রাইসা একটি চেয়ারে বসে লিখছে। তার পাশেই বসা পোষা কুকুরটির মধ্যে হঠাৎ কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেলো। সে ভয়ে কাঁপছে ও এদিক ওদিক চোখ ঘুরাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে রাইসা টের না পেলেও কিছুক্ষনের মধ্যে বুঝতে পারলো তার পায়ের নিচে মাটি কাঁপছে অর্থাৎ ভূমিকম্প হচ্ছে। রাইসা ভাবছে, ভূমিকম্প হবে, এই বিষয়টি এই প্রাণী টি কীভাবে টের পেলো?
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, প্রাণীরা কি আগে থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আভাস পায়? চলুন আমরা উত্তরটা একটু খুঁজে বের করার চেষ্টা করি!
প্রাণীদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের আভাসের ব্যাপারে অনুসন্ধান বেশ আগে থেকেই শুরু হয়। ভূমিকম্প এর আগে প্রাণী-দের মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ প্রথম ৩৭৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নথিভূক্ত করেন রোমান ঐতিহাসিকগণ। হেলিক নামক একটি শহরে ভূমিকম্প শুরু হলে সেই এলাকার বিভিন্ন প্রাণী যেমন ইঁদুর, সাপ, সেন্টিপিড এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গ ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে আসে এবং শহর থেকে পালিয়ে যায়; যেই ভূমিকম্পটি পরবর্তীতে সেই শহরটির ধ্বংসের কারণ হয়। ভূমিকম্পের একদিন আগে ইতালীয় প্রদেশ ফ্রিউলে (৬.৫ মাত্রা, ৬ মে, ১৯৭৬) ইঁদুরদেরকে খোলা জায়গায় দৌড়াতে দেখা গিয়েছিলো এবং খামারের পশুদের মাঝেও একই অস্থিরতার লক্ষণ দেখা দিয়েছিলো।
ভূমিকম্প নিয়ে পূর্বাভাস পায় এমন প্রাণী দের মধ্যে প্রথমেই যাদের নাম উঠে আসে তারা হল সাপ এবং মাছ। উভয় প্রাণীরই বিশেষ ইন্দ্রিয় অঙ্গ রয়েছে: একদিকে যেমন সাপ কম্পন এবং ইনফ্রারেড বিকিরণ বুঝতে পারে অন্যদিকে মাছ পানিতে অবস্থান করে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রগুলি উপলব্ধি করতে পারে। এই ইন্দ্রিয়গুলি তাদের শক্তিশালী ভূমিকম্পের আগে পরিবেশগত পরিবর্তনগুলি সনাক্ত করতে সাহায্য করে, যেমন দুর্বল ফোরশক-Foreshock (ভূমিকম্পের আগে ভূমির মৃদু কম্পন) বা স্থানীয় ভরক্ষেত্রের তারতম্য।