আপনি হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করছেন এবং বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব হচ্ছে- এটা কি হার্ট অ্যাটাক নাকি প্যানিক অ্যাটাক?
হার্ট অ্যাটাক এবং প্যানিক অ্যাটাক এর মধ্যে পার্থক্য করা জটিল হতে পারে কারণ উভয় অবস্থার লক্ষণ কম-বেশি একইরকম। অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা হল প্যানিক অ্যাটাকের প্রধান কারণ, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণও হতে পারে। এসব জটিল সমস্যার কারণে প্যানিক অ্যাটাকে ভোগা বেশিরভাগ লোককে জরুরি অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদি আমরা এই দুটির মধ্যে পার্থক্য জানতে পারি তাহলে কিছুটা জীবন রক্ষা হতে পারে এবং জরুরী অবস্থায় প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করাও আরো সহজ হবে।
হার্ট অ্যাটাক কী?
হার্ট অ্যাটাক এক নীরব ঘাতক। যে কেউ যেকোনো সময় এর শিকার হতে পারেন। শরীরচর্চা না করা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ ও জীবনযাপনে অনিয়ম হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। এর লক্ষণগুলো জানা থাকলে একটি জীবন হয়তো বাঁচিয়ে দেওয়া সম্ভব। বিশ্বে এক তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যুর জন্যে দায়ী হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ।
এগুলো পড়ুন গেমিং PC কনফিগারেশন: কেমন CPU চাই? আর্টেমিস: চাঁদে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে নাসার ১৮ নভোচারী |
হৃদপিন্ডের করোনারি ধমনী কোন কারণে বন্ধ হয়ে গেলে হৃদপেশীর রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে যে রোগ সৃষ্টি হয় তাই হার্ট অ্যাটাক। এটি হৃদপিন্ডের পেশিগুলিতে রক্ত এবং অক্সিজেনের প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করে। হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলো হলো:
১. বুকে ব্যথা
২. মাথা ঘোরা বা ঝিম ঝিম করা
৩. শ্বাসকষ্ট
৪. বুক ধড়ফড় করা বা বিনা কারণে অস্থির লাগা
৫. বমি বমি ভাব
৬. চোয়াল ও মেরুদন্ডে ব্যথা
প্যানিক অ্যাটাক কী?
অতিরিক্ত মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং তীব্র ভয় যা কয়েক মিনিটের মধ্যে শীর্ষে পৌঁছে যায়, তা প্যানিক অ্যাটাকের মূল কারণ। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্যানিক অ্যাটাকের কোনো সুস্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায়নি। প্যানিক অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
১. বুক ব্যথা
২. মৃত্যুর ভয়
৩. মাথা ঘোরা এবং
৪. বুকে চাপ অনুভব হওয়া

দুটির মধ্যে পার্থক্য কি?
যদিও উভয় অবস্থায় লক্ষণ গুলি একই, তবে তাদের ফলাফল একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। প্যানিক অ্যাটাকে কেউ হয়তো একটু দমবন্ধ বোধ করতে পারে, তবে হার্ট অ্যাটাক জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ।
হার্ট অ্যাটাক ও প্যানিক অ্যাটাকের মধ্যে সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
বুকের ব্যথা: ব্যথার বৈশিষ্ট্যগুলো উভয় ক্ষেত্রেই প্রায় পৃথক। প্যানিক অ্যাটাকে বুকের মাঝখানে তীক্ষ্ণ এবং ছুরিকাঘাতের মত ব্যথা অনুভব হবে কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে বুকের ব্যথা মাঝ থেকে শুরু হয় এবং বাহু, চোয়াল বা কাঁধের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় শারীরিক পরিশ্রমের কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
প্যানিক অ্যাটাক ১০-১৫মিনিটের জন্য স্থায়ী হয়। অন্যদিকে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলি সময়ের সাথে সাথে তীব্র হয়। যদিও হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ করেই হয় কিন্তু এটি দীর্ঘদিন ধরে করোনারি ধমনীতে অ্যাথেরোসক্লেরোটিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি চলমান রোগ প্রক্রিয়ারই বহিঃপ্রকাশ। তাই মারাত্মক এই রোগটিকে কখনো কখনো নিঃশব্দ আততায়ী বলা হয়।
সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেওয়া
আপনি যদি আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত না হন তাই অবিলম্বে চিকিৎসা নেওয়া ভালো। যদি আপনি হঠাৎ বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন এবং দুই- তিন মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় এবং ব্যথা যদি বাহু এবং চোয়ালের দিকে ছড়িয়ে পড়ে তবে খুব দ্রুত আপনাকে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে, তা না হলে আপনার মৃত্যু ঝুঁকি বাড়তে পারে।
মো: মিরাজুল ইসলাম/নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্র: Medical News Today ,BIDMC