আমার বন্ধু রিফাদ আহমেদ শিথিল সম্প্রতি আবিষ্কার করেছে “কোভিড-নাইনটিন সেফটি ফেস মাস্ক ডিরেক্টর ইন অটোমেটিক ডোর অর্থাৎ মাস্ক আইডেন্টিফায়ার ডোর”!
মাস্ক আইডেন্টিফায়ার ডোর তৈরির কার্যকারীতা হলো- এটা এ্যাপ্লাই করলে কোনো ব্যক্তি ফেস মাস্ক ছাড়া ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না! শুধু মাস্ক থাকলেই ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে। মাস্ক থাকলে একটি সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে ও খুলে যাবে, এবং স্বাগতম জানানো হবে। মাস্ক না থাকলে মাস্ক পরার অনুরোধ করা হবে।
শিথিল আমাদের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের মধ্যবিত্ত এক পরিবারের ছেলে।বর্তমান পান্টি ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। শিথিল শুধু স্বপ্নবাজ ছেলে নয় বরং স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানে বিশ্বাসী কিশোর। চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে একমাত্র শখের মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে তার মাস্ক শনাক্তকারী ডোর তৈরিতে খরচ করেছে। শিথিল বিশ্বাস করে অধ্যবসায় আর আত্মবিশ্বাসই পারে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণে পৌঁছে দিতে।
দোকানদার বাবা নজরুল ইসলাম এবং মা শেলীর অনুপ্রেরণায় তার আজকের এই অবস্থান। ছোটবেলা থেকেই তার প্রবল আগ্রহ দেশ ও দশের উন্নতির পেছনে কাজ করা। তার স্বপ্ন সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলছে দূর্বার গতিতে। এরই মধ্যে শিথিল কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার ৪২ তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলায় তার তৈরি ‘Covid-19 safely face mask detector in automatic door’ উপস্থাপন করে পান্টি ডিগ্রি কলেজের হয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে। তার এই অভিনব পদ্ধতিতে তৈরির জন্য বিভিন্ন মহল থেকে ভূয়সী প্রশংসাও পেয়েছে।
https://youtu.be/lgC_-ck8pC4
মাস্ক শনাক্তকারী ডোর তৈরির অল্প দিনেই পুরস্কারের ঝুড়িতে যুক্ত হলো উপজেলা পর্যায়ে ৪২তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার সেরা প্রথম স্থানের। ইতোপূর্বে ২০১৯ সালেও এই মেলাতেই ১ম ও জেলা পর্যায়ে ২য় স্থান অধিকার করে। সঠিক দিকর্নিদেশনা আর অর্থের অভাবে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে পারেনি।
মাস্ক শনাক্তকারী ডোর তৈরির সহযোগী ছিল পান্টি ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের তারই দুই বন্ধু সাগর হোসেন আর মুস্তাফিজুর রহমান নয়ন।
শিথিল বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই টেকনোলজি জাতীয় কাজ করতে ভালোবাসি। রোবটিক্স নিয়েও কাজ করতে আমার ভালো লাগে। আমি গত ২০১৯ সালে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় একটি ইন্টারনেট কন্ট্রোল পিআই রোবট তৈরি করি। ওই রোবটটির কাজ ছিল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে রোবটের মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করা। যে সব দুর্গম স্থানে মানুষ সহযে যেতে পারে না, সে সব স্থানে এটি সহজে পাঠানো যাবে ও সেই স্থানের সব তথ্য গ্রহণ করা। আমার অনেক অগ্রগতি ছিল রোবটিস্ক নিয়ে।
কিন্তু ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের মহামারিতে আমার পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এই র্মূহুতে আমি কিছুটা আর্থিক সাহায্য পেলে আমার বাকি কাজগুলো শেষ করতে পারতাম।”
কুষ্টিয়া জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর বলেন, “আমার নিজ এলাকার ছেলের এই অভিনব মাস্ক শনাক্তকারী ডোর তৈরির কথা শুনতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। শিথিলের এই কাজের পেছনে যতটুকু সহযোগিতা দরকার, আমরা করবো। যাতে আমাদের গ্রামে ওর মাধ্যমে সুনাম বয়ে আনে এই কামনাই করি।”
পান্টি ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল বজলুর বায়েজীদ স্যার বলেন, “কুমারখালী উপজেলার ৪২তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলায় আমাদের কলেজের একজন শিক্ষার্থী মাস্ক শনাক্তকারী ডোর তৈরি করে প্রথম হয়। এটা আমাদের জন্য দারুণ গর্বের বিষয়। বর্তমান সরকার যেমন মাস্ক ব্যবহারে কঠোর হয়েছেন। আমি মনে করি এটার দিকে সরকার নজর দিলে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে অনেকটা সহজ হবে। আমাদের কলেজ থেকে আমরা সবসময় তাকে সহায়তা করবো।”
প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন বিনিয়োগের অভাবে এভাবেই অংকুরে বিনষ্ট হচ্ছে এসব তরুণ প্রতিভা। সরকারের উচিত এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে প্রযুক্তি খাতের সার্বিক উন্নয়ন করা।
স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধটি নির্দিষ্ট জেনেটিক মিউটেশন হচ্ছে প্রোস্টেট ক্যান্সারের কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে প্রতিকার হিসেবে সহায়তা...