একটি বিড়াল কি একই সময়ে জীবিত এবং মৃত থাকতে পারে?
“শ্রোডিঞ্জারের বিড়াল” অস্ট্রিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী এরভিন শ্রোডিঞ্জারের করা একটি Thought Experiment যা কোয়ান্টাম সুপারপজিশন সম্পর্কিত একটি প্যারাডক্স। Copenhagen interpretation এর সাথে দ্বিমত প্রকাশ করার জন্যই তিনি এই সমস্যা উত্থাপন করেছিলেন।১৯৩৫ সালে শ্রোডিঞ্জার একবার নিলস বোর কে বললেন, তরঙ্গসমীকরণ পদার্থবিদ্যায় সম্ভাবনা ঢুকিয়েছে। এটা ঠিক না। পদার্থবিদ্যা কেন সম্ভাবনার আওতায় কাজ করবে? আমি চেষ্টা করছি কোয়ান্টাম থিওরি ভুল প্রমান করব।বোর বিরক্ত হয়ে বললেন, আপনি নিজেই কোয়ান্টাম থিওরির জনকদের একজন। আপনি নিজের থিওরি ভুল প্রমান করবেন?-হ্যাঁ।-কিভাবে?-একটা
শ্রোডিঞ্জার একটি আবদ্ধ বাক্সের কল্পনা করেন যার ভিতরে একটি বিড়াল, কিছু তেজস্ক্রিয় পদার্থ, একটি তেজস্ক্রিয়তা ডিটেক্টর, একটি হাতুড়ি এবং একটি ফ্লাস্কে কিছু হাইড্রোসায়ানিক এসিড আছে। পুরো ব্যবস্থাটা এমনভাবে প্রোগ্রাম করা যে তেজস্ক্রিয় পদার্থ যখনি বিকিরণ নির্গত করবে তেজস্ক্রিয়তা ডিটেক্টর সেই বিকিরণ শনাক্ত করবে এবং এর সাথে সংযুক্ত হাতুড়িটি ফেলে দেবে যেটা এতক্ষণ ওঠানো ছিল, আর এই হাতুড়ি যেয়ে আবার এসিডের ফ্লাস্ককে ভেঙে ফেলবে। হাইড্রোসায়ানিক এসিড বা হাইড্রোজেন সায়ানাইড (HCN) একটি মারাত্মক বিষাক্ত পদার্থ; ফলে এটি সহজেই বিড়ালটিকে মেরে ফেলতে পারে। সুতরাং তেজস্ক্রিয় পদার্থ যদি বিকিরণ নির্গত করে তবে বিড়ালটির আর বাঁচার সুযোগ থাকবে না।
বাক্সটা বদ্ধ বলে এর ভিতর কি হচ্ছে তা আমরা জানি না। যদি তেজস্ক্রিয় পদার্থ বিকিরণ নির্গত করে তবে বিড়ালটি মরে যাবে আর যদি না করে তবে বিড়ালটি বেঁচে যাবে। বাক্সটা না খোলা পর্যন্ত আমরা কখনই জানতে পারব না বিড়ালটা বেঁচে আছে না মরে গেছে কারন আমরা জানতেই পারছি না তেজস্ক্রিয় পদার্থটি বিকিরণ নির্গত করছে কি না।তাই বদ্ধ অবস্থায় বিড়ালটা মরেও যেতে পারে আবার বেঁচেও থাকতে পারে অর্থাৎ বিড়ালটার মৃত থাকার সম্ভাবনা ১/২ ও বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও ১/২।