৫৫৫ দশমিক ৫৫ ক্যারেটের বিরল এক ব্ল্যাক ডায়মন্ডের প্রদর্শনী চলছে দুবাইতে। ‘মহাকাশ থেকে আসা’- “দ্য এনিগমা” নামের ৫৫৫.৫৫ ক্যারেটের এই কালো হীরাটি “বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্ল্যাক ডায়মন্ড”। এই আকৃতির প্রাকৃতিক কালো হীরা পৃথিবীতে খুবই বিরল। ব্ল্যাক ডায়মন্ডটি “কার্বোনাডো ডায়মন্ড” নামেও পরিচিত। ৫৫৫.৫৫ ক্যারেটের পাশাপাশি এটিতে ঠিক ৫৫টি দিক বা মুখ অর্থাৎ তল রয়েছে।
“কার্বোনাডো” নামে পরিচিত কালো হীরাটি খুবই বিরল প্রকৃতির। প্রাকৃতিকভাবে এটি শুধু ব্রাজিল ও মধ্য আফ্রিকার কিছু অংশে পাওয়া যায়। কার্বন আইসোটোপ ও হাইড্রোজেন উপাদানের কারণে এর উৎপত্তি মহাকাশে বলে ধারণা করা হয়।
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৃহত্তম শহর ও বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র দুবাইয়ে প্রদর্শিত হচ্ছে এই বিশেষ হীরাটি।সোমবার (১৭ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে ৫৫৫ দশমিক ৫৫ ক্যারেটের এই হীরাটির প্রদর্শনী। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের মতে বিশ্বের বৃহত্তম কালো হীরার পাশাপাশি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যত কাটা হীরা আছে, সেসবের মধ্যেও বৃহত্তম ‘দ্য এনিগমা’।
দুবাইতে হীরাটি প্রদর্শনের পর আগামী ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনে অনলাইন নিলাম শুরু হওয়ার আগে ‘দ্য এনিগমা’ লস অ্যাঞ্জেলসে এবং লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। নিলামে এর দাম অন্তত “৫০ লাখ (ব্রিটিশ পাউন্ড) বা ৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা”-এর বেশি উঠবে বলে বিশ্বাস নিলাম সংস্থা সোথেবি’র।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক বহুজাতিক নিলাম সংস্থা সোথবি’স অকশন হাউসের রত্ন ও অলঙ্কার বিশেষজ্ঞ সোফি স্টিভেন্স এপি-কে জানিয়েছেন, ‘এই হীরাটির জন্ম এই পৃথিবীতে নয়, আজ থেকে ২৬০ কোটি বছর আগে মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে এসে পড়া কোনো একটি উল্কাপিণ্ড বা হীরকপূর্ণ কোনো গ্রহাণু থেকে কালের বিবর্তনে উদ্ভব হয়েছে দ্য এনিগমা।’
সোফি স্টিভেন্স আরোও বলেন, ‘পৃথিবীতে এমনিতেই কালো হীরা দুর্লভ। তার ওপর এই আকৃতির কালো হীরা খুবই খুবই বিরল। কোত্থেকে – কবে এটি পৃথিবীতে এসেছে তা এখনও রহস্যপূর্ণ। তবে এই হীরার জন্ম যে পৃথিবীতে নয় – এটা নিশ্চিত। এটি একদমই ভিন্ন ধরনের হীরা।’ বিশেষজ্ঞ স্টিভেন্স বিরল কালো এই হীরকখণ্ডকে ‘মহাজাগতিক আশ্চর্য’ বলে অভিহিত করেছেন।
সোথেবি’স অকশন হাউজ বলছে, হীরাটি গত ২০ বছরের মধ্যে কখনই জনসম্মুখে আনেননি এর অজ্ঞাত মালিক। দুবাইয়ে এক ব্যক্তির সংগ্রহে ২০ বছর ছিল এই হীরাটি। তবে ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্ত বস্তুগুলোর মধ্যে একটি হওয়া সত্ত্বেও হীরকখণ্ডটিকে নিপুণ দক্ষতায় কেটে ৫৫-মুখী আকার দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আকৃতি মধ্যপ্রাচ্যের শক্তি ও সুরক্ষার প্রতীক ‘হামসা’ থেকে অনুপ্রাণিত। ‘হাতের তালু আকৃতির’ ওই প্রতীকের সঙ্গে ‘পাঁচ সংখ্যাটির’ বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।
সোথেবি’র আরেক বিশেষজ্ঞ নিকিতা বিনানি হীরাটিকে ‘একটি সত্যিকারের প্রাকৃতিক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। নিলাম সংস্থাটি জানিয়েছে, এই আকৃতির প্রাকৃতিক কালো হীরা পৃথিবীতে খুবই বিরল। তারা এর পেমেন্ট হিসেবে ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণ করবেন।
সোথেবি’র বিবৃত অনুসারে, “The Key 10138” নামে একটি ১০১ ক্যারেটের হীরা যা গত বছর নিলামে তোলা হয়েছিল এবং এটি এখনো পর্যন্ত ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে কেনা সবচেয়ে ব্যয়বহুল হীরা বলে মনে করা হচ্ছে।
মোঃ আজহার সিদ্দিক মেহরাজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স, সিএনএন, বিজনেস ইনসাইডার
+1
+1
+1
1
+1
2
+1
4
+1
2
+1
1