আপনি কি জানেন? অ্যাপোলো ১১ রকেটটির পৃথিবী অবতরণের ২০ সেকেন্ড পরেই জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছিল।
স্পেসশিপে অনেক অসুবিধার মধ্যে অন্যতম হলো জ্বালানি সমস্যা। কিন্তু এ সমস্যা সমাধান হয়েছে-পানি থেকে বাষ্পের রুপান্তরে শক্তি সংগ্রহ করা। স্পেসশিপে প্রথমবারের মতো জ্বালানি হিসেবে বাষ্প ব্যবহার করা হচ্ছে। মানুষের মহাকাশে যাত্রার অর্ধশতক পর এবারই স্টিম ব্যবহার করে স্পেসশিপ চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা(UCF) হানি বী রোবটিকসের(honeybee robotics) সাথে যৌথভাবে এটি তৈরি করেছে। হানি বী মূলত ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত খনন ও মহাকাশের প্রযুক্তিগত একটি কোম্পানি।
এ স্পেসশিপটি মূলত পানি সংগ্রহ করে বাষ্পে পরিণত করে(এমনকি পৃথিবীর বাইরেও),অতএব জ্বালানির উৎস যদি নিশ্চিত করি,তাহলে এটি মহাকাশ ভ্রমণ করে বিভিন্ন প্ল্যানেটে যেতে সক্ষম। অবশ্য এটাও সঠিক যে প্রতিটা গ্রহের বা উপগ্রহের মধ্যে দূরত্ব কিন্তু কম ন্য।কিন্তু মহাকাশ থেকেই যদি শক্তি পাওয়া যায়,তাহলে শক্তির অবিরত উৎস নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
পানির মাধ্যমে জ্বালানির অফুরন্ত উৎস পাওয়া সম্ভব। মূলত খননের মাধ্যমে তা পানি সংগ্রহ করতে পারবে,তাকে সে বাষ্পে পরিণত করে এবং তার বাষ্পচালিত ইঞ্জিন দ্বারা অন্য গ্রহে যেতে পারবে। স্পেসশিপটি জ্বালানির উৎস পেতে পানি পাওয়া যায় এমন গ্রহাণুতে থামবে। শক্তি সঞ্চয় করে তা আশেপাশের গ্রহকে বিশ্লেষণ করতে পারবে।
অতএব,গ্রহকে জানা যাবে আরো বেশি,একটা স্পেসশিপই কয়েকটা প্ল্যানেট ঘুরে আসবে!
‘আমরা এমন যেকোন কিছুর উপরই ব্যবহার করতে পারি,যার গ্র্যাভিটি কম এবং পানির ভালো উৎস ভালো,যেমন প্লুটো, চাঁদ,অন্যান্য গ্রহের উপগ্রহ(টাইটান,ইউরোপা ইত্যাদি)’,বললেন ফিল মেটগার(Phill Metzger),ইউসিএফের অন্যতম মহাকাশ বিজ্ঞানী এবং বাষ্পের এ ধারণার জন্য তাঁর অবদান অনেক বেশি। তিনি বলেছেন এমন স্পেসশিপ যদি নিজ থেকেই জ্বালানি সরবরাহ করতে পারে,তাহলে ‘আজীবন’ তা মহাকাশে ভ্রমণ করতে সক্ষম।
মেটগার ও তাঁর সহকারীরা এ যানকে ‘ওয়াইন’ নাম দিয়েছেন(WINE=World Is Not Enough)। কিছুদিন আগেই এর একটা প্রোটোটাইপকে কৃত্রিম মহাকাশের পরিবেশে নিজের প্রথম মিশন দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করেছে।কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে খননের মাধ্যমে পানি নেয়,পানিকে বাষ্পে পরিণত করে তাকেই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেছে।
হয়তো প্রথমবার শুনলে মরিচা ধরা,সাধারণ কোনো যন্ত্র মনে হলেও বিজ্ঞানীরা বলেছেন,এটি তৈরি করা মোটেও সহজ ছিল না,উলটো যা ধারণা করা হয় তার চেয়ে এর গঠন অনেক জটিল। এর প্রোটোটাইপকে সঠিকভাবে কাজ করাতে মেটগার প্রায় ৩ বছর কঠোর পরিশ্রম করেছে। কেননা এ যন্ত্রকে ভিন্ন ভিন্ন অভিকর্ষজ বলে কাজ করতে হবে।
এটি অবশ্যই মহাকাশ বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে,কেননা আগে যেখানে শক্তির সীমাবদ্ধতা মুখ্য ছিল,এখন এ সীমাবদ্ধতা নেই,তাই কাজের ক্ষেত্র আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যাবে। কিন্তু এর পূর্বে অবশ্যই WINE কে আসল মহাকাশেও তার যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।
+1
+1
+1
+1
+1
+1
+1