ভিন্ন ভিন্ন তিনজন মানুষের ডিএনএ থেকে আইভিএফ এর মাধ্যমে জন্মালো শিশু। প্রশ্ন আসতে পারে এর কারণ কী আর কীভাবেই বা এই কাজ করা হলো! প্রথমে আসা যাক কারণ কী? যে পদ্ধতি এক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়েছে তা হলো MDT বা Mitochondrial Donation Treatment। MDT এর রিসার্চ এর একটি অংশ হচ্ছে MRT। এই কৌশলের ক্ষেত্রে আইভিএফ-এ অতিরিক্ত একজন সুস্থ নারীর ডিম্বাণুর টিস্যু ভ্রূন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় যা মিউটেশন ঘটাবে না। মূলত মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিজঅর্ডার প্রতিরোধে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মাইটোকন্ড্রিয়া হলো কোষের শক্তিঘর। মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিজওর্ডার হলো এমন অবস্থা যেখানে মাইটোকন্ড্রিয়া খাবার থেকে পর্যাপ্ত শক্তি উৎপাদন করতে পারে না। MDT প্রক্রিয়ায় ভ্রূনে এক্ষেত্রে বাবার শুক্রাণু, মায়ের ডিম্বাণু ও একটা ছোট্ট অংশ ডিম্বাণু দাতার মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে। এই শিশুর ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ৯৯.৮% ডিএনএ বাবা-মায়ের, আর সামান্য জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল ৩৭টি জিন বা ০.২% ডিএনএ আলাদা ডিম্বাণু দাতার।
কীভাবে করা হয়?
এখন পর্যন্ত Newcastle Clinic প্রথম ও একমাত্র ন্যাশনাল ক্লিনিক যারা MDT প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে UK পার্লামেন্ট থেকে। Newcastle এর এই MDT এর ক্ষেত্রে দুই ধরনের পদ্ধতি রয়েছে- Maternal Spindle Transfer (MST) ও Pronuclear Transfer (PNT)। MST এর ক্ষেত্রে প্রথমে মায়ের ডিম্বাণু যখন মেটাফেজ এর দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকে, তখন স্পিন্ডল-ক্রোমোসোম কমপ্লেক্স সরিয়ে ফেলা হয়। এবং তা দাতা ডিম্বাণুতে(নিউক্লিয়াসবিহীন) প্রতিস্থাপন করা হয় ও শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত করা হয় এবং ব্লাস্টোসিস্ট গঠন করা হয়। PNT এর ক্ষেত্রে দাতা ও মায়ের দুইটি ডিম্বাণুকেই একই শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত করা হয়। এরপর দুটি নিষিক্ত ডিম্বাণু থেকেই Pronuclei সরানো হয়। এরপর বাবা-মায়ের Pronuclei তখন দাতার নিষিক্ত ডিম্বাণুতে প্রবেশ করানো হয়। এছাড়া আরও একটি পদ্ধতি ছিলো Polar Body Transfer; যা এখন ব্যবহার হয় না; এই পদ্ধতির কারণে শিশুর দেহে ভিন্ন তিনজন মানুষের ডিএনএ -র উপস্থিতি দেখা যায়। MDT এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত পাঁচজন শিশুর জন্ম হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায় এবং প্রথম শিশু কোনো জর্দানিয়ান ফ্যামিলির বলে জানা গিয়েছে।
মিথিলা ফারজানা মেলোডি/নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান বিবিসি
আরোও পড়ুন: সারোগেসি কী এবং কেন?