সেলফি তুলতে আমাদের সবারই ভালো লাগে, আর নিজের ছবিতে নানারকম ইফেক্ট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আপলোড করা তো বর্তমানের ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্লে স্টোরে এমন অনেক অ্যাপস রয়েছে যেগুলো দিয়ে সেলফি তোলা সহ ইডিটিং এর কাজ করা যায়। আমরা এসব অ্যাপ খুশিতে ব্যাবহার করছি ঠিকই কিন্তু আমরা কি জানি যে সেলফির নামে অনেক অ্যাপ সেলফির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করছে?
আপনি যদি গত এক সপ্তাহে ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্রাউজ করে থাকেন তাহলে নিশ্চই FaceApp নামক অ্যাপটির কথা শুনে থাকবেন। এই অ্যাপটি দিয়ে তরুন-তরুনীদের ছবিগুলোকে একটি বিশেষ ফিল্টারের মাধ্যমে বৃদ্ধের ছবিতে পরিণত করা যায়।
গত সপ্তাহখানেক ধরে ফেসবুক, টুইটার এবং ইন্সটাগ্রামে এমনসব ছবির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। ফেসঅ্যাপের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্যা অনুসারে বর্তমানে ৮০ কোটি ব্যাবহারকারী ফেসঅ্যাপটি ব্যবহার করে। এতো বেশি ভাইরাল হওয়ার কারণে এই অ্যাপটিকে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
২০১৭ সালে রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গের “ওয়্যারলেস ল্যাব” নামক একটি প্রতিষ্ঠান এই অ্যাপটি তৈরি করে। এই অ্যপটি ব্যবহারের শর্তাবলী হিসেবে বলা হয়েছে যে এটি আপনার যেকোনো ছবি নিজের অঅিভুক্ত করে নিতে পারে। আর এটিই হলো আতঙ্কের বিষয়।
অন্যান্য সব ছবি সংক্রান্ত অ্যাপের মতো ফেসঅ্যাপও প্রথমবার ওপেন করার সময় আপনার ফোনের সব ছবির অ্যাক্সেস চেয়ে নেয় যাতে অ্যাপটি সেগুলো রুপান্তর(Modify) করতে পারে। কিন্তু অ্যাপসের সন্দেহমূলক শর্তাবলী এবং অ্যাপ নির্মাকারী দেশ নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রেসগুলোতে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়েছে।
কী হবে যদি ৫ সেকেন্ডের জন্য পৃথিবীতে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়? |
ফোন এরিনার এক বিশেষজ্ঞ পিটার কস্তাদিনোভ বলছেন, আমরা ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা থেকে হয়তো কোন শিক্ষা নিইনি। যদি তাই হতো তাহলে এভাবে নিজেদের তথ্য জেনে বুঝে তৃতীয় কোন পক্ষের হাতে তুলে দিতাম না।
The New York Post নামক একটি জার্নাল তাদের একটি শিরোনামে বলেছে যে, “রাশিয়ানরা আপনার সকল ছবি নিজের অধিকারে করে নিচ্ছে।” আরেকটি জার্নালের সাথে সাক্ষাতকারে ফেসঅ্যাপ নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানটি জানায় তারা ছবি আপলোডের সময় হতে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই সেগুলো মুছে ফেলে।
তবু সন্দেহ থেকেই যায় তারা সেগুলো আদো মুছে ফেলে কিনা। একই ধরনের কথা বলেছিল ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা। প্রতিষ্ঠানটি ফেইসবুকে তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ হিসেবে কাজ করে প্রায় আট কোটি মানুষের তথ্য হাতিয়ে নেয় এবং পরে সেগুলো ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় কাজে লাগায়।
আপনার ফোনের অন্যান্য অ্যাপগুলোও এমন কাজ করতে পারে। তাই সচেতন হোন। এখনই চেক করে নিন আপনি সব বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানকে আপনার ছবির অ্যাকসেস দিচ্ছেন তো?