বিশ্বে যত মহামারী রয়েছে তন্মধ্যে প্রতিষেধকহীন মরণব্যাধি এইডস (AIDS) যেনো সবচেয়ে ভয়াবহ আতঙ্কের নাম। এইডস হলো হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) যা মানবদেহের (CD4 কোষ/ T কোষ) ইমিউন সিস্টেমকে আক্রমণ করে এবং তা ধ্বংস করে দেয়।
আপনারা কি জানেন, এইডস (AIDS) ভাইরাসের উৎপত্তি সর্বপ্রথম কোথা থেকে হয়েছিল? অধিকাংশই মনে করেন আফ্রিকায় কোন এক বানর/ শিম্পাঞ্জি সঙ্গে যৌন মিলনের মাধ্যমে সর্বপ্রথম এ ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে। আবার অনেকের ধারণা, এ ভাইরাস ইচ্ছাকৃতভাবে মানব শরীরে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে সফল হবার জন্য ছড়ানো হয়েছিল, তবে এ ধারণা কোনটিই সঠিক নয়। ঠিক কি কারণে এ ভাইরাস সর্বপ্রথম মানবদেহে প্রবেশ করে চলুন জেনে আসা যাক।

মানবদেহে সর্বপ্রথম এইচআইভি ভাইরাসের উৎপত্তি :
১৯৯৯ সালে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে, আফ্রিকায় কোন এক শিম্পাঞ্জি থেকে এইচআইভি ভাইরাস উদ্ভূত হয় তবে তা যৌনমিলনের ফলে না বরং শিম্পাঞ্জি শিকার করার সময় সংক্রমিত শিম্পাঞ্জির রক্তের সংস্পর্শে আসার পর এই ভাইরাসটি মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে। শিম্পাঞ্জির দেহে যে ভাইরাসটি ছিলো তার নাম SIVcpz (সিমিয়ান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস) যা অনেকটা এইচআইভি ভাইরাসের মতন ছিলো। SIVcpz এর বাহক রেড-ক্যাপড ম্যাঙ্গাবে ও গ্রেটার স্পট নৌজড এই ২ প্রজাতির বানর শিকার করার পর/ খাওয়ার পর তাদের রক্ত শিকারীদের পূর্বের কোনো কাটা বা ক্ষতস্থানে লেগে যায় ফলে এই ভাইরাস সর্বপ্রথম মানব দেহে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে ১৯২০ সালে আফ্রিকার গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো এবং বৃহত্তম শহর কিনশাসা থেকে বিভিন্ন রুট (রাস্তা, রেলপথ এবং নদী) বরাবর অভিবাসী আগমণ এবং যৌন ব্যবসার মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।

১৯৬০-এর দশকে, এইচআইভি আফ্রিকা থেকে হাইতি এবং ক্যারিবিয়ানে ছড়িয়ে পড়ে যখন হাইতিয়ান বাণিজ্যিকরা দেশে ফিরে আসেন। এরপর ভাইরাসটি ক্যারিবিয়ান থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে ১৯৭০ সালের দিকে এবং তারপর দশকে সান ফ্রান্সিসকোতে বিস্তার লাভ করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্নভাবে ভ্রমণের মধ্য দিয়ে ভাইরাসটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে ও এ ভাইরাস জনসাধারণের নজরে আসে নি।
পরবর্তীতে যখন ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে এ ভাইরাস বিস্তার লাভ করে তখন সিডিসি (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) ‘এইডস‘ শব্দটি প্রথমবারের মতো রোগটি বর্ণনা করতে ব্যবহার করে।
+1
1
+1
1
+1
1
+1
4
+1
3
+1
6
+1
3