তথ্য প্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রায় মানুষ মহাকাশে পাড়ি জমানোর চিন্তাভাবনা করছে। ‘স্পেসলাইফ অরিজিন’ নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে নেদারল্যান্ডসের এক দল বিজ্ঞানী স্বেচ্ছাসেবী খুঁজছেন, যারা কিনা মহাকাশে সন্তান জন্ম দিতে ইচ্ছুক। তবে সে ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবীদের পৃথিবীতে দু’জন সুস্থ সন্তানের জন্ম দেওয়ার রেকর্ড থাকতে হবে। এই অভিযানের নাম, ‘মিশন ক্রেডল’।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, “স্মল স্টেপ ফর আ বেবি, জায়ান্ট বেবি স্টেপ ফর ম্যানকাইন্ড“। মহাকাশে মানবজাতির উপনিবেশ গড়ে তোলাই লক্ষ্য এই বিজ্ঞানীদের। তাই বলা যায় সুদূর ভবিষ্যৎ এ মানুষ মহাকাশে বসবাস করতে পারে। সে সময়ের কথা ভাবলে এই চিন্তাটিও স্বাভাবিকভাবে এসে যায়, মহাকাশে সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে বাচ্চাটি দেখতে কেমন হবে!
পৃথিবীতে দেখতে যেমন হয় তেমন হবে নাকি আলাদা আকার আকৃতির হবে? মহাকাশে জিরো গ্রাভিটিতে জন্ম নেওয়া শিশুটি আসলে কেমন হবে? তার আগে আরো একটি প্রশ্ন থেকেই যায়, মহাকাশে গর্ভধারণ কি সম্ভব? প্রযুক্তিগত উত্তর হল: হ্যাঁ, গর্ভবতী হতে পারে।
একজন নারী ও তার সঙ্গীকে অবশ্যই স্থানান্তরে যৌনতা করতে সক্ষম হতে হবে। মহাকাশে জিরো গ্রাভিটিতে গর্ভধারণ সম্ভব হলেও বেশকিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। যেমন, মায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি, ভ্রুণের পরিপক্কতাসহ আরো বেশকিছু।
সব সমস্যা অতিক্রম করে যদি মহাকাশে শিশু জন্ম নেয় তাহলে কি হবে? পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া শিশুর আকৃতির উপরে সাধারণভাবেই মায়ের শরীরের আকৃতির প্রভাব দেখা যায়। মহাকাশেও কি ব্যাপারটা তেমনই?
আসলে পৃথিবীতে গ্রাভিটির কারণে সবকিছুই নিম্নগামী এমনকি প্রসবের সময় রক্তসহ যেসব তরল পদার্থ নিঃসরণ হয় সবকিছুই গ্রাভিটির আকর্ষণ অনুযায়ী নিম্নগামীই হয়, কিন্তু আমরা জানি মহাকাশে গ্রাভিটির কোন প্রভাব নেই অর্থাৎ জিরো গ্রাভিটি। তাই সেখানে শিশুর মুখ এবং শরীর তুলনামূলক স্থুল হতে পারে।
এমনকি মহাকাশে জন্ম হওয়া শিশুর ত্বক পৃথিবীতে জন্মানো শিশুর ত্বকের মতো হবে না, ত্বকের রংও ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে। কারণ মহাকাশে ওজন স্তরের প্রতিরোধকতা নেই অর্থাৎ সূর্যের আলো সরাসরি শিশুর ত্বকে পড়বে এবং রং-এর ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিবে।
মহাকাশে যেহেতু জিরো গ্রাভিটি তাই শিশুর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কম হতে পারে, এমনকি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে শিশুর চোখ ফোলা ফোলা হতে পারে। ত্বক হতে পারে দূর্বল, হাড় হতে পারে বিকৃত ধরণের।
এতো ভিন্নতা থাকার কারণে মহাকাশে জন্ম হওয়া শিশুকে হয়তো আমরা একটি আলাদা প্রজাতি হিসেবেও গণ্য করতে পারি। সবমিলিয়ে আমরা এলিয়েন-এর যেমন আকৃতি চিন্তা করি মহাকাশে জন্ম হওয়া শিশুটির আকৃতিও তেমনই হবে।
আনিকা আনতারা প্রধান/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ বিজনেস ইনসাইডার