চাকা আবিষ্কারের পর থেকে মানব সভ্যতা পেয়েছে নতুন রূপ। যাতায়াত ব্যবস্থায় উন্নতির সাথে সাথে মানুষের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করা বেড়েছে। গড়ে উঠেছে নতুন নতুন নগরায়ন। কৃষি থেকে শুরু করে ব্যবসা সবকিছুর তাগিদেই মানুষ তার নিজের এলাকা ছেড়ে পাড়ি দিয়েছে অন্য এলাকায় কখনো বা অন্য দেশে। সেই সুবাদে বেড়েছে যানবাহনের পরিমাণও। বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে মানুষের পরিমাণ যত বেড়েছে সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশে এই চিত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করে ট্রাফিক জ্যাম এর মধ্য দিয়ে।
বিশেষ করে প্রধান ও বিভাগীয় শহরগুলোতে এই যানবাহনের চাপ এতই বেশি হয়ে ওঠে যে ট্রাফিক জ্যাম যেন শহরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রতিদিন যানজটের মুখোমুখি হওয়া মানুষের জন্য যেভাবে শারীরিক ক্ষতির কারণ একইভাবে মানসিক অসুস্থতার জন্যেও দায়ী।
২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যিপজেটের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়ার শহরগুলোর মধ্যে ঢাকাতে বাস করা সবচাইতে স্ট্রেসফুল বা মানসিক চাপের ব্যাপার। এর একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল ঢাকার যানজট।
২০২২ সালে বিবিসি বাংলার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ট্রাফিক জামের ফলে স্বাস্থ্য সমস্যার বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে Bangladesh Lung Foundation এর যুগ্ম সম্পাদক, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর এর বক্তব্যটি তুলে ধরা হয়। তার মতে ঢাকার যানজট বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ।
তিনি বলেন,
“যানবাহন যখন এক জায়গায় অনেক সময় ধরে আটকে থাকে তখন দূষিত ধোঁয়া ঐ জায়গাকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে, কারণ আমরা যানজটে গাড়ির ইঞ্জিন চালু রাখি। আপনার নিজের গাড়ি এবং আপনার আশপাশের সবার গাড়ির ধোঁয়া তখন আপনার কাছে আসছে। গাড়ি চলমান অবস্থায় ধোঁয়া বাতাসে উড়ে যায়। এজন্য ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকাকালীন একজন মানুষ দূষণে বেশি এক্সপোজড হচ্ছেন। দূষণের কারণে ফুসফুসের অসুখসহ নানারকম অসুখ হচ্ছে।”
সে সম্পর্কে ধারণা দিয়ে তিনি বলছেন, গাড়ির ধোঁয়ায় রয়েছে সীসা। এছাড়া গাড়ি এক জায়গায় আটকে থাকার কারণে যে ধোঁয়া নির্গত হয় সেটিকে বলা হয় ইন-কমপ্লিট কমবাস্টন। এতে কার্বন মনোক্সাইড, ডাইঅক্সিন, নাইট্রিক অক্সাইড, সালফার অক্সাইড এরকম নানা গ্যাস বাতাসের সাথে মানুষের ফুসফুসে চলে যাচ্ছে।
ঢাকার যানবাহনের কালো ধোঁয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লক হেভেন বিশ্ববিদ্যায়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মাদ খালেকুজ্জামান একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা চালান। তিনি দেখান যানবাহনের এই কালো ধোঁয়া মানুষের স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি সাধন করে। তাছাড়া তিনি জানান ঢাকার বাতাসে সীসা, পারদ, কপার, ক্রোমিয়ামের মতো পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। এসকল পদার্থের বড় একটি অংশ যানবাহনের ধোঁয়ার মাধ্যমে বাতাসে ছড়ায়।
সীসা শিশুদের IQ কমা এবং তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ করার পেছনে দায়ী। ব্রাজিলের একদল গবেষকের মতে, পারদ অনিদ্রা (Insomnia) এর পেছনে দায়ী। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুম নিয়ে নানা সমস্যায় ভোগে। তাছাড়া মস্তিষ্কে কপারের পরিমাণের তারতম্যের ফলে Alzheimer’s disease (মস্তিস্কের এক ধরনের রোগ যার ফলে রোগী কিছু মনে রাখতে পারে না) এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও দীর্ঘক্ষণ ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকার ফলে মানুষের নানান শারীরিক ব্যাধি দেখা দিচ্ছে।
২০২০ সালে দ্যা ডেইলি প্রকাশিত অনুসারে হাঁড় ও পেশির বিভিন্ন সমস্যা যেমন কাঁধে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, পিঠে ব্যথার মতো সমস্যা গুলোকে ট্র্যাফিক জ্যামের প্রভাব হিসেবে তুলে ধরা হয়।
মানসিক স্বাস্থ্যের বিবেচনা করলেও ট্রাফিক জ্যামের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। টাইমস ম্যাগাজিনে যুক্তরাজ্যের অফিস অফ ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের একটি রিপোর্ট তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয় যাদের কর্মক্ষেত্রে আসার পথে ৩০ মিনিটের বেশি সময় ব্যয় করতে হয় তাদের পথে তুলনামূলক কম সময় ব্যয় করা মানুষের তুলনায় দুশ্চিন্তা এবং উদ্বেগের পরিমাণ বেশি থাকে। একই রিপোর্টে দেখা গেছে প্রতিদিন যাতায়াতে দীর্ঘ সময় কাটানো মানুষের জীবনে, সুখ ও তৃপ্তির পরিমাণ যারা যাত্রায় কম সময় কাটান তাদের তুলনায় কমে যায়।
“সায়েন্স বী” সম্প্রতি খুব ছোট পরিসরে একটি অনলাইন জরিপ করেছে যাতে জানতে চাওয়া হয় ঢাকার জনগণের মানসিক স্বাস্থ্যে ট্রাফিক জ্যাম কেমন ট্রাফিক জ্যাম প্রভাব ফেলছে। এই সমীক্ষার প্রশ্নগুলো ছিল খুবই মৌলিক এবং অল্প কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে জানতে চাওয়া হয় যে ঢাকাবাসী কী মনে করেন যে যানজট তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে?
সমীক্ষা থেকে খুঁজে পাওয়া যায় যে ১০০% অংশগ্রহণকারীর মতেই ঢাকার ট্রাফিক তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। সমীক্ষাতে অংশ নেয়া অনেকেই তাদের হতাশা প্রকাশ করেছেন, নিজেদের কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতা ব্যাখা করেছেন।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের তাদের কাজের উপর ভিত্তি করে ভাগ করে দেখা যায় যে অংশগ্রহণকারীদের ৭৯.২% হলেন ছাত্র। তাদের মধ্যে ১০.৪% পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করছেন এবং বাকি ১০.৪৫% মানুষ চাকরিজীবী। বয়স অনুসারে ভাগ করলে দেখা যায় ৫.২% মানুষ ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী, অংশগ্রহণকারীদের ৭১. ৮% ১৯ থেকে ২৪ বছর বয়সী, ১৫.৬ % মানুষ ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী এবং ৫.২% অংশগ্রহণকারী ৩১ থেকে ৩৫ বছর বয়সী। বাকিদের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ এবং ৫০ ঊর্ধ্ব দলে আছেন যথাক্রমে ৫.২% এবং ১.৩%।
এই অনুপাতটি স্পষ্টভাবে বলে যে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই তরুণ প্রজন্মের যারা এখনো তাদের শিক্ষাজীবনে আছেন এবং দ্বিতীয় বড় একটি দল বর্তমানে চাকরিজীবী। এই মানুষগুলোর বেশিরভাগকেই ক্লাসে যোগ দিতে বা তাদের কর্মস্থলে যেতে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় এবং প্রিয় এই ঢাকা শহরের ঘাতক যানজট এড়াতে তাদের কারোরই কোনো কিছু করার থাকে না।
“সায়েন্স বী”র সমীক্ষা অনুযায়ী তাদের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায় , “আপনি ট্রাফিকের জন্য প্রতিদিন কত ঘন্টা হারাচ্ছেন?”
এই প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগই বলেছেন দৈনিক ২ থেকে ৩ ঘন্টা। দুর্ভাগ্যবশত অংশগ্রহণকারীদের আরো একটি বড় দল বলেন গড়ে তাদের দৈনিক ৪ ঘন্টা বা এর চাইতেও বেশি সময় ট্রাফিক জ্যামের পেছনে নষ্ট হচ্ছে।
ট্র্যাফিক জ্যাম তাদের স্বাভাবিক জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করছে?
এমন প্রশ্নের উত্তরে, সবচেয়ে সাধারণ উত্তর ছিল জ্যামের কারণে তাদের মেজাজ খিটখিটে হচ্ছে, তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন, উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে, শারীরিকভাবে দুর্বলতা বোধ করছেন ইত্যাদি। অনেকেই তাদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, “প্রচন্ড ক্লান্ত আর অবসাদগ্রস্ত হয়ে পরেছি”। অন্যরা জানান, “যখন ট্রাফিক জ্যামের কারণে ক্লান্ত লাগে এবং লেট হয় তখন টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে সমস্যায় পড়ে যাই এবং কোন একটা নির্দিষ্ট কাজের প্রতি যে পরিমাণ ডেডিকেশন এবং অনুপ্রেরণা থাকে তা হারিয়ে ফেলি”।
তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যাখ্যা করে জানা যায় তাদের বেশিরভাগই উদ্বেগে (anxiety) ভুগছেন এবং সময়মতো নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য অনেক চাপের (stress) মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থেকে ক্লান্তিতে অনেকেই তাদের দৈনন্দিন সময়সূচী পরিচালনা করতে সমস্যায় পড়েছেন। ফলস্বরূপ, তারা তাদের কাজের প্রডাক্টিভিটি এবং নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দেয়ার প্রেরণা হারাচ্ছেন।
ক্লাস এবং কর্মক্ষেত্রে দেরীতে পৌঁছানো অনেকের জন্য একটি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ফলস্বরূপ ভোগ করতে হচ্ছে শিক্ষক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তিরস্কার বা কটূক্তি। এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে না পারার অসহায়ত্বে অনেকেই তাদের ক্ষোভ এবং হতাশাকে রাগ হিসেবে কাছের মানুষদের উপর তা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী দুঃখ প্রকাশ করেন এই বলে যে এ সমস্ত কিছুর প্রভাবে প্রিয়জনদের সাথে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়নের সৃষ্টি হচ্ছে।
সায়েন্স বী সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কে সর্বশেষ যে প্রশ্নটি করা হয় তা হলো, “আপনার কি ট্রাফিক জ্যামের সাথে জড়িত কোনো বড় দূর্ঘটনার স্মৃতি/ অভিজ্ঞতা আছে?”
এই প্রশ্নের উত্তরে পাওয়া বক্তব্য গুলোকে পর্যবেক্ষণ করে ফলাফল এ দেখা যায় যে সাধারণত দূর্ঘটনাগুলো ঘটে থাকে rush hour এ যেমন অফিস শুরু বা শেষের সময়টাতে। এ সময় গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর তাড়া থেকে অনেক বাইক চালক উল্টোদিক থেকে আসার কারণে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। এছাড়াও দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অনেকে উল্লেখ করেছেন বেপরোয়া গতিতে আসা বাস, ট্রাফিক নিয়মের লঙ্ঘন ও রিকশাগুলোর হঠাৎ লেন পরিবর্তন।
ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করাদের উত্তর বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায় দুর্ঘটনার কারণে অনেকেই তাদের ব্যাক্তিগত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজে সময় মতো পৌঁছাতে পারেন নি। কেউ নিজে গুরুতর ব্যাথা পেয়েছেন বা পরিবারের কাছের মানুষদেরকে শারীরিক ভাবে আহত হতে দেখেছেন।
অনেকের ক্ষেত্রে এই অভিজ্ঞতা তাদের মনে বাজে ভাবে দাগ কাঁটে যা তারা সহজে মেনে নিতে পারেন না। এই পূর্ব বিরূপ অভিজ্ঞতা তাদের মনে ট্রমা হিসেবে আজ ও রয়ে গেছ, যার ফলস্বরূপ অনেকেই হতাশায় ভুগছেন। অনেকের ক্ষেত্রে এই স্মৃতি system এর প্রতি রাগ এবং ক্ষোভ উদ্রেক তৈরি করছে। বারবার একই পরিস্থিতির শিকার হওয়া আর এর থেকে পরিত্রাণ না পেতে পেতে অধিকাংশের মনে যাতায়াতের চিন্তার প্রতিই বিরক্তি এসে গেছে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য, ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার্থে ও সকলের অনুভূতির প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করে “সায়েন্স বী” উপরিউক্ত প্রশ্নের উত্তর সরাসরি প্রকাশ করছে না।
কিছু অংশগ্রহণকারী আরো জানান যে জ্যামে বসে থেকে থেকে তারা ব্যাক্তিগতভাবে আগের থেকে অনেক বেশি অলস হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ আবার জ্যামের সময়টুকু কাটাতে তাদের মোবাইল ফোনের আশ্রয় নিচ্ছেন। প্রতিদিন একটা দীর্ঘ সময় এই ফোনের পেছনে কাটাতে গিয়ে তারা ধীরে ধীরে মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্ত হয়ে পরছেন।
এ তো ছিলো সায়েন্স বী’র সমীক্ষা থেকে পাওয়া ফলাফল। বাড়ির কাছাকাছি, ব্যাঙ্গালোরে, “মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যানজটের প্রভাব” শীর্ষক একটি তুলনামূলক সমান্তরাল সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষাটি পরিচালনা করেন গবেষক এস ভেঙ্কটেশ এবং জি পুষ্প। বিষণ্নতা, উদ্বেগ এবং চাপের মূল্যায়নকারী এই সমীক্ষায় ৪২ টি প্রশ্নের বিশাল প্রশ্নাবলী দেয়া হয়েছিল অংশগ্রহণকারী সকলকে। যাদের মধ্যে ২০-৬০ বছর বয়সী ৩০ জন পুরুষ সিটি বাস ড্রাইভার কে experimental group এবং ৩০ জন পুরুষ বাস কন্ডাক্টর কে control group হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
উদ্দেশ্য ছিল শহরের বাস চালকদের মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং হতাশার মানসিক অবস্থা পরিমাপ করা এবং একই ধরনের কাজের পরিবেশের বাস কন্ডাক্টরদের সাথে তাদের ফলাফলের তুলনা করা। ফলাফলে অতি স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে যে শহরের বাস চালকরা একই পরিবেশে কর্মরত বাস কন্ডাক্টরদের তুলনায় বেশি চাপে থাকেন। ব্যাঙ্গালোরের আনুমানিক জনসংখ্যা ১০ মিলিয়ন, অন্যদিকে ঢাকায় ১৯ মিলিয়ন। তাই এবারে যারা ঢাকা শহরের রাস্তায় গাড়ি চালান তাদের মানসিক অবস্থা কল্পনা করে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
“সায়েন্স বী” থেকে বাংলাদেশের অন্যতম ঘনবসতীর শহর ঢাকা এবং পার্শবর্তী দেশ ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর জনগণের উপর হওয়া এই দুই সমীক্ষার ফলাফল থেকে অন্তত এটুকু প্রতীয়মান যে ট্রাফিক জ্যাম জনগণের শারিরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর দীর্ঘমেয়াদী একটা কুপ্রভাব ফেলছে। ট্রাফিক জ্যামের কারণে হওয়া বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, শ্বাসকষ্ট- এগুলোর কথা প্রায়শই আলোচনা করা হলেও যেন অবহেলায় পরে থাকে মানসিক সমস্যা গুলো।
তাই এবারে “সায়েন্স বী” সমীক্ষায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ট্রাফিক জ্যাম এর প্রভাবকে। ছোট্ট এই সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে জনগণের মনের আক্ষেপ। সমীক্ষার অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই জানিয়েছেন তাদের নানান মানসিক সমস্যা যেমন anxiety, stress, frustration, depression ইত্যাদির কথা যা আসলে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কথা।
শাহলীন রাহনুমা, জুম্মান আল সিয়াম, আতিক হাসান রাহাত / যৌথ প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ টাইম.কম, দ্য সোয়েডেল, সাইকোলগস, ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন