অবকাশ যাপনে বিলাসীদের পছন্দের অন্ত নেই। নীল সমুদ্রের তীরে বা পাহাড়ের ঢালে, মনোমুগ্ধকর প্রকৃতির কোল থেকে দুর্গম অঞ্চলে; মনকে প্রশান্তি দিতে মানুষ ছুটে চলে প্রতিনিয়ত। তবে এবার আর পৃথিবী পৃষ্ঠের কোন স্থানে নয় বরং মহাশূন্যে হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে আমেরিকার একটি প্রযুক্তি কোম্পানি।
সর্বপ্রথম ২০১৯ সালে গেটওয়ে ফাউন্ডেশন মহাকশে একটি স্টেশন নির্মাণের নকশা প্রকাশ করেছিল যেখানে মানুষ অবকাশ যাপনের জন্য যেতে পারবে। তখন এর নাম নির্ধারণ করা হয় ‘ব্রাউন স্পেস স্টেশন‘। পরবর্তীতে হোটেলটির নাম দেয়া হয় ‘ভয়েজার স্টেশন‘। গেটওয়ে ফাউন্ডেশন এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ভয়েজার স্টেশন নামক স্থাপনা নির্মাণ করবে নির্মাণ সংস্থা “অরবিটাল অ্যাসেম্বলি কর্পোরেশন“। সংগঠনটি বলেছে ২০২৬ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০২৭ সালেই এতে প্রথম ভ্রমণকারী পাঠাতে পারবে তারা।
কেমন হবে হোটেলটিঃ
‘২০০১: আ স্পেস ওডিসি‘ সিনেমায় যেমন একটি মহাশূন্য হোটেলের কল্পনা করা হয়েছিল, তেমনই একটি হোটেল হবে এটি। উদ্বোধনকালে ঘূর্ণায়মান ওই হোটেলটিতে ৪৪০ জনের সংকুলান হবে, এমন ব্যবস্থা থাকবে। এর ঘুর্ণায়মান বৃত্তাকার কাঠামোয় কৃত্রিম মধ্যাকর্ষণের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি হবে ৫০,০০০ বর্গমিটারের একটি কাঠামো।
প্রথমেই নির্মাণ করা হবে বৃত্তাকার কাঠামোটি যার কেন্দ্রে থাকবে ডকিং হাব। ২০০ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট আরও একটি বৃত্তাকার অংশ কেন্দ্রীয় রিংয়ের সাথে যুক্ত হবে। এতে থাকবে ২৪ টি মডিউল। মডিউলগুলো হোটেলের আবাসন, রেস্তোরাঁ, বার, জিম, ক্রু আবাসন, বৈজ্ঞানিক গবেষণা পড ইত্যাদির জন্য ব্যবহৃত হবে।
স্টেশনটিতে একটি বিলাসবহুল ভিলা থাকবে যা এক সপ্তাহ, মাস বা স্থায়ীভাবে ভাড়া দেয়া হবে। এই ভিলাতে ঘুমানোর স্থান, কিচেন এবং বাথরুম থাকবে। ভিলার পাশাপাশি স্টেশনটিতে অসংখ্য হোটেল স্যুট থাকবে যাতে দুটি লোকের বিছানা এবং ব্যক্তিগত বাথরুমও থাকবে।
প্রকল্পের লক্ষ্যঃ
সিনিয়র স্থপতি টিম অ্যালাটের ব্যাখ্যা করেন এই প্রকল্পের লক্ষ্য হবে সবার জন্য মহাকাশ ভ্রমণের সুবিধা নিশ্চিত করা। লোকজন যেমন তাদের ছুটি কাটাতে সমুদ্রে অথবা ডিজনি ওয়ার্ল্ডে যান এটি হবে অবকাশ যাপনের তেমন একটা ব্যবস্থা।
গেটওয়ে ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয় পৃথিবীর বুকে সর্বাধুনিক রেস্টুরেন্ট সহ যে কোন হোটেলে যত সুবিধা থাকবে এখানেও তার সব নিশ্চিত করা হবে। এটি পৃথিবীর যে কোন অবকাশ যাপন কেন্দ্রের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং ভয়েজার স্টেশন হতে যাচ্ছে বিশ্বের প্রথম ‘ক্রুজ স্পেসশিপ’।
মো.মাসরুল আহসান/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ dezeen.com, euronews.com, washington post, dhaka tribune
+1
+1
2
+1
+1
+1
5
+1
+1