ভয়ংকর দাঁত আর আক্রমণাত্মক স্বভাবের জন্য সাগরের অন্যতম প্রভাবশালী প্রাণি হাঙ্গর। তবে অবাক করা বিষয়, সেই হাঙ্গর-ই পারতপক্ষে এড়িয়ে চলতে চায় বোটলনোস ডলফিনের এলাকা। অদ্ভুত শোনাচ্ছে বুঝি?
আমরা তো বরাবরই ডলফিনকে নম্র, নিরহংকার আর বেশ মিষ্টি একটা স্তন্যপায়ী হিসেবেই জানি। আমাদের খেলা দেখিয়ে বিনোদন দিতেও দেখা যায় ডলফিনকে। তবে এই ডলফিন প্রয়োজনের খাতিরে প্রবল আক্রমণাত্মকও হতে পারে। সাগরে দলবদ্ধ থাকতে পছন্দ করা ডলফিনের অনেক প্রজাতিকে দমানো অন্যদের জন্য মোটেও সহজ না। প্রতিরক্ষা, আক্রমণ আর শিকার ধরায় বোটলনোস ডলফিনের বুদ্ধিমত্তা তো প্রাণিকূলের মধ্যেই বেশ সমাদৃত।
ধূর্ত আর একতাবদ্ধ বোটলনোস ডলফিনের একটা দল একাকি হাঙ্গরের জীবননাশের কারণ হতে পারে। তবে তার মানে এই না, ডলফিন দলবদ্ধ থাকে বলেই তাদের সাথে একাকি হাঙ্গর পেরে ওঠে না। মুখোমুখি লড়াইয়েও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটা হাঙ্গর পরাস্ত হবে একটা বোটলনোস ডলফিনের কাছে। কেন এমনটা হয়? এর কারণ অবশ্যই এর বিশেষ দৈহিক গঠন।
প্রথমেই আসবে ডলফিনের লেজের গঠন। ডলফিনের থাকা হরিজন্টালি ওরিয়েন্টেড লেজ তাকে বাড়তি নমনীয়তা দেয়। সহজেই সে ক্ষীপ্র আর দ্রুতগতির হয়ে উঠতে পারে একারণে। বিপরীতে হাঙ্গরের ভার্টিকালি ওরিয়েন্টেড লেজ হওয়ায় ডলফিনের চেয়ে তুলনামূলক কম নমনীয়তা আর ক্ষীপ্রতা পায়। ডলফিনের আক্রমণ থেকে পালাতে কিংবা লড়াই করতে যা কিনা বড্ড অসুবিধার।
ডলফিনের গঠনগত আরেকটা সুবিধা হলে তার শক্তিশালী স্নাউটের (Snout) উপস্থিতি৷ স্নাউট হলো ডলফিনের মুখের দিকের প্রলম্বিত অংশটা। এই স্নাউট ডলফিনের আত্নরক্ষার অন্যতম ঢাল হিসেবে কাজ করে। শুধু কি তাই? হাঙ্গরের সাথে লড়াইয়ের অন্যতম অস্ত্র হিসেবেও কাজ করে এই স্নাউট। পর্যাপ্ত শক্তি আর ক্ষীপ্রতায় পেটের দিকে স্নাউট দিয়ে একটা আঘাতেই হাঙ্গরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বড়সড় ক্ষতি হয়ে যাবে। কাজেই পাড়ায় খবরদারি করা বড়ভাইদের মতো হাঙ্গর ভাই যদি ডলফিনের সাথে লাগতে আসে, রীতিমতো চ্যাং-দোলা হয়ে ফিরতে হবে। এমনকি এই আঘাত হয়ে যেতে পারে হাঙ্গরের শেষকৃত্যের-ই কারণ।
বোঝা গেল কেন সাগরে হাঙ্গরের ত্রাস ডলফিন? ঠিকঠাক পরিস্থিতি বুঝে পালালে তো বাঁচলো। কিন্তু যদি ‘লড়াই লড়াই লড়াই চায়, লড়াই করেই বাঁচতে চায়’ তাহলে ডলফিন-ও বুঝিয়ে দেবে, কেনো ডলফিনই সাগরের রাজা।
সূত্র: ল্যাবরুটস
সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পি/নিজস্ব প্রতিবেদক
+1
1
+1
+1
+1
3
+1
+1
+1
1