১৯৩২ এর ২৭ই ফেব্রুয়ারী, শিক্ষার্থীদের মুখস্থ করার জন্য নতুন একটি কণা উপহার দেওয়ার দিন। ইংরেজ পদার্থবিদ জেমস চ্যাডউইক নিউট্রনের অস্তিত্ব নিয়ে একটি লেখা প্রকাশ করেন এই সময়।
তার এই আবিস্কার থেকেই পরবর্তীতে পারমাণবিক বোমা আবিষ্কার-এর দিকে আরো একধাপ এগিয়ে যায় মানুষ, এমনকি সবচেয়ে ভারী পারমাণবিক উপাদানগুলির নিউক্লিয়াসকে ভাগ করার পথও খুঁজে পেতে সাহায্য করে এটি।
নিউট্রন প্রোটনের সাথে একত্রে পরমাণুর নিউক্লিয়াস গঠনে সহায়তা করে, নিউট্রনের কোনও বৈদ্যুতিক চার্জ থাকে না। যার ফলে এটি ভারী পরমাণুগুলোর চার্জের বাধা পেরিয়ে তাদের নিউক্লিয়াসকে বিভক্ত করতে ভূমিকা রাখে।
চ্যাডউইক ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতে নোবেলজয়ী এবং প্রোটন আবিষ্কারক আর্নেস্ট রাদারফোর্ডের অধীনে তেজস্ক্রিয়তার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অধ্যয়ন করেছিলেন। পরবর্তীতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় তিনি জার্মানের রাজধানীতে ছিলেন।
শত্রু পক্ষের হওয়ার কারণে, চ্যাডউইককে জার্মানরা ঘরবন্দী করে, তবে বার্লিনের বাইরে তাঁর জন্য তারা পরীক্ষাগার স্থাপনের অনুমতি দিয়েছিলো। ১৯১৯ সালে ব্রিটেনে ফিরে আসার আগপর্যন্ত তিনি পুরো সময় জুড়েই সেখানে গবেষণা চালিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর চ্যাডউইক ইংল্যান্ডে রাদারফোর্ডের সাথে আবারো কাজ শুরু করেন। রাদারফোর্ড ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছিলেন। রাদারফোর্ড ১৯২০ সালে অনুমান করেছিলেন যে, ইলেক্ট্রন এবং প্রোটন ছাড়াও আসলে আরো একটি নতুন কণা রয়েছে, যা হয়তোবা চার্জ নিরপেক্ষ।
পরবর্তীতে এই কণার প্রমাণ পাওয়ার জন্য আরও ১২ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
১৯৩২ সালের ফেব্রুয়ারীর ২৭ তারিখ চ্যাডউইক “Possible Existence of Neutron” শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৩২ সালের ১০ই মে আরও সুনির্দিষ্টভাবে তার গবেষণাপত্র “The Existence of Neutron”এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।
চ্যাডউইকের ১৯৩২ সালে নিউট্রনের আবিষ্কার তাকে ১৯৩৫ সালে নোবেল পুরষ্কার পেতে সাহায্য করে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বিখ্যাত ম্যানহাটন প্রকল্পে কাজ শুরু করেন, যা ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রকল্প, যাতে যুক্তরাজ্যেরও সক্রিয় সহযোগিতা ছিল।
চ্যাডউইকের কাজ ছাড়া পারমাণবিক বোমাটি হয়তো বা সম্ভব হত না, হয়তবা হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পারমানবিক বোমাও ফেলা হত না, কিন্তু পদার্থের অণু-পরমাণুর গঠন বুঝতে আমাদের আরো শত বছর লেগে যেত, তাই তাকে সম্ভবত ধন্যবাদ দেওয়া-ই যায় !
ধন্যবাদ, জেমস চ্যাডউইক!
কায়েস মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ www.thehindu.com, www.wired.com
+1
1
+1
+1
+1
1
+1
+1
+1