Fibonacci Series day 23 November
মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য লুকিয়ে আছে Fibonacci Series এ, এই বিস্ময়কর গনিতের সিরিজটিকে ঈশ্বরের হাতের ছাপ [Finger Print of God] হিসেবে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞানে।
০, ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪, ৫৫, ৮৯, ১৪৪, ২৩৩, ৩৭৭…… এই যে সংখ্যাগুলো, এদেরকে বলা হয় ফিবোনাক্কি সংখ্যা। অর্থাৎ, আগের সংখ্যার সাথে পরের সংখ্যাটা যোগ করলেই আরেকটি ফিবোনাক্কি সংখ্যা পাওয়া যায়। এভাবেই Fibonacci সিরিজ অগ্রসর হয় ইনফিনিটি নাম্বারের দিকে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সব ফুল এই নিয়ম মেনে চলে।
ফিবোনাক্কি সিরিজের আবিষ্কারক Leonardo Fibonacci এর নামানুসারেই এই সিরিজের নাম রাখা হয়েছে। ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে খরগোশের প্রজননে তিনি সর্বপ্রথম এই ধারার অস্তিত্ব দেখতে পান। অর্থাৎ দুটি খরগোশ থেকে যদি প্রজনন হয়, আর একটা খরগোশও না মরে, তাহলে যদি ১০ মাস পর ৫৫ টা খরগোশ হয় ১১ মাস পর হবে ৮৯ টা, ১২ মাস পর হবে ১৪৪ টা।
আপনি কখনো কি চিন্তা করেছেন?
আকাশে কোনো পাখির ঝাকে কতগুলো পাখি উড়ে বেড়ায়?পাখিরা যখন দলবেঁধে আকাশে ওড়ে, গণণা করে দেখবেন। প্রতি দলে হয় ১৩ টা নাহয় ২১ টা নাহয় ৩৪ টা! অর্থাৎ ফিবোনাক্কি সংখ্যানুযায়ী এরা দলে বিভক্ত থাকে।
যদি শিকারীরা কোনো একটা পাখিকে মেরে ফেলে, এরা দল ভেঙ্গে আবার ফিবোনাক্কি সংখ্যানুযায়ী দলবদ্ধ হয়।
কিংবা কোন মাছের ঝাকে কতসংখ্যক মাছ থাকে?
কিংবা সুর্যমুখী ফুলের পাপড়ির সংখ্যা কত?
মৌমাছির ঝাঁকে মৌমাছির সংখ্যা কতো?
কখনো কি চিন্তা করেছেন?
এই মহাবিশ্বের প্রতিটি সৃষ্টি কিভাবে একটি সুনির্দিষ্ট সিকোয়েন্স মেনে চলে?
আপাতদৃষ্টিতে এই প্রশ্নগুলোকে হাস্যকর মনে হতে পারে,কারন এই সংখ্যা গুলো আদৌ গণনা করা কি সম্ভব? আর এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, হ্যা, সম্ভব। আর উত্তরটি হলো গনিতের এই বিস্ময়কর সিরিজটি, যাকে বলা হয়, ফিবোনাক্কি সিরিজ।
প্রতিটি ফুলের পাপড়ি, পাখির ঝাক, গাছের পাতার সংখ্যা, এই সব কিছুর সংখ্যা হলো ফিবোনাক্কি সিরিজের সিকোয়েন্স এর অন্তর্গত একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা।
ফিবোনাক্কির সংখ্যাগুলো নিয়ে পাশাপাশি বর্গ আঁকুন। অর্থাৎ প্রথমটা দুই সেমি হলে পরেরটা তিন পরেরটা পাঁচ। এরপর এদের স্পর্শক আঁকলে দেখা যাবে, এটা হাতির শুঁড়ের মতো হয়। বহু প্রাণীর লেজ এরকম বাঁকানো থাকে।
এখানেই শেষ না। পাশাপাশি দুটি ফিবোনাক্কি সংখ্যার যদি পরেরটাকে আগেরটা দিয়ে ভাগ করেন ১.৬১ হয়। অর্থাৎ ২৩৩ কে ১৪৪ দ্বারা কিংবা ৩৭৭ কে ২৩৩ দ্বারা ভাগ করলে ১.৬১ পাওয়া যাবে। একে বলে গোল্ডেন রেশিও। মানবদেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গে এই গোল্ডেন নাম্বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। একটা অঙ্গের দৈর্ঘ্যকে ১.৬১ দ্বারা গুণ করলে আরেকটা অঙ্গের দৈর্ঘ্যের সমান হয়।
পিরামিড সহ আরো সব প্রাচীন নিদর্শন এর কাঠামোর ক্ষেত্রেও দেখা যায় ফিবোনাক্কি সিরিজের অস্তিত্ব। বর্তমানে মিউজিকে এর বহুল ব্যাবহার দেখা যায়। বড় বড় ব্যান্ড দলগুলো বিভিন্ন মিউজিকে ফিবোনাচ্চির ছন্দ ব্যাবহার করেছে। এ মিউজিকগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
মহাবিশ্বের প্রতিটি জায়গায় এই সিরিজ বিদ্যমান।