একটি নির্দিষ্ট প্রোটিনের উচ্চ রক্তমাত্রার উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতবাণী করতে পারবে যে, আঘাতজনিত মস্তিষ্কের নিরাময়ের সুযোগ আছে কি না! নিউরোফিলামেন্ট লাইট বা সংক্ষেপে এনএফএল (NFL) নামক প্রোটিনটি অ্যাক্সন, মস্তিষ্কের কোষের মধ্যে বার্তা প্রেরণকারী তন্ত্রকে কাঠামোগত সহায়তা দেয়। গবেষকরা সায়েন্স ট্রান্সলেশনাল মেডিসিনে রিপোর্ট করেন, রক্তে এনএফএল প্রোটিনের মাত্রা আঘাত পাওয়ার ২০ দিনের মধ্যে সাধারণ মাত্রার ১০ গুণ এবং এক বছর পরে স্বাভাবিকের উপরে থাকে।
আঘাতের পরে NFL নামক প্রোটিনটির রক্তে ঘনত্ব যত বেশি হবে ছয় থেকে ১২ মাস পরে TBI আক্রান্ত ব্যক্তিদের আঘাত ততই সাড়িয়ে তোলা কঠিন হবে। এই গবেষণাটি ইউরোপের আটটি ট্রমা সেন্টারে মধ্যম থেকে গুরুতর TBI- এর জন্য ১৯৭ জন মানুষের চিকিৎসার ফলাফল থেকে তৈরি করা হয়েছে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের নিউরোলজিস্ট নিল গ্রাহাম এবং তার সহকর্মীরা খুঁজে পেয়েছেন, ১৪৬ জন অংশগ্রহণকারীর মস্তিষ্ক স্ক্যান এর রিপোর্ট এ দেখা গিয়েছে যে তাদের সর্বোচ্চ এনএফএল প্রোটিনের ঘনত্ব ছয় মাস পরে মস্তিষ্কের সংকোচনের মাত্রা এবং আঘাতের ছয় থেকে বারো মাস পরে অ্যাক্সনের ক্ষতির পূর্বাভাস দিয়েছে। গবেষকেরা তখন একটি অন্যতম জিনিস পেয়ে যান, যা হচ্ছে রক্তের বায়োমার্কার।
এটি মস্তিষ্কের আঘাত সম্পর্কে পরোক্ষ ইঙ্গিত দেয়, প্রকৃতপক্ষে মস্তিষ্কে কী ঘটছে তা ব্যাখা করে। মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচারের জন্য গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৮ জনের ক্ষতিগ্রস্ত নিউরনের আশেপাশের তরলের নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। সেখানকার এনএফএল ঘনত্ব রক্তে এনএফএল ঘনত্বের সাথে সম্পর্কিত।
বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্ট মস্তিষ্কের আঘাতকে সারানোর জন্য টিবিআই ইনজুরির বায়োমার্কার এনএফএল খুঁজছেন। এক্ষেত্রে ওকনকো বলেছেন যে এই নতুন ফলাফলগুলো সেসব রোগীদের জন্য আশাব্যঞ্জক যাদের অ্যাক্সন আঘাতপ্রাপ্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত।
ওকনকো আরো বলেন, “আমাদের কোনও নির্দিষ্ট রোগীর নির্দিষ্ট আঘাতের ধরন পরিমাপ করার সরঞ্জাম নেই। যদিও এই পরীক্ষাটি সম্ভবত মার্কিন ক্লিনিকগুলোতে ব্যবহারের কয়েক বছর বাকি। তবে অন্যান্য বড় গবেষণা সংস্থা টিবিআই নির্ণয় এবং নিরাময়ের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এনএফএল এবং অন্যান্য রক্ত-ভিত্তিক বায়োমার্কার ব্যবহার করার উপায় খুঁজছে।”