লাইব্রেরি বা গ্রন্থাগার হলো জ্ঞানের ভাণ্ডার। বলা হয় একটি জাতির লাইব্রেরি যত বেশি সমৃদ্ধ সেই জাতিও তত বেশি সমৃদ্ধ।আবার এমনও প্রবাদ রয়েছে, একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য আগে তার জ্ঞানের ভাণ্ডার লাইব্রেরি ধ্বংস করে দাও।অতি প্রাচীন সময় থেকেই লাইব্রেরির প্রতি রয়েছে আলাদা কদর।
লাইব্রেরি অব কংগ্রেস (এলওসি) হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ লাইব্রেরি।
এটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত। এটি দেশটির জাতীয় লাইব্রেরিও। একইসাথে এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরাতন ফেডারেল কালচারাল ইনস্টিটিউশন।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪৫০টিরও বেশি ভাষার রিসার্চ ম্যাটেরিয়াল এখানে রয়েছে। প্রতিবছর এখানে সংগৃহীত মোট বইয়ের দুই তৃতীয়াংশই ইংরেজি বাদে অন্যান্য ভাষার।
১৭৮৩ সালে জেমস মেডিসন সর্বপ্রথম কংগ্রেস লাইব্রেরি তৈরির প্রস্তাব দেন। যদিও ১৮০০ সালের ২৪ এপ্রিল লাইব্রেরি অব কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়।৫ হাজার ডলার মূল্যমানের ৭৪০টি বই ও ৩টি ম্যাপ কেনা হয় লাইব্রেরির জন্য।
১৮১৪ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অধিকাংশ সংগ্রহ ব্রিটিশরা ধ্বংশ করে দেয়।পরের বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসনের পুরো ব্যক্তিগত সংগ্রহ
(৬ হাজার ৪৮৭টি বই) কিনে নিয়ে লাইব্রেরিটি নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে।লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের প্রথম লাইব্রেরিয়ান হলেন জন জে বেকলি,
যাকে প্রতিদিন দুই ডলার বেতন দেয়া হতো।একইসাথে তিনি হাউজ অবরিপ্রেজেন্টেটিভ এর করণিক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন।
লাইব্রেরির সংগ্রহশালা সংরক্ষণের জন্য ওই সময় কপিরাইট আইন চালু করা হয়।
লাইব্রেরির জন্য নির্মাণ করা হয় স্থায়ী ভবন। নতুন রুম, গ্যালারি, সেলফসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের সংযোজনে লাইব্রেরিটি একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ ধারণ করে।
এরপর ১৯৩৯ সালে এখানে জন অ্যাডম নামে আরও একটি ভবন নির্মাণ করা হয়।
১৯৮০ সালে মোট ৩টি ভবন নিয়ে গড়ে ওঠে লাইব্রেরিটি।লাইব্রেরির ভবণ নির্মাণ কাজে ৪০ জন পেইন্টার এবং
ভাস্কর্য নিয়োজিত ছিলেন।লাইব্রেরির স্থপতি হলেন পেয়ারসন এবং ইউলসন।
লাইব্রেরি পরিচালনার খরচে টাকা জোগাড় করতে ট্রাস্টি ফান্ড গঠন করা হয়। এরপর আমেরিকার অনেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে ওই ফান্ডে টাকা জমা দেয়া শুরু করেন।
অনেকই দেন বিভিন্ন বই এবং পত্রপত্রিকা। এভাবে ধীরে ধীরে লাইব্রেরির সংগ্রহ বাড়তে থাকে। বর্তমানে এই লাইব্রেরির সংগ্রহে ৩২ মিলিয়নের অধিক ক্যাটালগড বই রয়েছে।
এছাড়া রয়েছে ৬১ মিলিয়ন পান্ডুলিপি, যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিরল বইয়ের সংগ্রহ। এখানে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১ মিলিয়ন প্রকাশনা, গত তিন শতকের প্রায় ১ মিলিয়ন পত্রিকা,৫ লাখ মাইক্রোফ্লিম রিল, ১ লাখ ২০ হাজারের অধিক কমিক বই, ৫.৩ মিলিয়ন ম্যাপ, ৬ মিলিয়ন মিউজিক, ৩ মিলিয়ন সাউন্ড রেকডিং, ১৪.৭ মিলিয়নের অধিক প্রিন্ট ও
ফটোগ্রাফিক ইমেজসহ নানা ধরণের জিনিষ। বর্তমানে লাইব্রেরি অব কংগ্রেস প্রিন্টেড বই পুস্তকের সংগ্রহের উপর বেশী গুরুত্ব প্রদান করে না।
লাইব্রেরি অব কংগ্রেস এখন একটি সম্পূর্ন ডিজিটাল লাইব্রেরি তাই বর্তমানে এই লাইব্রেরি ডিজিটাল সংগ্রহের উপর বেশী গুরুত্ব প্রদান করে থাকে।
+1
+1
+1
+1
1
+1
+1
+1