দীর্ঘদিনের এলিয়েন নিয়ে রহস্যের সমাধান হয়ত চলেই এসেছে দ্বারপ্রান্তে!
২০১৫ সালের দিকে বিলিয়নিয়ার ইউরি মিলনার “ব্রেকথ্রু লিসেন” নামে একটি প্রজেক্ট চালু করেছিলেন। যেখানে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে নিকটতম নক্ষত্র পরীক্ষা সহ আমাদের কাছাকাছি কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী রয়েছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই প্রজেক্টে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা “প্রক্সিমা সেন্টারি” নক্ষত্র থেকে এমন এক সংকেত পায় যা আমাদের থেকে প্রায় ৪.২ আলোকবর্ষ দূরে। এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত নয় সংকেত টি কিসের, তবে খুবই কম সম্ভবনা রয়েছে যে এটা কোন ভিনগ্রহের জীব বা এলিয়েন উৎস থেকে প্রেরণ করা হয়েছে।
“ব্রেকথ্রু লিসেন” প্রজেক্টে রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, অস্ট্রেলিয়ার পার্কস টেলিস্কোপ অথবা ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রিন ব্যাংক অবজারভেটরি। এই যন্ত্র গুলো প্রতিনিয়ত মহাকাশ থেকে আসা সংকেত গুলোর রেকর্ড সংগ্রহ করে রাখে।
২০১৯ সালের এপ্রিল এবং মে মাসের দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী দলটি সাধারন সংকেতের চেয়ে ভিন্ন একটি সংকেত পায় যার মেগাহার্টজ ছিলো ৯৮০ এবং এর স্থায়ীত্ব ছিলো প্রায় ৩০ ঘন্টা। এই সংকতেটি বিএলসি-১ দ্বারা ডাবিং করা হয় এবং তারা মনে করছেন যে এটি নক্ষত্র প্রদক্ষিণ করে এমন কোনো গ্রহ থেকে এসেছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী দলটি এখনও কাগজ পত্র তৈরি করছেন যাতে বিজ্ঞানীরা বিষয়টি আরও ভালো ভাবে যাচাই করতে পারেন। এ বিষয় টিতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অনেকটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন কারন পুরো সৌরজগতের ভিতর “প্রক্সিমা সেন্টারি“ নক্ষত্রটি আমাদের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র।
তাছাড়া, ২০১৬ সালের দিকে গবেষকরা পৃথিবীর মত বসবাসযোগ্য একটি এক্সোপ্ল্যানেট পাওয়া গেছে বলে ঘোষণাও দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে, কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরজগতে আরও একটি দ্বিতীয় বৃহত্তর গ্রহের সন্ধান পেয়েছিলেন। অর্থাৎ, তাত্ত্বিকভাবে ওই গ্রহগুলো বসবাসযোগ্য স্থান ও এগুলোতে বুদ্ধিমান প্রাণী থাকতে পারে।
গবেষকরা জানান, বিএলসি ১ এ পাওয়া সংকেতটি তাদের আরও বিশ্লেষণ করতে হবে। তাছাড়া, যদি বাস্তব ভাবে চিন্তা করা হয়, একদম ঠিক পাশের সৌরজগতেই এত কাছে বুদ্ধিমান এলিয়েন বা ভিনগ্রহবাসী জীব এতদিন ধরেও অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে, তা নিয়েও কিছুটা সন্দেহ রয়েই যায়।
মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি প্রায় ৩০০ মিলিয়ন এক্সোপ্ল্যানেট রয়েছে এবং যা প্রায় ১৪ বিলিয়ন বছর পুরানো। তাছাড়া, মাত্র কয়েক আলোকবর্ষ দূরে একই সময়ে আমাদের মত বুদ্ধিমান প্রাণী থাকা এটা প্রায় অসম্ভব। যদি বলা হয় ভিনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণী গুলোও একই সময়েই আমাদের মত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তা আরও বড় কাকতালীয় ঘটনা হবে।
তবে, এটা কিন্তু আমাদের মহাকাশ থেকে পাওয়া প্রথম রেডিও সংকেত নয়। ১৯৭৭ সালে এসটিআই গবেষকরাও একটি সংকেত সনাক্ত করেন যা কিনা “ওয়াও” নামে পরিচিত। তবে কি আমরা ভিনগ্রহবাসী প্রাণীর খোঁজ খুব দ্রুত পেতে যাচ্ছি? আপনার কি মনে হয়?
আল-আমিন/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ ExtremeTech