বর্তমান সময়ে প্রচন্ড গরমে, উত্তপ্ত রোদে প্রচন্ড পরিশ্রম, যানজট, লোডশেডিং নগর জীবনকে আরো অসহনীয় করে তোলছে।
এ সময়ে নানা ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যার সঙ্গে আমরা পরিচিত। এর মধ্যে ডায়রিয়া,
পানিশূন্যতা, পেট ব্যাথা, বিভিন্ন চর্মরোগ, টাইফয়েড উল্লেখযোগ্য। কিন্তু এসবের
বাইরেও কিছু স্বাস্থসমস্যা রয়েছে যার সঙ্গে আমরা অধিকাংশই পরিচিত নই। আজকে
এমন কিছু স্বাস্থসমস্যা নিয়ে আলোচনা করব।
হিট স্ট্রোক ( Heat Stroke)
কারনঃ হিট স্ট্রোক হয় সাধারনত প্রচন্ড গরমে মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রমের কারনে। অধিক
পরিশ্রমের ফলে যদি শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা ৪১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট হয়ে যায় তখন
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন অকার্যকর হয়ে পড়ে। শরীরের ভেতরের এ তাপমাত্রাকে বলা
হয় core temperature . শিশু এবং বৃদ্ধদের হিট স্ট্রোক এর প্রবনতা বেশি থাকে।
লক্ষনঃ হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়া, শরীরের জ্বর থাকা কিন্তু কোন ঘাম না থাকা। শারীরিক দুর্বলতা, খিঁচুনি, মাথাঘোরা, চোখে ঝাপসা দেখা, বিড়বিড় করতে করতে অচেতন হয়ে পড়া।
করনীয়ঃ আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে দ্রুত ঠান্ডা ছায়াযুক্ত কিংবা ফ্যানের নিচে নিয়ে আসতে হবে। শরীরের জামাকাপড় খুলে ঠান্ডা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে, মাংশপেশি ম্যাসেজ করতে হবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য খুব দ্রুত ডাক্তারের সরনাপন্ন
হতে হবে।
হিট ক্রাম্পস ( Heat Cramps)
কারনঃ গরমে মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে শরীর থেকে লবণ ও পানি বের হয়ে যায়। এর ফলে যেসব মাংশপেশীগুলো বেশি ব্যবহৃত হয় সেগুলোতে প্রচন্ড ব্যথাসহ খিঁচুনি হয়। এ অবস্থাকে হিট ক্রাম্পস বলে।
করণীয়ঃ আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ঠান্ডা স্থানে নিয়ে গিয়ে খাবার স্যালাইন খেতে দিতে হবে। প্রয়োজনে শিরাপথে স্যালাইনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের সরনাপন্ন হতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে ৩ দিন টানা বিশ্রামে থাকতে হবে।
হিট সিনকোপ ( Heat Syncope)
কারনঃ অতি গরমে অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে শরীরের রক্তচাপ হঠাৎ কমে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়াকে হিট সিনকোপ বলা হয়।
করনীয়ঃ আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ঠান্ডা স্থানে নিয়ে গিয়ে স্যালাইন ও তরল যে কোন ঠান্ডা খাবার খেতে দিতে হবে এবং ডাক্তারের সরনাপন্ন হতে হবে।
হিট এক্সহাশন ( Heat Exhaustion )
কারনঃ অতিরিক্ত গরমে দীর্ঘসময় ধরে মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম করার ফলে এবং যথেষ্ট পরিমাণ লবণ ও পানি গ্রহণ না করার ফলে শরীর পানিশূন্য হয়ে যায় এবং নেতিয়ে পড়ে। এ অবস্থাকে বলা হয় হিট এক্সহাশন।
লক্ষণঃ শারীরিক দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, অতিরিক্ত পিপাসা, মাংশপেশিতে ব্যাথা মানসিক অবস্থা লোপ পাওয়া, এলোমেলো কথা বলা ইত্যাদি।
করণীয়ঃ আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলো-বাতাসযুক্ত ঠান্ডা যায়গায় নিয়ে যেতে হবে। প্রচুর পানি, স্যালাইন ও তরল খাবার খাওয়াতে হবে। ডাক্তারের সরনাপন্ন হতে হবে।
গরমে বেশিরভাগই শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই গরমে নিয়মিত প্রচুর পরিমানে
পানি পান করতে হবে এবং পরিবার বন্ধুবান্ধবদেরও প্রচুর পানি পানে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
কখনই মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম করা যাবেনা এবং কাজ থাকলে পরস্পরকে সাহায্য করে
কাজ সমপন্ন করতে হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ন কথা হলো উপরের সব তথ্যই প্রাথমিক
অবস্থায় করণীয়। যে কোন স্বাস্থসমস্যায় একজন চিকিৎসকের বিকল্প নেই।
শেয়ার করে জানিয়ে দাও তোমার বন্ধুদের। 😀
Join science bee official group Science Bee Family
+1
+1
+1
+1
+1
1
+1
1
+1
1