গবেষণায় দেখা যায়, বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের আত্মহত্যা করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এই সময়ে তারা বিভিন্ন ব্যক্তিগত কারণের পাশাপাশি শারীরিক, মানসিক সমস্যার কারণে ও আত্মহত্যা প্রবণতায় ভোগে। অনেক সময়ই তাদের আত্মহত্যা প্রবণতার সঠিক কারণ তাদের বাবা মা ই জানেন না।
একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, আত্মহত্যা করার মূল কারণ হচ্ছে- প্রত্যাখ্যান, ব্যর্থতা, হতাশা, পা রিবারিক অশান্তি প্রভৃতি।
বয়ঃসন্ধিকালে আত্মহত্যা করার কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কারণ হলোঃ
১| হতাশাগ্রস্ত হওয়া।
২| অপ্রত্যাশিতভাবে কাছের বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে কষ্ট পাওয়া।
৩| শারীরিক বা যৌন নির্যাতন।
৪| অ্যালকোহল বা মাদক সেবন।
৫| শারীরিক সমস্যা। যেমন :গর্ভবতী হওয়া।
৬| হুমকির শিকার।
৭| মানসিক সমস্যা বা অসুস্থতা।
৮| অনিশ্চিত শারীরিক সম্পর্ক।
৯| ‘মেন্টাল ডিসঅর্ডার ‘বা আত্নঘাতী আচরণ।
২৫ বছরের কম বয়সী শিশু, কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা যদি এণ্টিডিপ্রেসেণ্টস ঔষুধ গ্রহণ করে, তাহলে আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
আত্মহত্যা করার পূর্ব লক্ষণসমূহঃ
১| আত্মহত্যা সম্পর্কে কথা বলা, লেখালেখি করা; বা এই সম্পর্কিত পূর্বেকার ঘটনা, মুভি বা গান নিয়ে কথা বলা।
২| সামাজিক যোগাযোগ এড়িয়ে চলা। সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেওয়া, সবসময় একা থাকতে চাওয়া।
৩| হতাশাগ্রস্ত হওয়া।
৪| অ্যালকোহল বা ড্রাগ সেবনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া।
৫| অনিয়মিত খাওয়া, ঘুম।
৬| ঝুঁকিপূর্ণ ও ধ্বংসাত্মাক কাজ করা।
৭| অকারণে উত্তেজিত হওয়া বা উদ্বেগ প্রকাশ করা।
আপনার যদি মনে হয় আপনার আশেপাশের কারো আত্মহত্যা প্রবণতার লক্ষন দেখা যাচ্ছে, তাহলে দেরি না করে দ্রুত স্থানীয় ‘সুইসাইড’ প্রতিরোধ লাইফ লাইনে কল দিয়ে যোগাযোগ করুন।
বাবা মায়ের প্রয়োজন সবসময়ই সন্তানদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করা (বিশেষত বয়ঃসন্ধিকাল চলাকালীন সময়ে)। তাদের কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা থাকলে তার কারণ খুঁজে বের করে সমাধান করা। সন্তানের আবেগ-অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করা এবং সন্তানের পাশে সবসময় থেকে তাদের আশ্বাস দেওয়া।
আত্মহত্যা প্রতিরোধঃ
বয়ঃসন্ধিকাল-এ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এবং আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা খুব বেশি, তাই বাবা মা ও আশেপাশের সকলেরই প্রয়োজন আত্মহত্যা প্রতিরোধের জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যেমনঃ
১| সন্তানের হতাশা ও উদ্বেগের কারণ জানার চেষ্টা করা।
২| সন্তানের প্রতি গভীর মনোযোগী হওয়া।
৩| তাদের সাথে সঙ্গ দেওয়া। তাদের নিঃসঙ্গতা দূর করা।
৪| রুটিনমাফিক জীবনযাপন করতে উৎসাহিত করা।
৫| প্রাণনাশক দ্রব, যেমন : আগ্নেয়াস্ত্র, অ্যালকোহল, ঔষুধ তাদের থেকে দূরে রাখা।
৬। কোনো ব্যর্থতায় বকাবকি বা হা-হুতাশ না করে বরং সাহস দেওয়া ও ভবিষ্যতে কিভাবে একই পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে আলোচনা করা।
অবশ্যই মনে রাখবেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধযোগ্য।
আমেনা আঁখি/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ মায়ো ক্লিনিক
+1
5
+1
7
+1
1
+1
1
+1
+1
1
+1