“Early to bed, early to rise. Makes a man healthy, wealthy and wise” এই বাক্যটি আমরা ছোটকালে সকলেই পড়েছি, তবে বর্তমান সময়ে তরুণ তরুণীদের মধ্য একটি অভ্যাস খুব বেশি লক্ষ্য করা যায়, তা হলো রাতে দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা। ERJ Open Research এর এক গবেষণায় পাওয়া যায়, যে সকল তরুণ তরুণীরা রাতে দ্রুত ঘুমাতে যায় এবং খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে তাদের তুলনায় যেসকল তরুণ তরুণীরা রাতে দেরি করে ঘুমাতে যায় দিনে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে, তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অ্যাজমা এবং অ্যালার্জির ঝুঁকিতে থাকে।
আমাদের প্রত্যেকের দেহে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ সম্পাদনের চাহিদা অনুসারে একটি জৈবিক ঘড়ি রয়েছে, যার আরেক নাম বায়োলজিকাল ক্লক। অ্যাজমার উপসর্গ সমূহের সাথে মানবদেহের বায়োলজিকাল ক্লকের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে তবে এই প্রথম গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সময় ঘুমানোর প্রভাবে তরুণ তরুণীদের দেহে অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। গবেষকরা তাদের এই গবেষনার নতুন এই অধ্যায়ে বলেছেন আমাদের ঘুমের সাথে শ্বাসযন্ত্র ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
গবেষণার অধীনে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টা এর পালমোনারি বিভাগের ডাঃ শুভব্রত মৈত্র। তিনি বলেন “অ্যাজমা এবং অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব শিশু কিশোরদের মধ্যে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। আমরা জানি এর কিছু কারণ পরিবেশ দূষণ এবং তামাকজাত দ্রব্য সেবন। তবে আমরা আমাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি আরও কিছু কারণ বের করার জন্যে। ঘুম এবং মেলাটোনিন নামক স্লিপ হরমোন অ্যাজমার উপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই আমরা কিছু কিশোর কিশোরীদের ঘুমের সময়ের উপর গবেষণা করে দেখতে চাই তাদের ঘুমের সময় এবং তাদের অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়া কতটা সম্পর্কিত”।
উক্ত গবেষণার অন্তর্ভুক্ত ছিলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ১৩ থেকে ১৪ বছর বয়সী ১,৬৮৪ কিশোর কিশোরী, যাদের মধ্যে অ্যাজমা এবং অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে। তাদের সকলকে অ্যাজমা এবং অ্যালার্জির উপসর্গ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়েছে। এছাড়াও তাদের থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে তারা সন্ধ্যা এবং রাতের কোন সময়ে অধিক দুর্বল অনুভব করে, তারা কোন সময়ে ঘুমাতে যায় এবং কোন সময়ে ঘুম থেকে ওঠে ইত্যাদি।
গবেষকরা তাদের উপসর্গগুলোকে তাদের ঘুমের সময়ের সাথে মিলিয়ে দেখে এবং অন্যান্য প্রাথমিক কারণগুলোর সাথে তুলনা করে, যেমন- তাদের পরিবারে ধূমপায়ী সদস্যের উপস্থিতি। গবেষণার মাধ্যমে তারা জানালেন রাতে দেরি করে ঘুমানো এবং দিনে দেরি করে ঘুম ঠেকে ওঠা কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ-তরুণীরা অ্যাজমা এবং অ্যালার্জি তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে।
এই প্রথম ভিন্ন আঙ্গিকের গবেষণাটি করা হয়েছে। তবে আমরা সকলেই জানি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী। তাই আমরা সব সময় চেষ্টা করবো এটিকে অভ্যাসে পরিণত করতে।
শামস ফারাবি/ নিজস্ব প্রতিবেদক