ভার্চুয়াল রিয়ালিটি নিয়ে আমরা সবাই কম-বেশি জানি। চোখের উপর বড় সাইজের গগলস জাতীয় কিছু একটা পরা হয় যা পুরো মাথা জুড়ে থাকে। এই জিনিসটার নাম ভিআর হেডসেট। ভিআর এর কথা বললে প্রথমেই আমাদের মাথাতে এই হেডসেটের কথা আসবে। সম্প্রতি তৈরি করা হয়েছে এমন এক ভিআর হেডসেট, যা বাস্তব জীবনে ব্যবহারকারীকে মেরে ফেলতে সক্ষম!
বর্তমানে ভিআর কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে?
গেমিং, ভিডিও দেখতে, সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ক্ষেত্রে ইত্যাদি। তবে একধরনের হেডসেট আছে যেটা আপনাকে বাস্তব জীবনে মেরে ফেলতে সক্ষম! অনেকটা সায়েন্স ফিকশনের মত শোনাবে কথাটা, তবে এমন হেডসেট আসলেই রয়েছে। মার্কিন এক ভিআর বিশেষজ্ঞের আবিষ্কার এটি।
পামার লাকি, ভিআর জগতের এক জনপ্রিয় নাম। তিনি অত্যাধুনিক ভিআর হেডসেট তৈরির জন্য বিখ্যাত। মার্কিন মিলিটারির হয়ে ভয়ানক সব হেডসেট বানানোর কাজ করেছেন তিনি।
তার হেডসেটগুলো মার্কিন মিলিটারি হেলিকপ্টার চালানো ও যুদ্ধের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হতো। পামারের মাথায় এই মারণঘাতী হেডসেট বানানোর পরিকল্পনা আসে সোয়ার্ড আর্ট অনলাইন নামক একটি এনিমে থেকে।
এনিমেটিতে থাকা গেইমটি খেলা হতো ভিআর এর সাহায্যে। সকল গেমারের মাথায় একটি হেডসেট পরানো থাকত, যার নাম নার্ভ গিয়ার। গেইমটিতে কেউ মারা গেলে আসল জীবনেও সে খেলোয়াড় মারা যেত। এই ধারণা থেকেই পামার অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
এনিমেটিতে গেইম চলাকালীন কোনো খেলোয়াড় মারা গেলে নার্ভ গিয়ার থেকে শক্তিশালী মাইক্রোওয়েভ বের হতো। মাইক্রোওয়েভের প্রভাবে খেলোয়াড়ের মাথা গলে যেত এবং বাস্তব জীবনে খেলোয়াড় মারা যেত। পামারের তৈরি হেডসেটটিতে থাকা তিনটি শিং একইভাবে ব্যবহারকারীর মাথা উড়িয়ে দিতে সক্ষম।
একবার এই হেডসেট পরে গেইম খেলা শুরু করলে গেইম শেষ হওয়ার আগে সেটি খুলে ফেলা বা ধ্বংস করা যাবে না। কেউ সেটি করার চেষ্টা করলেই শিং তিনটি এক্টিভ হয়ে যাবে অর্থাৎ ব্যবহারকারী মারা যাবে। এই হেডসেট পরার অর্থ হলো হয় ব্যবহারকারী গেইম জিতবে, নয়তো তার জীবন হারাবে।
বিশেষজ্ঞরা স্বাভাবিকভাবেই এই প্রযুক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন। হয়তো কিছু অতিরিক্ত ভিউ এর আশায় সাধারণ মানুষ এই হেডসেট ব্যবহার করে মৃত্যুর সাথে ছেলেখেলা করবে। ডিভাইসটি নতুন প্রজন্মের জন্য বড় ঝুঁকিতে পরিণত হবে।
যুগের উন্নতির সাথে ভিআর এর উন্নয়ন সমান্তরালে চলাটা স্বাভাবিক। তবে এমন প্রযুক্তি যেগুলো আমাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী হতে পারে, এরূপ ধারণা উপস্থাপন করাও অনুচিত। অনেকের কাছে এই প্রযুক্তি বিনোদন মনে হলেও এর ফলাফল যে ভয়াবহ তা আমরা সহজেই অনুমান করতে পারি। সুতরাং এই সকল প্রযুক্তির বিষয়ে পূর্ণ ধারণা রেখে সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।