আপনার পরিচিত সবচাইতে হাল্কা বস্তুটি কি?
নিশ্চয়ই আপনার চারপাশে ভেসে বেড়ানো বাতাস? পদার্থবিদ্যার নিয়ম অনুযায়ী সবচাইতে হাল্কা হবার কথা যে কোন বায়বীয় পদার্থের, তারপর কোন তরলের এবং সবশেষে কঠিন বস্তুর। কিন্তু বাতাসের চাইতে হাল্কা যদি হয় একটি কঠিন পদার্থ, তাহলে কেমন হয়?
এমন বস্তুটির নাম কার্বন অ্যারোজেল।
অ্যারোজেল একটা সিন্থেটিক বস্তু যার ৯৯ ভাগ ই বাতাস। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে হালকা কঠিন পদার্থ। এর ঘনত্ব মাত্র ০.১৬ মিলিগ্রাম/কিউবিক সেন্টিমিটার। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্য যে বাতাসের চাইতেও এই ঘনত্ব কম। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এটি নিজের ওজনের ৯০০ গুন বেশি ভার বহন করতে পারে।
এটি তৈরির পদ্ধতিটি বেশ মজাদার। জেলি তৈরির সাথে এর বেশ মিল অাছে। জেলি তৈরি করা হয় কঠিন পদার্থের গুঁড়োর সাথে তরলের একটি চমৎকার কাঠামো তৈরির মাধ্যমে। এই পদ্ধতিতে তরলকে প্রতিস্থাপন করে কঠিন এবং গ্যাসের একটি মিশ্রণ তৈরি করলে তা থেকেই উৎপত্তি হয় অ্যারোজেলের।
জেল মিশ্রনে থাকা তরলটিকে সাধারনত supercritical drying নামের পদ্ধতিতে খুব সাবধানে শুকিয়ে ফেলা হয় যাতে একে ঘিরে থাকা solid পরমাণুগুলোর কাঠামোটি ভেঙ্গে না পড়ে। তরল শুকিয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই এর জায়গায় ঢুকে পড়ে গ্যাস এবং তৈরি হয়ে যায় অ্যারোজেল।
এক টুকরো অ্যারোজেল স্পর্শ করলে মনে হবে এটি শোলা বা স্টাইরোফোম। এ যাবৎ উৎপাদিত অ্যারোজেলগুলো বেশরভাগই দেখতে এক টুকরো মেঘ বা ধোঁয়ার মত। এ কারনে একে ডাকা হয় জমাট ধোঁয়া, কঠিন ধোঁয়া, কঠিন বাতাস বা নীল ধোঁয়া বলে।
অ্যারোজেল সাধারনত তৈরি করা হয় জটিল জৈবিক পলিমার দিয়ে। প্রথম অ্যারোজেল অবশ্য তৈরি হয় সিলিকা জেল দিয়ে। কিন্তু সম্প্রতি গ্রাফাইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কালো রঙের সবচেয়ে হাল্কা অ্যারোজেলটি। এর গঠন অনেকটাই স্পঞ্জের মত। এটি তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে এক পরমানু সমান পাতলা কার্বনের পর্দা এবং কার্বনের ফাইবার। এর আগেও এমন একটি হাল্কা পদার্থ তৈরি হয়েছিল পাতলা ধাতব জালিকার মত, কিন্তু কার্বন অ্যারোজেল তার থেকেও হাল্কা।
এটি পানি দূষণকারী তেল শোষণে এবং অন্যান্য দূষক পদার্থ শোষণে সক্ষম। এটি উদ্ভাবন করেন স্যামুয়েল স্টিফেন কিস্টলার।
Join us Science Bee Family
+1
5
+1
5
+1
1
+1
9
+1
1
+1
2
+1
3