‘আমি সত্যিই অনেক আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম এটা জেনে যে, আমার চাকরির আবেদনটি মানুষের পরিবর্তে কম্পিউটার দ্বারা যাচাই বাছাই করা হবে।’
‘আমি একজন পেশাজীবী সাংবাদিক, সম্প্রতি একটি চাকরির জন্য আবেদন করি। নিয়োগের প্রাথমিক ধাপে আমাকে বাসা থেকেই কিছু অনলাইন গেইম খেলার জন্য বলা হলো।’
‘এদের মধ্যে ছিলো কত দ্রুত বক্সে থাকা ডট গোনা যায়, একটি বেলুন ফেটে যাওয়ার আগেই বায়ু প্রবাহ বন্ধ করার মতো গেইম। গেইমের শেষে AI দ্বারা যাচাই বাছাই করে একজনের ব্যক্তিত্ব কেমন তা নির্ণয় করে ফলাফল দেয়া হয়। এতে মানুষের কোন ভূমিকা থাকে না।’
‘আমার মনে প্রশ্ন জাগে, এটা কি ঠিক? কম্পিউটার (AI) দ্বারা যাচাই করে একটি চাকরি-র আবেদন (CV) গ্রহণ বা বাতিল করা?’
গত দশক থেকেই চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে Artificial Intelligence (AI) এর ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানের মতো এতো স্বাধীনতা AI কে দেয়া হয় নি। বিশেষকরে এই করোনা পরিস্থিতিতে এর ব্যবহার আরো বেড়ে গিয়েছে।
McDonald’s, JP Morgan, PWC, Pymetrics এর মতো অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ধাপে AI ব্যাবহার করে থাকে। এতে পাস করলেই কেবল একজন মানব নিয়োগকর্তার কাছে ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য বিবেচিত হয়।
Pymetrics এর প্রতিষ্ঠাতা Frida Polli জানান যে, AI দ্বারা চাকরি-র জন্য জমা সিভি (CV) গুলো বাছাই তাদের অনেক সময় বাঁচায়। তিনি এও দাবি করেন যে, এই প্রক্রিয়া অনেক উপকারী।
AI recruitment সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি (HireVue) এর এক কর্মকর্তা বলেন যে, প্রাথমিক ইন্টারভিউ এ প্রার্থীর উত্তরের ভিডিও এবং অডিও রেকর্ড করে তা টেক্সট এ রূপান্তর করে AI দ্বারা তাদের কম্পিউটারে সংরক্ষিত সম্ভাব্য জবাবের তালিকার সাথে মিলিয়ে যাচাই করে দেখা হয়। এর ফলে এটা কোনো অংশেই মানব নিয়োগকর্তার থেকে আলাদা কিছু নয়।
তারা আরো বলেন যে, সেপ্টেম্বর ২০১৯ এর মধ্যে তারা ১২০ লক্ষ লোকের ইন্টারভিউ নেন। যার ২০% AI ব্যবহার করে নেয়া হয় বাকি ৮০% মানব নিয়োগকর্তার দ্বারা নেয়া হয়। এবং এই দুই ক্ষেত্রে কোন বৈষম্যই পরিলক্ষিত হয় নি।
তারা আরো বলেন যে, সেপ্টেম্বর ২০১৯ এর মধ্যে তারা ১২০ লক্ষ লোকের ইন্টারভিউ নেন। যার ২০% AI ব্যবহার করে নেয়া হয় বাকি ৮০% মানব নিয়োগকর্তার দ্বারা নেয়া হয়। এবং এই দুই ক্ষেত্রে কোন বৈষম্যই পরিলক্ষিত হয় নি।
Amazon ও মনে করে যে AI ভিত্তিক এই নিয়োগ ব্যবস্থায় কোন সমস্যা নেই। যদিও ২০১৮ সালে তাদের AI নিয়োগ ব্যবস্থায়-ই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তাদের AI এর ধারনা ছিল কেবল পুরুষ প্রার্থীদেরই প্রযুক্তি নিয়ে বেশি ধারণা থাকবে এবং তারা বেশি সময় দিতে পারবে। বিধায় AI মহিলা প্রার্থীদের আবেদন বাতিল করে দিচ্ছিলো।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর Sandra Wachter বলেন, “এটা খুবই দুঃখজনক যে মানুষ বলে AI নিয়োগ ব্যবস্থায় শুধু সুবিধা, কোনো অসুবিধা নেই।” “প্রাযুক্তিক সকল আবিষ্কারের ই কিছু অসুবিধা থাকবেই।”
কিন্তু আমার চাকরির ইন্টারভিউ এর কি হলো? আমিতো কোন মানব নিয়োগকর্তার সাথে ইন্টারভিউ দেয়ার সুযোগ পাই নি। হয়তো তারা আজও ওই পদের জন্য লোক খুঁজছে!
জোবায়ের হোসেন সামস/ নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতিবেদনটি বিবিসি-র বিজনেস রিপোর্টার আন্দ্রে মুরাদের ভাষ্যে লেখা।
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি
+1
+1
4
+1
2
+1
+1
1
+1
+1