আকাশপথে গাড়ি উড়ানোর স্বপ্ন কম বেশি আমাদের সবার মাঝেই বিরাজ করে। যানজটে আটকে না থেকে যদি সাঁই করে উড়ে যাওয়া যেত তবে মন্দ হতো না; এরকম কল্পনা আমাদের হতেই পারে। তবে এবার কল্পনা নয়, বরং সত্যিকার অর্থেই গত ১০ অক্টোবরে চীনের উড়ন্ত গাড়ি ‘eVTOL Xpeng X2’ তার প্রথম উড্ডয়ন সম্পন্ন করে দুবাইয়ে। উড়ন্ত গাড়িটির নির্মাতা হলো Xpeng Inc এবং এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন He Xiaopeng।
দুবাইয়ে গত সোমবার উড়ন্ত গাড়িটির ৯০ সেকেন্ডের একটি পরীক্ষামূলক ফ্লাইট সম্পন্ন করা হয়। এর নির্মাতাদের মতে উড়ন্ত গাড়িটি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
Xpeng Aeroht এর জেনারেল ম্যানাজার Minguan Qiu বলেছেন,
” আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে ধাপে ধাপে চালু করার পরিকল্পনা করছি। প্রথমে আমরা দুবাই শহর বেছে নিয়েছিলাম কারণ দুবাই বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনী শহর।”
গাড়িটির কাঠামো:
eVTOL Xpeng X2 হলো পঞ্চম প্রজন্মের উড়ন্ত গাড়ি যা Xpeng Aeroht দ্বারা ডেভেলপ এবং ম্যানুফ্যাকচার করা হয়েছে। এই উড়ন্ত গাড়ির ক্ষেত্রে যেসকল নতুন জিনিসের সংযুক্ত হয়েছে তা হলো, বদ্ধ ককপিট, টিয়ার-আকৃতি নকশা এবং কল্পকাহিনির মতো চেহারা যা উড়ন্ত গাড়ির উচ্চ এরোডাইনামিকসকে প্রভাবিত করে। এরোডাইনামিকস হচ্ছে বাতাসের সংশ্লিষ্ট গতিবিধি একটি শাখা, বিশেষ করে যখন বাতাস একটি কঠিন বস্তুর সাথে যোগাযোগ করে। এতে ফ্লাইট এর কার্যক্ষমতা সর্বাধিক হয়। Xpeng X2 এর ওজন সীমিত করার জন্য সম্পূর্ণভাবে কার্বন ফাইবার কাঠামোতে তৈরি করা হয়েছে। এতে মোটামুটি দুইজন যাত্রী একসাথে ভ্রমণ করতে পারবে। সবচেয়ে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, Xpeng X2 ফ্লাইটের সময় কোনো কার্বন নির্গমন করে না কারণ এটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক এবং এর আটটি রোটার থাকায় উড়ন্ত গাড়িটি প্রায় ৩৫ মিনিটের জন্য ১৩০ কিমি/ ঘণ্টা গতিতে ৩,২০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উঠতে পারে।
সুযোগ সুবিধা:
চীনের উড়ন্ত গাড়ি Xpeng X2 শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান এবং চিকিৎসা পরিবহনসহ স্বল্প দুরত্বের যাতায়াতের জন্য উপযুক্ত। উড়ন্ত গাড়িতে দুটি ড্রাইভিং মোড রয়েছে; Manual এবং Autonomous। Autonomous flight এর সময় উড়ন্ত গাড়িটি নিজে থেকে চলতে পারে এবং যাত্রীরা পিছনে বসে একটি বোতামের স্পর্শে দৃশ্য উপভোগ করতে পারবে। কোম্পানি বলছে, ফাংশনটি স্টার্টে ক্লিক করার মতোই সহজ, উঁচুতে উড়ে যাওয়া এবং ল্যান্ডিং অপারেশনের মাধ্যমে গন্তব্যে ফিরে আসা।
গাড়িটির অভ্যন্তরে, সিনেমা হলের চেয়ারের মতো কুশনযুক্ত আসনগুলো হেডরেস্টেও সহায়তা করে এবং প্রতিটি যাত্রীর সামনে একটি ডেডিকেটেড এলসিডি স্ক্রিন রয়েছে যা ফ্লাইটের তথ্য প্রদর্শন করে। যাত্রীদের ফ্লাইট মোডে সহায়তা করতে এবং ভ্রমণের সেটিংস পরিবর্তন করতে গিয়ারবক্সে একটি ট্যাবলেট রয়েছে। যাত্রীরা যাতে আকাশে অন্যান্য বিমানের পাইলটদের জন্য blind spot তৈরি না করে রাতেও উড়তে পারে সেই উদ্দেশ্যে বাইরের অংশটি সবুজ, সাদা, লাল এবং নীলের মতো বিভিন্ন আলো দিয়ে সারিবদ্ধ থাকে।
আপনার কি মনে হয় এরকম একটি আকাশযান যদি বাংলাদেশে আনা হয় তবে কেমন হয় ?
দিদারুল ইসলাম/নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্র: রিউটারস , ডিজাইনবুম