বিমানের দিকে লেজার লাইট নিক্ষেপ করা কেন অপরাধ? লন্ডনের হিথরো বিমান বন্দর থেকে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছিলো বিমানটি। কেবল উড্ডয়ন করেছে কিন্তু হঠাৎ কোথা থেকে সহকারী পাইলটের চোখে এসে পড়লো লেজার বিমের রশ্মি। তার চোখে যন্ত্রণার কারণে সাথে সাথেই বিমানটি আবার অবতরণ করতে বাধ্য হলেন পাইলট।(তথ্যসূত্র)
দীর্ঘদিন থেকেই ঢাকা এবং চট্টগ্রামেও এ রকম ঘটনা ঘটছে। নিচ থেকে কেউ লেজার দিয়ে লাইট শো করছেন। তাক করছেন বিমান বরাবর। লেজার বিম করার কারণে বিমান পরিচালনা করায় বিঘ্ন ঘটছে। বিশেষ করে পাইলটের চোখে আলোক রশ্মি পড়ার কারণে এমনটি ঘটছে। যার কারণে সরকারি সংস্থা থেকে জনগণকে এই কাজ করতে মানা করে এসএমএস পাঠাতেও দেখা গেছে।
পশ্চিমা দেশগুলোতে লেজার তাক নিষিদ্ধ এবং এর জন্য জেলও হতে পারে। আকাশে লেজার লাইট মারা হলে সেটি অনেক উচ্চতা পর্যন্ত যাবে না এমন ধারণা ভুল,আসলে লেজার লাইটটি আকাশের যে উচ্চতায় বিমান উড়ে সে উচ্চতা পর্যন্ত যেতে সক্ষম৷ একটা নির্দিষ্ট উচ্চতায় গিয়ে রশ্মি থেমে যায় এ ধারণা ভুল।
এর ফলে বিমানের পাইটলের চোখ পর্যন্ত খুব সহজেই পৌছতে পারে এবং বিমান চালানোর সময় বিরক্ত বোধ করতে পারেন। ফলে প্লেন সংক্রান্ত বিভিন্ন দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। সাধারণত রশ্মির একটি বৈশিষ্ট্য হলো রশ্মি যতদূর পর্যন্ত যায় তার বিস্তৃতি ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই বিমানে দিকে তাক করে লেজার নিক্ষেপের পরিমাণ ভয়াবহ হতে পারে।
লেজার আলো প্রায়ই এত বেশি ছড়ানো হয় যে পাইলট তা এড়াতে পারে না, পাইলটের চোখে লেজারের আলো ঝলকানি সৃষ্টি করে (আলোর ভেদ করে দেখতে অক্ষমতা)। ফলে ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং করতে হয়। অনেক সময় ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং, জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া, হঠাৎ করে টেকঅফ এবং জরুরী কৌশলের মতো অবস্থা পাইলট এবং প্লেনের জন্য ভালো নয়, বড় ধরণের দূর্ঘটনার স্বীকার হতে পারে যাত্রীবাহী প্লেনটি।
লেজার রশ্মি প্রতিসরণের কারণে পাইলটের দৃষ্টিসীমা অত্যধিক কমে যাবার ফলে তারা দেখতে পান না। লেজার বা উত্তেজিত বিকিরণের সাহায্যে আলোক বিবর্ধন (লাইট এমপ্লিকেশন বাই স্টিমুলেটেড ইমিশন রেডিয়েশন) অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে বৈমানিকরা মনে করছেন।
#লেজার_রশ্মি_নিক্ষেপের_শাস্তি :
বাংলাদেশের সংবিধানে ২০১৭ এর ধারা ২৬ অনুসারে বিমানকে লক্ষ্য করে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ (বাংলাদেশ সংবিধান)। এছাড়া আমেরিকার ফেডারেল কোর্টের নিয়ম অনুসারে প্রয়োজন ছাড়া বিমানের উদ্দেশ্যে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।
২০০৮ সালের অক্টোবরে ক্যালিফোর্নিয়ার একজন ব্যক্তিকে ৩ মিলিওয়াটের একটি লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করার কারণে ২ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। ২০১৩ সালে ১ মিলিওয়াটের বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন লেজার রশ্মির ব্যবহারকে নিউজিল্যান্ডে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।(পড়ুন)
আনিকা আনতারা প্রধান | Team Science Bee