বেশ কয়েকবছর আগেও হেপাটাইটিস বি এর টিকার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে বলা হতো, “হেপাটাইটিস বি একটি প্রাণঘাতী রোগ, এটি হলে মৃত্যু অনিবার্য“। এখনও তাই। তবে, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিনিয়ত উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। এমন অনেক রোগ রয়েছে যার সমাধান এখনো চিকিৎসাবিজ্ঞান দিতে পারেনি। আবার হয়তো কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পেরেছে, কিন্তু একজন রোগীকে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ করে তুলতে তা যথেষ্ট নয়। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিভিন্ন রোগের বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করতে। এমনই বহু রোগের তালিকার মধ্যে একটি রোগ হচ্ছে ভাইরাল হেপাটাইটিস B এবং D।
হেপাটাইটিস এর কিছু প্রকারভেদ রয়েছে। এগুলো হলো-হেপাটাইটিস A (HAV), হেপাটাইটিস B (HBV), হেপাটাইটিস C (HCV), হেপাটাইটিস D (HDV), হেপাটাইটিস E (HEV)।
- HAV সাধারণত এন্টারো ভাইরাস গ্রুপ,
- HBV হেপাডিএনএ ভাইরাস গ্রুপ,
- HCV ফ্ল্যাভিভাইরাস গ্রুপ,
- HEV ক্যালিসি ভাইরাস গ্রুপ এবং
- HDV মূলত একজন HBV দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তিকেই সংক্রমিত করে।
HAV এবং HEV মূলত দূষিত খাবার এবং পানির মাধ্যমে ছড়ায়। HBV মূলত হেপাটাইটিস এ আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন কিংবা তার রক্তগ্রহণের মাধ্যমেও সংক্রমিত হয়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের সময় মা থেকে শিশুর কাছেও যেতে পারে। HCV রক্তের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়, তাছাড়াও একাধিক ব্যক্তি একই সূঁচ দ্বারা ড্রাগ গ্রহণের মাধ্যমেও সংক্রমণ ঘটে থাকে। তবে সব থেকে ভিন্ন হলো HDV। যেহেতু হেপাটাইটিস D ভাইরাসের বেঁচে থাকার জন্য হেপাটাইটিস B ভাইরাসের প্রয়োজন হয়, তাই যেসকল ব্যক্তি HBV দ্বারা আক্রান্ত তারাই আবার HDV দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। এছাড়াও অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের মাধ্যমে Alcoholic hepatitis এবং দীর্ঘমেয়াদি বিরল Autoimmune hepatitis রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে HBV এর ভ্যাক্সিন গ্রহণের মাধ্যমেই যখন HBV ও HDV কে প্রতিরোধ করা যাচ্ছেই তখন আবার কেনো এ বিষয় নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা?
ইতোমধ্যেই বিজ্ঞানীরা হেপাটাইটিস সি এর কার্যকর ঔষধ আবিষ্কার করেছেন বিস্তারিত পড়ুন এখানে:
মরণব্যাধি হেপাটাইটিস সি এর কার্যকর ঔষধ উদ্ভাবন করলেন বিজ্ঞানীরা!
- প্রথমত, একটি DNA-ভিত্তিক ভ্যাক্সিন দেওয়া হবে যা উভয় ভাইরাসের বিরুদ্ধে এন্টিবডি এবং টি-সেল নিরপেক্ষ করার কাজ সক্রিয় করে।
- পরবর্তীতে ইমিউন সিস্টেমের সক্রিয়তাকে শক্তিশালী করার জন্য বারবার প্রোটিন-ভিত্তিক ভ্যাক্সিনের ব্যবহার করা হবে।
“এটি একটি প্রতিশ্রুতিশীল ফল। গবেষণাটি দেখায় যে এটি একটি কার্যকরী পথ এবং মানুষের জন্য এই চিকিৎসা পদ্ধতিটিকে আরো উন্নত করতে আমাদের উৎসাহিত করে। আমরা এখন প্রোটিন-ভিত্তিক অংশটিকে অপটিমাইজ করছি যাতে ফার্মাসিউটিক্যাল মানে বৃহৎ পরিসরে উৎপাদণ সক্ষম করে তোলা যায় এবং পরবর্তীতে মানব শরীরে অধ্যয়নের জন্য আবেদন করার আগে আমাদের শেষ সুরক্ষা অধ্যয়নটি করা হবে।”