাঁদের বুকে মানুষের প্রথম পদক্ষেপের সূচনা হয়েছিল ১৯৬৯ এ। ১৯৬৯ এর ২০ জুলাই প্রথম চাঁদের বুকে হেঁটেছিলেন নাসার ‘অ্যাপোলো-11’ এর দুই মহাকাশচারী নিল আর্মস্ট্রং (Neil Armstrong) এবং বাজ অলড্রিন (Buzz Aldrin)। চাঁদে প্রথম পা রেখেছিলেন আর্মস্ট্রং। তার ২০ মিনিট পরে পা ফেলেছিলেন অলড্রিন। ১৯৬৯ এর জুলাই থেকে ১৯৭২ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত নাসার বিভিন্ন মিশনে মোট ১২ জন মহাকাশচারী হেঁটেছেন চাঁদের বুকে। তাঁদের মধ্যে এক জনও ছিলেন না নারী বা অশ্বেতাঙ্গ। তাই বলা যায় এই ঘটনাটি হবে চন্দ্র অভিযানের ক্ষেত্রে একটি বিরল ঘটনা।
মাহফুজ আহমেদ/ নিজস্ব প্রতিবেদক