বহু শতাব্দী ধরে, দার্শনিক এবং ধর্মতত্ত্ববিদরা মনে করছেন যে আমাদের স্বাধীন ইচ্ছা এবং চেতনার উপর নির্ভর করে সভ্যতা গুলো টিকে আছে। যদি মানুষ এই স্বাধীন ইচ্ছা এবং চেতনার উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে তাহলে এর ফলাফল হতে পারে ভয়াবহ। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের নীতিশাস্ত্র অনুসারে অর্থ্যাৎ আমরা স্বাধীন ভাবে, সঠিক এবং ভুলের মধ্যকার পার্থক্য ধরতে পারি। বর্তমানে, স্বাধীন ইচ্ছা; বিভিন্ন নীতিমালা তৈরি থেকে শুরু করে আমেরিকার রাজনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রয়োগ হয়ে আসছে।
তবে, কোনো কাজ করার স্বাধীন সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাধীন ইচ্ছা বলে ধরে নেই। আসলে, যখন ইচ্ছাটি আমাদের মস্তিষ্ক দ্বারা সম্মতি লাভ করে কার্যকর হবে তখন-ই কেবল আমরা কাজটি করতে পারব। আমরা ইচ্ছা-স্বাধীন কি না এই ব্যাপারে অনেক মতবাদ রয়েছে।
১৯৬০ দশকের পর থেকেই মানুষ তাদের স্বাধীনইচ্ছায় জীবন যাপন করছে বলে স্নায়ুতত্তবিদরা মনে করেন। তবে এই ব্যাপারে ১৯৮৩ সালের আগ পর্যন্ত কোনো শক্ত প্রমান স্নায়ুতত্তবিদদের কাছে ছিলো না।
তাই গবেষকরা এর জন্য কিছু অংশগ্রহণকারীদের সচেতন ভাবে যেকোনো একটি আঙ্গুল সরানোর কথা বলেন এবং তারা এই অবস্থায় ব্রেইনের কার্যক্রম ইসিজি এর মাধ্যমে রেকর্ড করেন।
আশ্চর্যজনক ভাবে, আঙ্গুল সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ব্রেইনে কিছু ধূসর পদার্থ আলোকিত হয়, অর্থ্যাৎ আঙ্গুল সরানের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই কিছু নোগিন (noggins) নামক পদার্থ গুলো এ ব্যাপারে ব্রেইনকে সচেতন করে দেয়।
বছরের পর বছর বিষয়টি গবেষণা করে দেখা হয়েছে তবে ইসিজি এর স্পাইক গুলোর প্রকৃত কারণ এখনও অস্পষ্ট।
চ্যাপমন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গণ্য নিউরোলজিস্ট উরি মোয়াজের মতো আধুনিক তদন্তকারীরা পরিবর্তে ডেটা বা উপাত্ত দিয়ে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। যদি কোনো সুপারকম্পিউটার আমাদের জীবন সম্পর্কে সব জানে অর্থাৎ জীবনের লক্ষ্য থেকে শুরু করে আমাদের প্রিয় আইসক্রিম পর্যন্ত এবং আমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে কি প্রভাব ফেলতে পারে তা জানে, তবে একটি মেশিন বুঝতে পারে যে আমরা ওই মুহূর্তে কি বেছে নিতে পারি। তবে সুপারকম্পিউটার গুলো যা ধারণা করছে মানুষের তার চাইতে আলাদা কিছু করার সম্ভাবনা আছে কিনা এ নিয়ে মোয়াজ ও অন্যান্যরা গবেষণা করছেন।
বিষয়টি পপুলার সাইন্সের “ফল ২০২০, মিস্টিরিয়াস ইস্যু” তে লেখা হয়। তবে কথা হলো, আসলেই কি স্বাধীনইচ্ছা এর অস্তিত্ব রয়েছে নাকি সব আমাদের ব্রেইনের প্রভাব। আপনার কি মনে হয়?
আল-আমিন / নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ popsci.com